My scars remind me that the past is real, I tear my heart open just to feel........
আগের পর্বগুলো:
পর্ব১: Click This Link
পর্ব২: Click This Link
পর্ব৩: Click This Link
পর্ব৪: Click This Link
পর্ব৫: Click This Link
প্রারম্ভিক কথা: রেগুলার লেখা হয়না, কিন্তু তাই বলে মেগাসিরিয়ালকে তো অন্য নাম দিতে পারিনা! ঢাকা কলেজে পড়ার সময়ের কিছু কথা নিয়ে শুরু করেছিলাম এই সিরিজ, আরেকবার দেখা যাক শেষ করতে পারি কিনা। ভাল লাগলে, সেটাই আমার প্রাপ্তি, কারণ কলেজে ঢুকার সময়ও কেউ টের পায়নি, বার হওয়ার সময়ও না। পড়ুন আর উপভোগ করুন দেশের একমাত্র বিজ্ঞাপনবিরতি বিহীন মেগাসিরিয়াল। শুরু হচ্ছে মেগাসিরিয়াল ঢাকা কলেজের ৬ষ্ঠ এপিসোড, ঢাকা কলেজ:৬; তখনকার পরিবহন ব্যবস্হা আর এখনকার অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পরিবহন ব্যবস্হার সাথে মিল/অমিল!
আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন প্রায় শেষ (শুধু এমএসের রেজাল্ট দেয়া বাকি)। ক্যাম্পাসে যাই ইরেগুলার, শুধু রিসার্চ পেপারগুলো কোন জার্নালে পাঠাবো আর নতুন রিসার্চ টপিকসগুলোর ব্যাপারে স্যারদের সাথে আলোচনা করতেই যাই, ভার্সিটির বাসে তেমন একটা উঠা হয় না এখন।
আজ মেলা দিন পরে উঠে ঢাকা কলেজের বাসের কথা মনে পড়ল। আজকের পর্বটা পুরোটা ঢাকা কলেজের না, কিছুটা ঢাকা ইউনিভার্সিটি, বুয়েটের, অন্যান্য পাবলিক ইউনিভার্সিটি, মেডিকেল কলেজগুলোরও। কাজেই আমি আন্তরিকভাবে তাদের অভিজ্ঞতাগুলোও জানতে চাচ্ছি।
আমি যখন কলেজে পড়ি, তখন ঢাকা কলেজের বাস ছিল মাত্র ১টা, সেটাও লটের মাল। ১৯৯২ সালে খালেদা জিয়া উপহার দিয়েছিলেন অনেকগুলো বাস দেশের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, তারই একটা এসেছিল এখানে (সেজন্যই লটের মাল বলা)।
তো সবেধন নিলমনি সেই বাস ট্রিপ দিত শুধুই মিরপুর রুটে। খুবই স্বাভাবিক, মিরপুরের স্টুডেন্টই বেশি ছিল কলেজে। সকালে কখন কলেজে আসত এখন আর মনে নেই, তবে ডাউন ট্রিপের টাইমটা এখনও মনে আছে, দুপুর ১টায়! কেন মনে আছে?
বাসটা কলেজের গ্যারাজ থেকে বের করে শহীদ মিনারের সামনে আনত ১২টার দিকে। ব্যাস, হুড়াহুড়ি করে ১০/১৫ জন উঠে যেত। আস্তে আস্তে ছাত্র বাড়তেই থাকত, মোটামুটি ১২.২০এ বাসের সব সিট প্যাকড।
১২.৩৫ এর মধ্যে দাড়ানোর জায়গাগুলোও শেষ। এরপর চাপাচাপি করে সেটগুলোর মাঝখানের দাড়ানোর জায়গাগুলো ভর্তি হত ১২.৪৫ এর মধ্যে। বাকি ১৫ মিনিটে ছেলেরা উঠত জানালাগুলোতে। যখন রওনা হত তখন বলতে গেলে বাসের কাঠামোটাই বুঝা যেতনা।
তবে ওভারঅল পরিবহন ব্যবস্হার অনেক উন্নতি হয়েছে ঢাকা শহরে সেটা মানতেই হবে।
