আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফিউশন ফাইভ - অন্যর পিঠে কাঠাল ভেঙ্গে খাচ্ছেন কেন?

সভ্যতার প্রান্তে দাঁড়িয়ে পিছু ফিরে চলেছি

যেদিন থেকে জব্বার সাহেব তার ঐতিহাইক লেখাটি পোস্ট করলেন সেদিন থেকেই বাংলা কমুনিটি বল্গ সাইট গুলোতে একরকমের আলোড়ন তৈরি হলো। হওয়াটাই খুব স্বাভাবিক। বাংলা কমিউনিটি ব্লগ সাইটের সংখ্যা এখন নেহায়েত কম না, এবং ইউজারের সঙ্খাও বেশ। বেশ কিছুদিন পুর্বে একটা লেখায় পরেছিলাম বাংলাদেশে বিকল্প মিডিয়া হিসাবে ব্লগ সাইটগুলোর প্রভাব দিঙ্কে দিন দিন বাড়বে এবং এই মুহুর্তে তারা মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার উপরে একরকমের পর্যবেক্ষকের ভুমিকা পালন করছে। কথাগুলো যে সর্বাংশে সত্য বিভিন্ন ঘটনাতেই টের পাওযা যায়।

মিডিয়া এখন যা খুশি তাই লিখতে পারেনা। জব্বার সাহেবের ঘটনাটি হল সর্বশেষ উদাহরন। আমাদের এই বল্গের প্রভাবশালী ব্লগার ফিউশন ফাইভ জব্বার সাহেবের এই অশ্লীল মিথ্যাচারকে প্রথমেই অভিহিত করলেন 'ফ্যাসিজম হিসাবে'। তারপরে যে সব ব্লগার জব্বার সাহেবের মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে বললেন তাদের লেখাকে উনি বললেন 'নারকীয় উল্লাশ'। কিছু কোটেশন তুলে দিলে ব্যাপারটি আরো পরিস্কার হবে।

'মূলধারার গণমাধ্যম- না সংবাদপত্র, না টেলিভিশন, না রেডিও কোথাও কোনো আলোচনা নেই। অথচ শ্রেফ একটা হুজুগে পড়ে আমরা এখন দিনরাত কাটিয়ে দিচ্ছি একটা সাধারণ সফটওয়্যারের পক্ষে ছেলেমানুষি করে। অভ্র নিয়ে বর্তমানে ব্লগে যা কিছু হচ্ছে, তা হচ্ছে শ্রেফ ফ্যাসিজম, জোর করে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা, ধরে বেঁধে একটি বিশেষ সফটওয়্যারের পক্ষে প্রচারণা। ব্লগে গতকাল জোর করে করে প্রোফাইল পিক পরিবর্তন করার একটা চেষ্টা দেখেছি। সেটা সফল হয়নি।

এরপর দেখলাম, ব্লগের ব্যানার পরিবর্তনের জন্য কেঁদে কেটে গা ভাসানোর হাস্যকর প্রদর্শনী। সামহোয়্যারকে ধন্যবাদ এই কারণে, তারা চলতি হুজুগে গা ভাসায়নি। কোথাকার কোন্ পাঠকবিহীন ব্লগ বা ফোরাম তাদের ব্যানার পরিবর্তন করেছে কি করেনি, সেটাই কেন সামহোয়্যারকে করতে হবে? বিজয়ের মতো একটি মেধাসম্পদের বিরুদ্ধে ব্লগে যে হারে কুৎসা, যে পরিমাণ অপপ্রচার করা হচ্ছে, এককথায় সেটা খুবই বেদনাদায়ক। অভ্র শেষপর্যন্ত একটি সফটওয়্যারই। কম্পিউটারে বাংলা লেখার ক্ষেত্রে সত্যিকারের বিপ্লব এনেছে বিজয়ই- ব্লগে হাজার হাউকাউ করলেও এই কৃতিত্ব এতোটুকু ম্লান হবে না।

