"পসার বিকিয়ে চলি জগৎ ফুটপাতে, সন্ধ্যাকালে ফিরে আসি প্রিয়ার মালা হাতে"
দৈনিক ভাবনা
বসন্তের এই দিনে কোকিলের সুরে সুরে ভোরের ডাক। সেই ডাকে প্রতিদিনের মতো ঘুম ভাঙ্গলো। মুখ থেকে উচ্চারিত হলো সুপ্রভাত বাংলাদেশ। ভোরের আলো আরেকটু উজ্জ্বল হতেই ইত্তেফাক-এর মোড়ে এসে দাঁড়ালাম। শীত শীত ভাবটা এখনো কমেনি।
ভাবছিলাম বছরের শুরুতে কিভাবে নিজেকে একটু বদলানো যায়! হঠাৎ মনে হলো প্রথম আলো'র পাতাটা খুলে দেখি। ওরা বলে "বদলে যাও, বদলে দাও"। তাইতো আজ দেশজুড়ে নামনিশানা সব বদলে দেবার পালা। বিরক্ত হয়ে ফুটপাত থেকে একটা ভোরের কাগজ হাতে তুলে নিলাম। এমন সময় পাশ থেকে হকার বললো- স্যার আপনার চোখ কান যদি খোলা থাকে তবে মানবজমিন পড়ুন।
কয়েক পাতা উল্টিয়েই হতাশ হলাম। আমার দেশ নিয়ে গর্ব করার মতো তেমন কোন খবর তাতে খুঁজে পেলামনা। দিনকাল খুব খারাপ যাচ্ছে। এদেশের মানুষ আর কতকাল তাদের অধিকার ফিরে পেতে এভাবে মুখ বুঁজে সংগ্রাম করে যাবে? চারিদিকে শুধু অভাব, অনটন আর দারিদ্রের হাহাকার। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতি।
ক্ষোভের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এই ক্ষয়িষ্ণু সমকাল। খবরপত্র-এ মানুষের আর বিশ্বাস নেই। সব কিছু এতো দ্রুত ঘটে যাচ্ছে যে আমাদের সময় নিয়ে ভাবলে চলবেনা। যা কিছু করার এখনই সময়।
এইসব ভাবতে ভাবতে দেশবাংলা-র দিকে চোখ গেল।
কয়েক পাতা উল্টিয়ে আবারো হতাশ হলাম। দেশের আজ যারা কর্ণধার তাদের ডেসটিনি বলে কিছু নেই। সবাই আজ গলাবাজিতে ব্যস্ত। শুধু পরচর্চা আর পরনিন্দা। দেশকে নিয়ে মনের নয়া দিগন্ত জুড়ে যে আশার আলোটুকু জমিয়ে রেখেছিলাম তা আজ অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে।
আজ প্রত্যাশা পূরণের পদে পদে বাঁধা। কোনকিছুই যেন ঠিকভাবে হবার নয়। জনকন্ঠ একদিন সবকিছু ছাপিয়ে কালের কন্ঠ হয়ে উঠবে তেমন প্রত্যাশা করিনা। বাংলার বাণী-তে আজ আর কারো তেমন আস্থা নেই। নিজ নিজ অধিকার ফিরে পেতে কেউ আর আগের মতো চীৎকার করে বলেনা- ইনবকিলাব জিন্দাবাদ।
মনে হয় এভাবেই হায় হায় করতে করতেই মানুষের যায়যায়দিন। দৈনিক জনতা যেভাবে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ছে তাতে প্রতিদিন প্রকাশিত কোন সংবাদ-এর প্রতি মানুষের কোন আগ্রহ নেই। অপরাধকন্ঠ আজ তাই সোচ্চার। সকালের শুরুটা যেমনই হোক দিনেরশেষে কার কেমন যাবে বলা দুষ্কর।
আর হাঁটা হলোনা।
বাসায় ফিরে এলাম। একটু পরেই অফিসের উদ্দেশ্যে বের হতে হবে। তাতেও ভয়- মনটা কখন ট্রাফিক জ্যামে আটকে যায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।