আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দৈনিক সমকালের অবস্থান কি নতুনদেশের বিপরীতে?



গত দুই সপ্তাহ জুড়ে অনলাইন বাংলা নিউজ সাইট নতুনদেশ ডট কম এ প্রকাশিত ঢাকাই একটা নির্দিষ্ট কবি চক্রের প্রতারনার খবর-এ অনলাইন বেশ গরম। আমি যেহেতু অনলাইন-এ বেশ সক্রিয়, তাই এই সম্পর্কিত লেখালেখিগুলো আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এই সুবাদে বেশ কিছু লেখকের লেখার সাথে আমার পরিচয় ঘটেছে যাদেরকে আগে চিনতাম না। তাদের মধ্যে মাহবুব মোর্শেদ, ব্রাত্যু রাইসু, সাইফ ইবনে রফিক, প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। আমাকে যেটা সবচেয়ে বেশী অবাক করেছে সেটা হচ্ছে, কিছু লেখকের বিপরীত স্রোতে অবস্থান নেওয়া।

এর কারন উদ্ঘাটনে উতসাহিত হলাম। ফলোশ্রুতিতে এই লেখার অবতারনা। আসুন সরাসরি মুল বিষয়ের দিকে দৃষ্টি দিই। নতুনদেশে সেরিন ফেরদৌসের রিপোর্টের বিষয়বস্তু ঢাকায় কবিদের একটা দুষ্টচক্র ফেসবুকের মাধ্যমে প্রবাসী বিভিন্ন নারীদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে তাদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নেওয়া ছাড়াও বিভিন্ন দামি উপহারসামগ্রী ( ভিডিও ক্যামেরা, ডিজিটাল ক্যামেরা, গেরস্তালী সামগ্রীর মূল্য, মোবাইল ফোন ইত্যাদি) খসিয়ে নেওয়ার তথ্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। এই চক্রের সদস্যরা একই সাথে একাধিক নারীর (মুলতঃ বিবাহিত) কাছ থেকে একই কথা বলে সুবিধা আদায় করেছে।

এ প্রসঙ্গে নতুনদেশের উদৃতি দেওয়া যাকঃ নতুনদেশের অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, প্রতারণার শিকার প্রবাসী নারীরা দামি উপহারসামগ্রী ( ভিডিও ক্যামেরা, ডিজিটাল ক্যামেরা, গেরস্তালী সামগ্রীর মূল্য, মোবাইল ফোন ইত্যাদি) দেওয়া ছাড়াও নিয়মিত নগদ টাকা পাঠিয়েছে। একপর্যায়ে টাকা পাঠাতে কেউ কেউ অপারগতা প্রকাশ করলে, তাদের পাঠানো উপহার সামগ্রী, মেইল এবং ফেসবুক তথ্য তাদের স্বামী ও অন্যান্যদের জানিয়ে দেবার ভয় দেখানো হয়েছে। এদের মধ্যে দু’একজন দেশে বেড়াতে গেলে গোপনে ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করার মতো ঘটনাও ঘটেছে। ঢাকায় গিয়ে থানা-পুলিশও করতে হয়েছে কাউকে কাউকে। তবে সামাজিকভাবে হেয় হবার ভয়ে এবং সংসারে অশান্তির আশংকায় প্রতারিত এসব নারীরা কোথাও মুখ না খুললেও মুষড়ে পড়েছেন এবং কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

কানাডার টরন্টো, নিউইয়র্ক, অস্ট্রিয়া, সিডনি এবং মধ্যপ্রাচ্যে বসবাসরত বেশ কয়েকজন নারী ‘ঢাকাই কবি’দের হাতে প্রতারিত হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন নতুনদেশের কাছে। Click This Link Click This Link Click This Link রিপোর্টটি নিয়ে আমার ভাবনাঃ এখানে প্রতারনা আছে দুপক্ষেরই। নারী প্রতারনা করেছে তার পরিবারের সঙ্গে। তার স্বামী, সংসারের সঙ্গে। স্বামী বেচারা জানতেও পারেনি তার স্ত্রীর মনে এখন অন্যকেও।

