andharrat@জিমেইলডটকম
আমরা আগে (ছোটকাল থেকেই) নিয়মিত দৈনিক পেপার পড়তাম। হকারের অপেক্ষায় সকালে কয়েকবার বারান্দায় (বারান্দায় পেপার ফেলে যেত,তাই) চক্কর খেতাম এবং হকারের দেরী হলে তার মুন্ডু চিবাতাম। সেই সাথে সিদ্ধান্ত নিতাম, আজকেই ওকে 'না' করে দেব, দেরীতে পেপার দেয়ার জন্য। অন্যরা কত আগে পেপার পেয়ে যায়।
আশ্চর্য্য, হকার অনেক দেরীতে এলেও হকারের চেহারার দিকে তাকান তো দূরের কথা পেপারের উপর হায়েনার মত ঝাঁপিয়ে পড়তাম।
ভুলে যেতাম হকারকে ঝাড়ি দেয়ার জন্য ঠিক করা ডায়লগগুলো।
সেই আমরা গত জিয়ার স্ত্রীর সরকারের মাঝামাঝি সময় পেপার নেয়া বন্ধ করে দেই। কারন আমাদের সবার মানসিক চাপ বেড়ে যাচ্ছিল। এত খুন, লুট, দখল, চাঁদাবাজি, ছিনতাই এসবের খবর আমাদের মানসিক বৈকল্য তৈরী করতে শুরু করেছিল। পেপার খুললেই মানুষের বুক ফাটা কান্নার ছবি, রক্তাক্ত মানুষের ছবি, আগুনে সম্পদ পুড়ে যাওয়ার ছবি, নিঃস্ব হয়ে যাওয়া অসহায়ের ভেজা চোখ, ছিনতাইকারী বা খুনীর সদম্ভ উক্তি, ঘুষখোরের তেলতেলে চেহারা, ভুঁড়িফোলা পুলিশ অফিসারের নির্জলা মিথ্যা কথা, "আসামীকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে" সন্তানহারা পিতার বুক চাপড়ান--এসব কিছু ছবি ও খবর আমাদের মনকে বিষাক্ত করে তুলছিল, আমাদের খাবার রুচি ও রাতের ঘুম বিঘ্নিত হচ্ছিল।
তাই মনকে শান্ত ও ফ্রেশ রাখার জন্য পেপার নেয়া বন্ধ করে দেই।
তারপর এল "উদ্দিন" সরকার। তখন দেশে একটা উত্তেজনা মিশ্রিত ভয় বিরাজ করছিল। তখন অনিয়মিত পেপার নিতাম।
এরপর এল মুজিব কন্যার সরকার।
ডিজিটালের খুশবু পাবো বলে মাঝে মাঝে পেপার নিতাম। তারপর এল নতুন একটি দৈনিক ঢাক-ঢোল পিটিয়ে। নতুনের স্বাদ নেয়ার একটা বদঅভ্যাস আছে আমার। শুরু হল আবার নিয়মিত পেপার নেয়া। কিন্তু একি সেই তো আগের বিস্বাদই রয়ে গেছে।
সেই খুন, সেই লুট, সেই ভয়ন্করতা! আবার ফিরে এল সেই পুরোন মানসিক অস্হিরতা আর কষ্ট। কী থাকে এখন পেপারগুলোতে? শুধু খুন আর খুন। কে কয়টা খুন করতে পারে তার প্রতিযোগিতা। প্রতিদিন এরকম নেগেটিভ জাতীয় খবর পড়লে মানবিক বৈকল্য ঘটবেই। তাই আবারো বন্ধ করলাম পেপার।
তবে বদ অভ্যাস একটা রয়ে গেছে। কাগুজে পেপার না নিলে কি হবে মাঝে মাঝে হাত চলে যায় অনলাইন পেপারে। ফলে আমার মানসিক অবস্হার অবনতি হচ্ছে মনে হয়। এখন একটু খুন করে স্বাদ নিতে মনে চায় !!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।