আর ব্লগে আমরা ইউনিকোডে যে লিখতে পারছি, তার জন্য সিংহভাগ কৃতিত্ব পাবেন হাসিন। আসলে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, অভ্রের বিপক্ষে কথা বললেই তাকে বোধহয় রাজাকার কিংবা ছাগু সাব্যস্ত করা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র' এই কমেন্ট তিনি করেছেন ব্লগার গুরুভাই এর একটি লেখায়। ওই লেখায় তিনি আরো বলেছেন ' ব্লগে হাউকাউ করে, প্রোফাইল পিক চেঞ্জ করে, ব্যানার-ট্যানার লাগিয়ে কি পাইরেসির অভিযোগ খণ্ডন করা যায়? এইগুলো একধরনের অসুস্থতার বহিঃপ্রকাশ। স্রোতের বিপরীতে থাকাই ভালো। স্রোতের পক্ষে থাকার প্রবণতা, যেদিকে বৃষ্টি সেদিকে ছাতা ধরার অভ্যাস ভালো নয়, ওটা সুবিধাবাদিতা এবং স্পষ্টতই প্রতিক্রিয়াশীলতা।

' এর আগের দিন যখন সবাই একে একে অভ্র এর পাশে দাড়াচ্ছিল তখন উনি লেখাজোকা শামীম ভাই এর পোস্টে বলছেন 'শামীম, আপনি একটা ব্যাপার খেয়াল করছেন কিনা জানি না, অভ্রের প্রতি এই হুজুগ ফ্যাসিজমের দিকে টার্ন নিচ্ছে। মোস্তফা জব্বার যতো খারাপই হোন না কেন, বিজয়ের মতো একটি মেধাসম্পদ, যা ৯৮ ভাগ বাঙালিকে কম্পিউটারে বাংলা লেখার সুযোগ করে দিয়েছিল এবং দিচ্ছে, তাকে তুচ্ছ ও হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আমাদের কী নারকীয় উল্লাস! অদ্ভূত লাগে, যখন দেখি ব্লগাররাই এসব করছেন। ব্লগারদের আমি অগ্রসর মানুষ হিসেবে বিবেচনা করি। ' তারও আগে সিউল রায়হানের একটি পোষ্টে আপনি জানিয়েছেন আপনার কিছু কনফিউশনের কথা। তামাম বান্দাদের কোন কনফিউশন না থাক্লেও আপনার থাকল যেটির উত্তর রাগিব ভাই সুন্দর করে দিয়েছেন 'আমার মতে বিজয় নিয়ে যে ব্যবসা মোস্তফা জব্বার গড়ে তুলেছেন, তাতে সমস্যার কিছু নেই।

বরং সফল বাংলাদেশী সফটওয়ার প্রতিষ্ঠান হিসাবে সেটা বেশ ভালো কাজ করেছে। বিজয় এর প্রোগ্রামিং অন্যরা করলেও তার অর্থায়ন ও বাজারজাতকরণ মোস্তফা জব্বার করেছেন, ব্যবসায়ী হিসাবে তিনি সফল। কিন্তু সমস্যাটা হলো মোস্তফা জব্বার যখন তার মনোপলি ধরে রাখার জন্য অন্য সব ডেভেলপারদের হুমকি দিতে থাকেন। বিজয়ের দাম ১০০ না ৫০০ টাকা সেটা এখানে বিষয় না। বিষয় হলো মোস্তফা জব্বার মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে অভ্রকে পাইরেটেড বলে অপপ্রচার চালাচ্ছেন, কপিরাইট/প্যাটেন্টের জুজুবুড়ি দেখিয়ে ইউনিজয় লেআউটের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন।

এটা নতুন না। এর আগেও তিনি মাঞ্চুমাহারা ও বিপ্রর আমাদেরপ্রযুক্তি ফোরামকে সম্ভবত হুমকি দিয়েছেন। বাংলা কম্পিউটিং এর উপরে রিপোর্টে অভ্রর কথা লেখায় সাংবাদিক বিপ্লব রহমান ভাইকে ঝাড়ি দিয়েছেন। এই আচরণগুলো মোস্তফা জব্বারের অন্য সব অবদানকে ছাড়িয়ে গেছে। আর সেই সাথে তিনি নিজেকে বাংলা কম্পিউটিং এর প্রবক্তা বলে দাবি করেন, অথচ বাংলা কীবোর্ডের দিক থেকে বিজয় ৪ নম্বর মাত্র (তাও বাংলাদেশেরটা হিসাব করলে)।