কোন এক কবিকে নিয়ে যার কল্পনা, যেখানে স্বামী বেচারার প্রবেশ নিষেধ। কি নির্মম! অনেকেই এ ব্যপারে উষ্মা প্রকাশ করেছে, যেটা নতুনদেশ তাদের এক রিপোর্টে উল্ল্যেখ করেছে। অনেকে আবার ঘটনাটিকে পরকীয়া প্রেম হিসেবে অভিহিত করে ঘটনায় সম্পৃক্ত মেয়েদের মুখোশ উন্মোচিত করে দেওয়ারও পরামর্শ দেন। তারা বলেন, কবি নামধারীরা যেমন কবিতায় প্রলুব্দ করে প্রতারনা করেছে, এই সব নারীরাও পরকীয় প্রেমে জড়িয়ে স্বামীর পকেট মেরে টাকা পাঠিয়ে স্বামী,সংসারের সঙ্গে প্রতারনা করেছে। তাদেরও শাস্তি হওয়া উচিৎ।

Click This Link কিন্তু, প্রিয় পাঠক, আপনি কি নির্দিধায় এই নারীকে প্রতারক বলে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারবেন? যেখানে আপনি জানেন না তার ব্যক্তিগত, পারিবারিক অবস্থান। হোতে কি পারেনা নারীটির স্বামী অন্যনারীতে আসক্ত, অবহেলায়, সংসারে গুরুত্তহীনতায় কেটেছে বছরের পর বছর, বাইরে কোথাও কবে দুজনে একসাথে ঘুরতে গেছে ঠিক মনে করতে পারে না। সামাজিকতা বলে তেমন কিছুই নেই ওই দুই এক ঘর ছাড়া। অথচ, যখন দেশে ছিল, নারী ছিল বন্ধু বান্ধব, আতিয়-সজন, আড্ডায় ভড়পুর। মাঝে মাঝে মোবাইল ফোনের রিং বেজেই চলত, ধরতে ইচ্ছা করত না, অথচ এই প্রবাস জীবনে একটু রিং হলেই নারী দৌড়ে যায়।

কোন কি আপনজন, বা বন্ধু বা আত্বীয়? নিসঙ্গ নারী একটু বন্ধুত্বের জন্য, একটু সামাজিকতার জন্য একটু একটু করে নির্ভরশীল হয় সামাজিক নেটওয়ার্ক সাইট-ফেসবুকের। কবির কবিতায় মুগ্ধ নারী, মুগ্ধ কবির কৌশলী কথায়। প্রিয় পাঠক, উপরোক্ত বিষয়ের ক্ষেত্রে আপনি কিন্তু একটু বিচলিত হবেন। ক্ষেত্র বিশেষে নারীর পক্ষ নেবারও সম্ভাবনা আছে। আমাকে ভুল বুঝবেন না।

আমি পরিপ্রেক্ষিত বিশ্লেষনের চেষ্টা করছি মাত্র। অন্যদিকে, দুষ্টকবি একই সাথে একাধিক প্রবাসী নারীর সাথে প্রেমের অভিনয় করে মাসিক মাসোহারা নিয়েছে, নিয়েছে মুল্যবান উপহার, মাসোহারা বন্ধ হলে নিয়েছে ভয় ভীতি প্রদর্শনপুর্বক টাকা আদায়ের কৌশল। আস্তে আস্তে নারীকে প্রেমের ফাদে ফেলে ব্যবহার করেছে তার আবেগ অনিভুতিকে টাকা কামানোর অস্ত্র হিসেবে। পাঠক, এখন আমি যদি কবিকে কোনভাবে সহানুভুতি দেখাতে চাই, সেটার উপায় কি? এমন কি কোন যুক্তি দেখাতে পারবেন যেখানে কবি প্রতারক না, যে পরিস্থিতি উপরে নারীর ক্ষেত্রে দেখানো হয়েছে? আমরা কি বলতে পারি যে সেই কবি অন্য কোন নারীর দ্বারা প্রতারিত হয়েছে তাই সেও একই কাজ করেছে। সুতরাং কবি প্রতারক না।

