এক জন পুরুষ যতই সাহসী ও শক্তিশালী হোক না কেন তার জন্য একটি নারীই যথেষ্ট্য।
নতুন অভিবাসী ও ফ্রান্স
আমি বাংলাদেশের অভিবাসীদের কথাই বুঝাতে চাচ্ছি। প্রবাস বেশ কঠিন জায়গা। বিশেষ করে যারা প্রথম অভিবাসী হন তাদের জন্যতো বটেই। দেশ থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে সম্পূর্ন ভিন্ন পরিবেশে,অচেনা অপরিচিত জায়গাতে বসতি স্থাপন খুবই কষ্টকর।
ভাষাগত সমস্যা,কালচারাল সমস্যা প্রতিনিয়তই চলার পথে বাধা হয়ে দাড়ায়। বাংলাদেশ পৃথিবীর অনুন্নত ও পশ্চাদপদ একটি দেশ। কথাটি শুনে দেশপ্রেমী অনেকে কষ্ট পাবেন জানি। তারপরও দেশকে ভালোবাসি বলেই কথটি বলে ফেললাম। দেশের জনগন শিক্ষা দীক্ষা, উন্নত ধ্যান ধারনা, চিকিৎসা, আধুনিক টেকনোলজির ব্যাবহার থেকে অনেক পিছিয়ে।
দেশের ছেলে মেয়েরা এসব দেশে এসে ভিন্ন এনভারমেন্টে হোছট খেতে হয় প্রতিনিয়ত। ইদানিং যে কিছু কিছু ছেলে প্রতিযোগিতা করে বেরিয়ে আসছে না তা নয়। ্ভিনদেশে বাঙ্গালী পরিবারের কর্তাদের অজ্ঞতা অনেক সময় সন্তানদের সঠিক পথ নির্ধারনে বাধা হয়ে দাড়ায়। একটু সাবধানি হয়ে স্কুল কলেজ লেভেলে যদি এদের বেজটা তৈরী করে দেয়া যায়, তাহলে পরবর্তিতে ভাল ফলাফল নিয়ে বেরুতে পারবে আশা করা যায়।
ফ্রান্সে মোট বাংলাদেশীর সংখ্যা পনেরো থেকে বিশ হাজারের মতো হবে।
এদের অধিকাংশেরই বাস করে প্যারিস ও তার আশেপাশে। ইদানিং অবশ্য এদের কিছু অংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেছে এদিক ওদিক বড় বড় শহরেগুলোতে। বেশ কয়েকটি কারনে অভিবাসিরা রাজধানী ও তার আশেপাশে থাকতে বেশী পছন্দ করে । প্রথম কারনটি হলো এদেশের অভিবাসন সিস্টেম। ফ্রান্স এখনো অভিবাসিদের তীর্থভূমি।
এখনো এখানে অভিবাসিদের সমস্যাগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়। জাতিসংঘে র মানবাধিকার বিবেচনায় ফ্রান্স অন্যতম সেরা একটি দেশ। অভিবাসি বিষয়ক আইন এখানে এখনো শিথিল। আপনি ইচ্ছে করলে ষ্টে পারমিশন ছাড়াই সারাটি জীবন এদেশে কাটিয়ে দিতে পারেন। ধরে দেশে পাঠীয়ে দেয়ার সম্ভবনা এক দম নেই।
তবে নতুন অভিবাসিদের জন্য সামনের দিনগুলো বেশ কঠিন হতে পারে এমনটাই আভাস দিচ্ছে এদেশের বর্তমান সরকার ।
এখানে অভিবাসীদের সমস্যা ও আবেদনত্র বিবেচনা করার মেইন অফিসগুলো প্যারিস ও তার আশেপাশে। বাংলাদেশ থেকে অভিবাসী হয়ে কেউ প্রথম এলে তাদেরকে বেশ কিছু অফিসিল ফরমালিটি পালন করতে হয়। যেতে হয় বেশ কিছু সরকারি অফিস আদালতে । আর এগুলোর অধিকাংশই প্যারিস ও তার আশেপাশে।
এ কারনে সবাই প্যারিসে থাকতেই বেশী স্বাচ্ছন্দ করেন।
এখানে আমাদের বাংলাদেশীদের জন্য প্রধান সমস্যা ভাষা । আমরা যারা বাংলাদেশ থেকে আসি কমবেশী সবাই ইংরেজী বলতে ও বুঝতে পারি। কিন্তু ফ্রেন্স ভাষা সম্পূর্ন ভিন্ন রকম, এলফাবেট গুলো ইংরেজীর সাথে মিল থাকলেও বাক্য গঠন ও শব্দের উচ্চারন সম্পুর্ন ভিন্ন। আর ফরাসীরা ইংরেজী একদম বুঝেন না।
সে কারনে এখানে প্রথম এসে পুরনো বংগালীদের উপর নির্ভর করতে হয়। হাতেগোনা কয়েকজন অনুবাদক ও এন্টারপ্রেট আছেন যারা বাংগালীদের অফিসিয়াল কাগজপত্র বাংলা থেকে ফ্রান্সে অনুবাদ করে থাকেন। ফরাসি ভাষায় যে দেশগুলোর প্রধান বা সেকেন্ড ল্যাংগুয়েজ ইংরেজী সে সব দেশকে অংলো ফোন পেই বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশ ইংলিশ স্পিকিং কান্ট্রি হওয়াতে বাংলাদেশকে অংলোফোন পেই বলে থাকে। পেই কথাটির অর্থ কান্ট্রি বা দেশ।
ফ্রান্সের ইমিগ্রেশন সিষ্টেম ইউরোপের অন্যান্য দেশের মত নয়। ইমিগ্রেশন সিস্টেমের কারনেই বিদেশীদেরা প্যারিসমুখী হতে বাধ্য হয়েছে। ইউরোপের কোনো দেশে কোন ব্যক্তি রাজনৈতিক আশ্রয় চাইলে তাকে সাথে সাথে বাইরের কোনো শহরে আবাসিক সুবিধা দিয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তার চলাচলের উপর আরোপ করা হয় নিষেধাক্কা। এতে করে এক সময় ওই ব্যক্তি ঐ শহরেই স্যেটেল হয়ে যায় ।