ব্যবসায়িক স্বার্থে মোস্তফা জব্বার এর আগে ইউনিকোডের বিরোধিতাও করেছিলেন (সম্ভবত কম্পিউটার জগতে তার সেই "ভারতীয় বাংলা" ঢুকে যাবার ভয় দেখানো লেখা পড়েছিলাম)। যে যার ইচ্ছা সেটা ব্যবহার করবেন, এটা আমারও মত। বিজয় আর অভ্র -- দুটোই সফটওয়ার, একটা ফ্রি আরেকটা পয়সা লাগে বলে কোনোটা কারো চেয়ে মহৎ, এমন না। কিন্তু মিথ্যা অপবাদ দিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার গ্রাম্য রাজনীতি কৌশল -- জব্বার সাহেবের সাম্প্রতিক লেখা ও অনলাইনের আচরণে সেটাই প্রকাশ পাচ্ছে। '।

প্রকারন্তরে ওগুলা আপনার কনফিউশন না, আপনি নতুনের উত্থান কে মেনে নিতে নে পারার কস্ট। আমি জানিনা এই কস্টের উতস যদি হয় বিজয়ের প্রতি আপনার ভালোবাসা কারন ওটা দিয়ে আপনি শুরু করেছেন, তাহলে বলতে হবে আমরা তামাম আমজনতা আসলে মহা বেকুব ছাড়া আর কিছু না। কারন আমরা শুরু করেছিলাম হটমেইল থেকে, সবাই অথবা বেশীরভাগ এখন জিমেইল অথবা ইয়াহু এর ইউসার। মোদ্দা কথা যে বেশি ব্যাবহার বান্ধব সুবিধা দিতে পারবে তার কাছেই সবাই যাবে। অভ্র আর বিজয়ের ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে।

- আপনি বলেছেন ৯০ ভাগ ইউসারের বাংলায় হাতেখড়ি হয়েছে বিজয় দিয়ে। কই পেয়েছেন এই উদ্ভট তথ্য। বিজয়ের ভয়ে বাংলা টাচ করেনি এমন ইউজার ৯০ ভাগ হতে পারে। - আপনি বলেছেন আমরা নারকীয় উল্লাশ করছি। নারকীয় উল্লাশের মানেটা কি একটু জানাবেন জনাব? - আপনার কাছে মনে হয়েছে আমরা ফ্যাসিবাদি আচরন করছি।

ফ্যাসিবাদের মানে জানেন তো? না জানা থাকলে একটু সার্চ দিয়ে জেনে নিন তারপরে আপনার পার্বত্য চট্টগ্রামের উপরে পোস্টটা নিজে আরেকবার পরেন। ফ্যাসিজম কি মনে হয় পরিস্কার হবে মাথায় যদি গ্রে ম্যাটার বলতে কিছু থাকে। উপরন্তু অন্যান্য ব্লগ সাইট নিয়ে বলেছেন 'কোথাকার কোন পাঠকবিহিন সাইট'। এতটা দম্ভ ভালোনা ফিফা। আপনাদের এই দম্ভের কারনেই আজ এতগুলো সাইট।

তাদের পাঠকও আছে। আপনার কথা যেনো একজন ফ্যাসিবাদি শাষকের কন্ঠ, যেমনটা আমরা শুনতাম পাকিস্তান আমলে। এইরকম কথা বলেছিলেন প্রয়াত অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান সাহেব বাংলাদেশের প্রথম রাস্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল সাহেব কে উদ্দেশ্য করে 'কোথাকার কোন নজরুল?' । - আপনি বলেছেন প্রফাইল পিকচার পাল্টানোর জন্য নাকি জোর করা হচ্ছে। আগের প্যারাতে গ্রে ম্যাটার এর কথা এই জন্য বলেছি, কারু মাথায় যদি মাগুর মাছের সমান ঘিলু থাকে সে জানে একজনের পিকচার আরেকজন চেঞ্জ করতে পারেনা।