অথবা আমরা বলতে পারি যেটা “ব্রাত্যু রাইসু” তার লেখার মন্তব্যে বলেছেন- অভিযুক্তকে দোষী বলা যাবে না যতক্ষন পর্যন্ত সেটা প্রমানিত হয়। এটা আইনের কথা এবং অবশ্যই ঠিক। কিন্তু এ রকম ভাবনা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে কি সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য? সে ক্ষেত্রে, পত্রিকাতে যখন ধর্ষনের খবর দেখি আমরা কি শুরুতেই ধর্ষকের পক্ষ নিই যতক্ষন পর্যন্ত কোর্টে প্রমানিত হয়? অথবা আমরা কি যুদ্ধ অপরাধে অভিযুক্তদের পক্ষ নেব যেহেতু এটা এখনও আইনের দ্বারা প্রমানিত নয়? তার মানে যারা এটা বলছেন তারা দুষ্টকবিদের পক্ষ নেবার একটা যুক্তি দাড় করাতে চাচ্ছেন যেটা খুবই হাল্কা এবং নিম্নমানের। তাহলে আর কি উপায় আছে দুষ্টকবিদের সহানুভুতির পক্ষে? আমরা বলতে পারি ওরা মাদকাসক্ত, যেটা স্বনামধন্ন্য লেখক আনিসুল হক এপ্রসঙ্গে এক মন্তব্যে লিখেছেন। প্রিয় পাঠক আনিসুল হক বাংলাদেশের একজন অনেক বড়মাপের লেখক, সাংবাদিক, নাট্যকার।

তার প্রতি সম্মান জানিয়ে তার এ যুক্তির বিচার আমি আপনাদের উপরই ছেড়ে দিতে চাই। তাহলে যেখানে দুষ্টকবিদের পক্ষে শক্তপোক্ত কোন যুক্তিই দাড় করানো যাচ্ছে না সেখানে কেন কিছু লেখক, সাংবাদিক তাদের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছে? এ বিষয়ে আমার সাথে আসুন আপনারাও অনুসন্ধানে নামি। প্রতারকদের পক্ষে জোরালো যারা নামঃ মাহবুব মোর্শেদ কর্মস্থলঃ দৈনিক সমকাল পদবীঃ এসিস্টেন্ট এডিটর নতুনদেশ –এর রিপোর্টের প্রতিবাদে প্রথম যে লেখাটি চোখে পড়লো সেটা হচ্ছে- “ঢাকার কবি-ফিল্মমেকারদের নিয়া সেরিন ফেরদৌসের রিপোর্টের সমস্যা নিয়া সংক্ষেপে আলোচনা করলাম” শি্রোনামে, লিখেছিলেম “মাহবুব মোর্শেদ”। লেখককে আগে আমি চিনতাম না। এই প্রথম তার লেখা পড়লাম।

প্রোফাইল ঘেটে জানলাম কাজ করেন “দৈনিক সমকাল” পত্রিকাতে “এসিস্টেন্ট এডিটর” হিসাবে। লেখাটিতে লেখক, নতুনদেশের রিপোর্টির লেখার মান এবং তার তথ্যের ভিত্তির উপর বিশদ আলোচনার চেষ্টা করেছেন। লেখাটির মুল বিষয়বস্তু নিম্নরুপঃ ১। সেরিন অপরাধীর পরিচয় এমন সার্বিকভাবে দিছেন যে, প্রথম কয়টা লাইন পইড়াই কবি ও ফিল্মমেকার যত লোক আছে তাদের সবাইরে সন্দেহ করতে হয়। ২।