শহরটাকে ভালোবেসে ফেলে।
কিন্তু ফ্রান্সের ইমিগ্রেশন সিষ্টেম সম্পুর্ন ভিন্ন। কোন ব্যাক্তি ইমিগ্রেশন অথবা রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করলে, ঐ ব্যাক্তি দেশের যে কোন শহর থেকে আবেদন করতে পারে। কোন কারনে শহর বা ঠিকানা পরিব র্তন করলে নিকটবর্তী পুলিশ ষ্টেশনে রিপোট করলেই হয়।
বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের মতো ফ্রান্সও বাইরের দেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি মাইগ্রেন্ট করে থাকেন।
কিন্তু সংখ্যার দিক দিয়ে বাংলাদেশীদের হার জিরো। এর পিছনে দুটি কারন থাকতে পারে, একটি ভাষাগত কারন। আরেকটি মাইগ্রেশনের বিষয়টি না জানা। তবে আফ্রিকান দেশগুলো থেকে প্রতিবছর অনেক দক্ষ লোক এদেশে মাইগ্রেন্ট হয়ে থাকে।
এখানকার ইমেগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট আবেদনকারীদের থাকা-খাওয়ার জন্য সোসাল দিয়ে থাকেন ঠিকই কিন্তু আবাসনের ব্যাবস্থা করেন না।
এ কারনেও বিদেশীরা প্যারিসমুখী হয়ে পড়েছে। প্যারিস অভিবাসী কেন্দ্রিক হওয়ার আরেকটি বড় কারন কর্ম- সংস্থানের সুযোগ। প্যারিস বিশ্বের অত্যাথুনিক জাকজমকপূর্ন মেগাসিটি। প্রতি বছর বিশ্বের সর্বাধিক টু্রিষ্ট আগমন করে এই দেশটিতে। অসংখ্য অফিস- আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,হোটেল, রেষ্টূরেন্ট,ক্যাফে-বার এ অসংখ্য বিদেশীর কর্ম-সংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে।
অনেক অবৈধ বাংলাদেশীও কাজ পেয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাইরের শহরগুলোতে খুব সহজেই কাজ পাওয়া যায় না।
এখানে বাংলাদেশীদের বেশ কিছু ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোর আছে যেখানে বাংলাদেশী মাছ, শাক-শব্জী, মসলা সবই পাওয়া যায়।
বিমানের ঢাকা- প্যারিস ফ্লাই ট বন্ধ হওয়ার পর এখন লন্ডন হয়ে আসে। এছাড়া শ্রীলংকান,পাকিস্তান ও ইন্ডিয়ান ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোর গুলোতেও আমাদের দেশীয় পণ্য সামগ্রী পাওয়া যায়।
চাকুরি-ব্যাবসা আর ছেলে-মেয়েদের স্কুল-কলেজ এসব নিয়ে প্রতিটি পরিবারকেই ব্যস্ত থাকতে হয় এখানে। তারপরও যে কোনো Week End এ কোনো অকেশনে কয়েকটি পরিবার নিজেদের মধ্যে মিলিত হয়ে থাকে। এছাড়াও বৈশাখী মেলা, ফেত দোলা মিউজিক বা কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পরিবার গুলো একসাথে মিলিত হওয়ার সুযোগ পায়। আমি বাংলাদেশের অভিবাসীদের কথাই বুঝাতে চাচ্ছি। প্রবাস বেশ কঠিন জায়গা।
বিশেষ করে যারা প্রথম অভিবাসী হন তাদের জন্যতো বটেই। দেশ থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে সম্পূর্ন ভিন্ন পরিবেশে,অচেনা অপরিচিত জায়গাতে বসতি স্থাপন খুবই কষ্টকর। ভাষাগত সমস্যা,কালচারাল সমস্যা প্রতিনিয়তই চলার পথে বাধা হয়ে দাড়ায়। বাংলাদেশ পৃথিবীর অনুন্নত ও পশ্চাদপদ একটি দেশ। কথাটি শুনে দেশপ্রেমী অনেকে কষ্ট পাবেন জানি।
তারপরও দেশকে ভালোবাসি বলেই কথটি বলে ফেললাম। দেশের জনগন শিক্ষা দীক্ষা, উন্নত ধ্যান ধারনা, চিকিৎসা, আধুনিক টেকনোলজির ব্যাবহার থেকে অনেক পিছিয়ে। দেশের ছেলে মেয়েরা এসব দেশে এসে ভিন্ন এনভারমেন্টে হোছট খেতে হয় প্রতিনিয়ত। ইদানিং যে কিছু কিছু ছেলে প্রতিযোগিতা করে বেরিয়ে আসছে না তা নয়। ্ভিনদেশে বাঙ্গালী পরিবারের কর্তাদের অজ্ঞতা অনেক সময় সন্তানদের সঠিক পথ নির্ধারনে বাধা হয়ে দাড়ায়।
একটু সাবধানি হয়ে স্কুল কলেজ লেভেলে যদি এদের বেজটা তৈরী করে দেয়া যায়, তাহলে পরবর্তিতে ভাল ফলাফল নিয়ে বেরুতে পারবে আশা করা যায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।