জব্বার সাহেবের অবৈধ মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে, বাংলা ভাষাকে সবার কাছে পৌছে দেবার জন্য যেসব তরুন তুর্কিরা খেটে জাচ্ছে তাদের সাথে ব্লগারগন একাত্ম হয়েছে। কেউ কাউকে জোর করতে পারেনা। অভ্র এর কারনেই বাংলাভাশায় গত দুইবছরে ইন্টারনেট জগতে নীরব বিপ্লব ঘতে গেছে। সেটা কি আপনি টের পাননি ফীফা? ব্লগার রাগ ইমন এর একটা কথা টেনে দিলে ভালো হয় 'অভ্রের অবদান যে কি আর কতখানি সেইটা নিয়ে অভ্র টিম কোন রিসার্চ করার দরকার বোধ করে নাই কিন্তু আমার মনে হয় করা উচিত । একটা বিনামূল্যের সফট ওয়্যার নিরবে , একেবারেই মূল্যায়নহীন কেমন করে বদলে দিয়েছে ওয়েবে বাংলার , বাংলাদেশের জগৎ , সেইটা যারা অভ্র ব্যবহার করেন তারা জানেন , ভাষা ব্যবসায়ীর মোজোর পক্ষে সেইটা বুঝা সম্ভব না ।

আমি দেখেছি , হয়ত অনেকেই নিজ নিজ পরিবারে দেখেছেন, আমার পরিচিত জনদের বিজয় লে আউট শিখতে আর মনে রাখতে কিভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা নষ্ট করেছেন। আবার বিপরীতে দেখেছি আমার অফিসের ৫০০ স্টাফ কি সহজে আর কত দ্রুত অভ্রকে আপন করে নিয়েছেন। ' http://www.somewhereinblog.net/blog/ronybest/29138634 আমার নতুন করে অভ্র নিয়ে কিছু বলার নেই। যেটুকু আছে তা হোল আপনার বুজতে হবে আমরা আজ যারা অভ্র এর গুনগান গাচ্ছি, ভালো কোন সফটয্যার পেলে আমরা আবার সুইচ করব। এটাই স্বাভাবিক।

আপনি এই সহজ সত্যতাকে কেনো মেনে নিতে পারছেন না? কেউ জব্বার সাহেবের বিজয়ের অবদানকে আস্বিকার করছেনা। বিজয়ের হাজারো ত্রুটির পরেও পথপ্রদর্শক হিসাবে তার আলাদা সন্মান ছিল। কিন্তু ইউজাররা তার ভাষা নিয়ে তার দাদন ব্যাবসার নিন্দা করছে আর স্বাগতম জানিয়েছে নতুনকে। আর স্রোতের বিরুদ্ধে থাকতে গিয়ে সেই দাদন ব্যবসাকে তাল দিচ্ছেন আপনি সাধারন ব্লগারদের বিরুদ্ধে বিষেদ্গার করে। আপনারও নিম্ন রুচীর মানসিকতা পরিস্কার করে দিয়েছেন সবার সামনে।

আমার তো মনে হয় ইলেকশন কমিশনের ৫ কোটি টাকা হারানো নিয়ে জব্বার সাহেবের থেকে আপনার দুক্ষটাই বেশী। শিরোনামে বলেছিলাম অন্যোর পিঠে কাঠাল ভাংছেন কেন? মানে নিজে কোন পোস্ট না দিয়ে বারবনিতার মত এর পোস্টে ওর পোস্ট গিয়ে বিশাল সব মন্ত্যব্য করে আসছেন। আমি জানি অসহ্য বেদনায় আপনি ছটফট করছেন [কমেন্ট পরলেই পরিস্কার হয়], তো নিজে কিছু লিখুন না এই ব্যপারে। আপনার শুভবুদ্ধির উদয় হোক এই আশা করা মনে হয় বৃথা। তাই করতে পারলাম না বলে দুক্ষিত।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.