রিপোর্টে সেরিন কবিতা লিখে নারীদের মন পাওয়াকেও অপরাধ হিসাবে দেখছেন। ৩। সেরিন রিপোর্টে 'পরকীয়া', বহুপ্রেম বা পলিগ্যামি ইত্যাদিকে খারাপ হিসাবে দেখছেন। এইটা একটা নৈতিক অবস্থান। এমন নৈতিক বায়াসনেস নিয়া রিপোর্ট লেখা যায় না।

৪. যারা 'ভিকটিম' তাদের ভাষ্যকে তিনি প্রমাণ হিসাবে ধরে নিছেন। ৫. সেরিন লিখছেন, 'নারীরা স্বেচ্ছায় ও অসাবধানতাবশত এই চক্রে পা দিয়েছেন' ফেসবুকের মতো একটি ওয়েল প্রটেক্টেড, প্রাইভেসি সচেতন সাইটে অসাবধানতাবশ পা দেওয়ার সুযোগ নাই বইলাই আমার মনে হয়। ৬. কোনো নারী কোনো কবি ফিল্মমেকারের সঙ্গে সম্পর্ক রচনার পর তার সঙ্গে গিফট বিনিময়ের পর কোনো কারণে সম্পর্কের অন্ত ঘটলে তাকে ভিকটিম করতেছেন কি না এবং স্বেচ্ছাপ্রদত্ত গিফটকে মুক্তিপন আখ্যায়িত করতেছেন কি না, এই স্বাভাবিক প্রশ্নের জবাব রিপোর্টে নাই। ৭. সেরিন ফেসবুক কোম্পানি, মার্ক জুকারবার্গ থেকে শুরু করে ঢাকার কবি, ফিল্মমেকার, লিটলম্যাগাজিনকর্মী, অনলাইন ম্যাগাজিন কর্মীদের দিকে যেমনে অঙ্গুলিনির্দেশ করছেন। যেমনে সবাইরে সন্দেহের তালিকায় যুক্ত করছেন তাতে তার বিরুদ্ধে কয়েকশ মানহানির মামলা হওয়া উচিত।

সব কথার শেষ কথা : যে আসলেই অপরাধ করছে সেরিনের উচিত নতুন দেশ পত্রিকার সার্কুলেশন বাড়ানোর চিন্তা না কইরা দ্রুত তার নাম তথ্যপ্রমাণ সহকারে, তার বক্তব্য সহকারে প্রকাশ কইরা দেওয়া। নইলে, এই নিউজের লক্ষ্য হবে শুধু কানকথা তৈরির উপাদান হওয়া। নারীরা সাবধান হয়া কবিদের ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে প্রত্যাহার করা শুরু করলে দেশের সাহিত্যে গজব নাইমা আসবে। Click This Link প্রিয় পাঠক, একটু খেয়াল করলেই দেখতে পাবেন লেখক উপরোক্ত লেখাটিতে নতুনদেশের রিপোর্টটির মুল বিষয়বস্তুকে পাশ কাটিয়ে সেরিন ফেরদৌসকে ও তার লেখার মান এবং সর্বপরি রিপোর্টটির ভুল ব্যখ্যা দেওয়ার একটা সুক্ষ্ চেষ্টা করেছে। প্রতারকদের নাম জানাটাই কি মুল বিষয়? কি তথ্য প্রমান উপস্থাপন করলে বিশ্বাসযোগ্য হবে?-যে প্রশ্নের ব্যখ্যা লেখক আজও দিতে পারেনি।

যে সাংবাদিক নৈতিকতা অনৈতিকতা আলাদা করতে পারে না সে কি দেবে সমাজকে? এবার আসা যাক “রোকন সাকুরের ফাঁসি চাই!” শিরোনামে মাহবুব মোর্শেদের দ্বিতীয় লেখা প্রসঙ্গে। লেখাটির বিশেষ কিছু অংশ নিম্নরুপঃ ১। আমি যখন স্টেটাস ও নোট দিয়া সেরীন ফেরদৌসের প্রতিবেদন নামধারী গুজবের সমালোচনা লিখছিলাম……। ২। সেরীনের দ্বিতীয় পর্ব আর প্রতিবেদন নামধারী বস্তু নাই, এইটা স্রেফ কাল্পনিক কাহিনীতে রূপান্তরিত হয়েছে।

৩। আমাদের সময়ের ভাইব্রান্ট বুদ্ধিজীবী ব্রাত্য রাইসু সেরীনের গল্পের একটা ব্যাখ্যা হাজির করছেন। আমি তার ব্যাখ্যার সঙ্গে সহমত। আর বেশি কিছু লিখার দরকার মনে করি নাই। বস্তুত, 'সেরীন ফেরদৌসের এই সাংবাদিক গদ্যে রোকন সাকুরের প্রতারণা দেখা গেল না।

৪। এই নোট দেওয়ার দ্বিতীয় কারণ, হইলো নতুন দেশ কী ফাইজলামি করছে সেইটা ৫। নতুন দেশের রিপোর্টে আমাদের কী উপকার হইছে? অনেকে বলতেছেন, উপকার হইছে। ক. নারীরা সতর্ক হইবে। খ. প্রতারকরা আর প্রতারণা করতে পারবে না।

খ. অন্তত একজন হইলেও প্রতারককে সমাজ চিনতে পারলো। আসলেই কি চিনলো? আসলেই কি নতুন দেশ সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে প্রতারকে চিহ্নিত করলো? ৬। আমি দেখতে পাইতেছি, নতুন দেশের রিপোর্টের কুফল বহু। আগের নোটে কইছিলাম, প্রথম রিপোর্ট পইড়া ঢাকা শহরে চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িত সব কবি-লেখকরেই সন্দেহ করা যায়। এইটা সেরীনের রিপোর্টের কারণেই হইছে।

৭. সেরীনের এই প্রতিবেদন যে ভাল ফল দিতে পারতো সেইটা শেষ পর্যন্ত দিতে পারে নাই, তার মেধাহীনতা, সাহসহীনতা বা অন্য উদ্দেশের কারণে। Click This Link এছাড়াও ব্রাত্যু রাইসু-এর নোটে মাহবুব মোর্শেদের মন্তব্য ছিল এ রকম Mahbub Morshed সেরিনের রিপোর্টের প্রথম কিস্তির পর মাঝারি মানের অল্প জ্ঞান ও বেশি বোঝা নারীবাদীদের সমর্থন তার দিকে গেছে। পরে দ্বিতীয় কিস্তিতে সেরিন নিজেই নারীবাদী অ্যাক্টিভিজমের সর্বনাশ করছেন। এখন মাঝারি নারীবাদের অবস্থা বিশেষভাবে খেয়াল করতেছি। প্রিয় পাঠক, একটু খেয়াল করুন প্রথম রিপোর্টটি মুলতঃ সেরিন ফেরদৌসের রিপোর্ট হিসেবে আক্রমন করা হয়েছে সেখানে কোথাও নতুনদেশের রিপোর্ট উল্লেখ করা হয় নাই তেমন, কিন্তু দ্বিতীয় রিপোর্টে বেশ কয়েকবার নতুনদেশের রিপোর্ট উল্লেখ করা হয়েছে।

দেখে মনে হচ্ছে লেখকের প্রথম রিপোর্টের পর উপলব্দ্বি হয়েছে যে সেরিন ফেরদৌসকে তো এক হাত নেওয়া হোল কিন্তু নতুনদেশেকে তো একহাত নেয়া হোল না যেটা পুসিয়েছে দ্বিতীয় লেখাতে। তার লেখায় পরিশিলিত, মার্জিত উপস্থাপনা একেবারেই অনুপস্থিত। এই যদি হয় একটা ঐতিহ্যবাহী পত্রিকার সাংবাদিকের উপস্থাপনা তবে পাঠক যাবে কোথায় । পরিবর্তিত হয়েছে লেখার ধরন, হয়েছে তার ভাষাও। পরিবর্তনকে সাধুবাদ জানাই।

কিন্তু লেখার মার্জিতভাবটার পরিবর্তন হওয়া কি খুবই জরুরী যেখানে নম্রতা ভদ্রতার লেশমাত্র নেই? যেমন লেখক উপরের মন্তব্যে বলেছেন “সেরিনের রিপোর্টের প্রথম কিস্তির পর মাঝারি মানের অল্প জ্ঞান ও বেশি বোঝা নারীবাদীদের সমর্থন তার দিকে গেছে” তার মানে যারাই এইক্ষেত্রে কবিদের প্রতারক বলছেন তারাই “মাঝারি মানের অল্প জ্ঞান ও বেশি বোঝা মানুষ”। একজন লেখকের কি পরিমান অপরিপক্কতা থাকলে এইধরনের মন্তব্য করতে পারে সে বিচার ভার পাঠকের উপর। নামঃ ব্রাত্যু রাইসু কর্মস্থলঃ bdnews24.com পদবীঃ আর্টস সেকশন-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত (যতদুর জেনেছি, কারন তার ফেসবুক প্রোফাইলে এসম্পর্কে তেমন কোন তথ্য নেই) “সেরীন ফেরদৌস, নৈতিক সাংবাদিকতা আর না হউক!” শি্রোনামে, লিখেছিলেম “ব্রাত্যু রাইসু”। এই প্রথম তার লেখা পড়লাম। লেখকের লেখার হাত ভালো।

প্রতিবেদনটিকে লেখক অন্য দ্রিষ্টিভঙ্গি থেকে দেখার চেষ্টা করেছেন। আমার মনে হয়েছে লেখকের এটা একটা ছোট্ট বিশ্লেষন যেখানে নেই কোন বাক্তিগত রেষারেশি বা স্বার্থ। স্রোতের বিপরীতে গিয়েও যুক্তি দিয়ে জিতে যাবার খেলা এটি। লেখাটিতে লেখক তিনটি প্রশ্ন করেছেন যা নিম্নরুপঃ প্রশ্ন ১. পয়সার বিনিময়ে প্রেম করা প্রতারণা কিনা? বা প্রেম করার পরে পয়সা চাওয়াটা প্রতারণা কিনা? বা পয়সা না দিলে আর প্রেম না করতে চাওয়াটা প্রতারণা কিনা? প্রশ্ন ২. এক সঙ্গে একাধিক গৃহবধূর সঙ্গে প্রেম থাকাটা প্রতারণা কিনা? যখন গৃহবধুরা গৃহবরদের প্রতারণা করা ছাড়াই (!-?) অন্যের সঙ্গে প্রেমমূলক থাকতে পারতেছেন? প্রশ্ন ৩. নৈতিক/দার্শনিক প্রশ্ন: যদি কেউ প্রতারণাও করেন সামাজিকভাবে তার সম্মানহানি করা যায় কিনা? আরো গভীর ভাবে, যিনি অন্যের সম্মানহানি করেন তার সম্মানহানি করা যায় কিনা? ব্যক্তিগতভাবে কৃত প্রতারণার শাস্তি হিসাবে সামাজিক ভাবে অসম্মান করাটা আপনাদের নৈতিকতা আদৌ অ্যালাউ করে কিনা? Click This Link প্রশ্নগুলোই বলে দেয় প্রতিবেদনের মুল ভাবনার থেকে বাইরে চলে গেছে লেখকের ভাবনা। তবে তাকে সাধুবাদ জানাই তার পেশাদারীত্ব মনোভাবের জন্য যেখানে সে বিশ্লেষনের চেষ্টা করেছে ভীন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে, একটি প্রতিবেদনের সমালোচনা করেছে মাত্র, প্রতিবেদক বা পত্রিকাকে নয়।

সমালোচনাকে গ্রহন করতে পারাটাও পেশাদারীত্ব যদি সেটা গঠনমুলক হয়। নামঃ সাইফ ইবনে রফিক কর্মস্থলঃ দৈনিক সমকাল পদবীঃ সিনিয়র সাব-এডিটর সম্প্রতি “আফিয়া পারভীনের কোনো দোষ নেই!” শি্রোনামে লেখকের লেখাটি পড়লাম। লেখাটিতে লেখক নারীকে প্রতারনার দ্বায়ে অভিযুক্ত করেছেন যেটা আমি আগেই আলোচনা করেছি। লেখাটিকে মনে হয়েছে তার সহকর্মী মাহবুব মোর্শেদকে সঙ্গ দেওয়ার নিমিত্তে লিখিত। Click This Link পর্যালোচনাঃ এখন স্বাভাবিকভাবেই যে প্রশ্নটি সামনে চলে আসে সেটা হচ্ছে, শক্ত কোন যুক্তি না থাকা সত্ত্বেও এরা কেন প্রতারকদের পক্ষে গলা ফাটাচ্ছে? সম্ভাব্য কারনগুলো- ১।

লেখকেরা দুষ্ট কবিদের কাছের বন্ধু, বন্ধুত্ব যেখানে নৈতিকতাকে ছাড়িয়ে গেছে। ২। যেকোন ইস্যুতে বিপরীত স্রোতে থাকলে চোখে পড়ে সকলেরই, পরিচিতি বাড়ে খুব দ্রুত। ৩। প্রতিবেদন নিয়ে যুক্তি তর্কের খেলা এবং সেখান থেকে নিজের যুক্তির ভান্ডার সমৃদ্ব করা।

৪। নতুনদেশের সুনামে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া বা পুর্বশত্রুতা সুতরাং নতুনদেশের সুনাম ক্ষুন্ন করা। উপরের তথ্যগুলো থেকে একটা বিষয় বিশেষভাবে লক্ষ্য করার মত। যে তিনজন প্রবলভাবে নতুনদেশের রিপোর্টের ইস্যুতে প্রতারকদের পক্ষ নিয়ে পুরো ফেসবুক, ব্লগ গরম করে রেখেছে, তাদের দুজনই দৈনিক সমকাল পত্রিকার রিপোর্টার, যদিও সাইফ ইবনে রফিকের আবির্ভাব একেবারেই সম্প্রতি। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে কেবল সারা বাংলাদেশেই নয়, সারা পৃথিবীতে এত বাংলা পত্রিকা থাকতে সমকালের সাংবাদিকদের এরকম উঠেপড়ে লাগার কারন কি? খবর নিয়ে জেনেছি নতুনদেশ বা তার কোন পার্টনারের সাথেই সমকালের কারো কোন ব্যক্তিগত পুর্বশত্রুতা নেই।

আর তাছাড়া সমকাল তো নতুনদেশের প্রতিদন্দ্বি নয়। তবে কি সমকালের এই সাংবাদিকগুলো এমন কারও প্রতিনিধিত্ত করছে, নতুনদেশের সুনাম বৃদ্ধি যাদের মাথাব্যথার কারন হতে পারে? আছেন কি এমন কোন সমকালবান্ধব টরন্টোর লেখক বা সাহিত্যিক যারা নতুনদেশের কুতসা রটনায় ব্যস্ত প্রতিনিয়ত পর্দার আড়ালে থেকে? শেষ কথাঃ ব্যক্তিগত যুক্তি যেখানে দুর্বল সেখানে লড়তে যাওয়া কি সঠিক? তাতে নিজের অপরিপক্কতাই প্রকাশ পায় সকলের সামনে। এ বিশাল জ্ঞান ভান্ডারে এত অল্পতেই আত্ততুষ্টির অবকাশ কি আদৌ আছে নাকি থাকা উচিত? যে গাছে যত বেশি ফল ধরে সে গাছ তত বেশি মাটির দিকে নুইয়ে পরে। জ্ঞান মানুষকে করে বিনয়ি। আসুন না পরিবর্তনের এই ধারাতে যোগ করি একটু বিনয়, একটু পারস্পরিক শ্রোদ্ধাবোধ।

উন্নত করি নিজেকে। সমাজকে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.