ঢাকা কলেজেই এখন বেশ কয়েকটা রুট সম্ভবত, একটা আমার ভার্সিটির বাসের রুটের সাথেও মিলে। সকালে যখন শ্রাবণের জন্য দাড়াতাম মাঝে মাঝে ঢাকা কলেজের দুয়েকজন রিকোয়েস্ট করত, বাসে উঠতে দেয়ার জন্য, কখনো কখনো দিতামও। বুয়েটের কিছু ফ্রেন্ডকেও দেখতাম বিপদে পড়ে সকাল ৭টার ভার্সিটির বাসে উঠতে।
যত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আজ পর্যন্ত দেখেছি, আমার মনে হয়েছে বুয়েটের বাস সবচেয়ে বেশি। এবং বুয়েটের ছাত্রদের বাসে দাড়িয়ে যেতে দেখার ঘটনাও খুব রেয়ার, আমার চোখে।
ওদের লাস্ট বাস ট্রিপ দেয় সম্ভবত ৫.৩০টায়, ঢাকা ইউনিভার্সিটিরগুলোও তাই। বাসের দরজায় দাড়িয়ে যাওয়ার মজাই আলাদা, এবং দেখা যায় রেগুলার দরজায় দাড়িয়ে যাওয়া কিছু গ্রুপও আছে, সবসময় দড়জায়, সিট ফাঁকা থাকলেও। তবে কড়া বৃষ্টি বা শীতের ভোর ৭টার বাসে এরা কখনো বাসের মাঝামাঝি ছাড়া বসে না। সকাল ৮টায় ঢাকা কলেজের যে বাসটা আমাকে ক্রস করে যেত সেটার দরজাতেও সেম চরিত্র দেখেছি। চিটাগাং ভার্সিটির শাটল ট্রেন আমি দেখিনি, ওটার কথা তেমন জানিনা, তবে কিরকম হতে পারে, ভার্সিটির বাসগুলো দেখলেই বুঝা যায়।
আবার কিছুক্ষণের জন্য ফিরে আসি ঢাকা কলেজে। আমার বাসা থেকে যাওয়ার জন্য উপায় ছিল রিকশা অথবা বাস। বাসে যাওয়ার জন্য সাইন্সল্যাব অথবা নীলক্ষেত মোড় থেকে বাসে উঠতাম মতিঝিলে নামিয়ে দিত। নীলক্ষেতে বাস ছিল ১৩নাম্বার বাস (এটা ঢাকা শহরে যত বাসরুট আছে তার মধ্যে সবচেয়ে জঘন্য সার্ভিস দেয়, বুঝে নিন কি জিনিস)। সাইন্স ল্যাব দিয়ে মতিঝিলগামী একটা বাসই ছিল তখন, বিআরটিসির নীল রংএর বাস (সিঙ্গেল ডেকার), ভাড়া নিত ৭টাকা করে মতিঝিল পর্যন্ত।
তবে আমরা ঢাকা কলেজের পাবলিকরা খুজতাম 'অপশন বি'। মানে সরকারী কিছু স্টাফ বাস মাঝে মাঝে রাস্তা থেকে প্যাসেন্জার নেয় যে ওগুলা। ৩টাকার ভাড়া ১টাকা দেয়ার জন্য ১০/১৫মিনিট ঝগড়া করতাম সবাই, ঝগড়ায় সময়টাও কেটে যেত, টাকাটাও বাচঁত। দলগত ঝগড়া কি জিনিস ঐ বাসগুলোতে না চড়লে বুঝা যায় না আমার এক বন্ধু ফার্মগেটে থাকত, ওর যাওয়ার একমাত্র উপায় ছিল টেম্পু(তখনো ছিল)। ক্লাশ শেষে ও টেম্পুতে উঠলে ওকে কিছুক্ষণ ভেংচাতাম, বাসার দিকে রওয়ানা হবার আগে।
আবার, ঢাকা ইউনিভার্সিটির বাসগুলোর আরেক মহান জিনিস হচ্ছে বাসকমিটি। কমিটির মেম্বার হওয়ার জন্য কিছু অতিউৎসাহী পাবলিকের কখনো অভাব হয়না, কিন্তু বাস না থাকলে এদের বেশিরভাগকেই ফোনে পাওয়া যায়না। তবে ব্যতিক্রমও আছে। নারায়ণগন্জের একটা বাসকমিটির কথা শুনেছিলাম অনেক আগে, এরা বাস নষ্ট হলে নিজেরাই নাকি বাস ভাড়া করে ঢাকায় চলে আসতেন! এখন করে নাকি জানিনা। তবে বাসরুটের নামগুলো জটিল, নাম শুনে আমরা ফার্স্ট ইয়ারে এলাকার নাম বিচার করতাম।
নারায়নগন্জে তখনো রেডলাইট এরিয়া ছিল, তাই আমরা বলতাম এদের বাসরুটের নাম 'আনন্দ' হতেই পারে
ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে যারা পড়েন, তারা সবাই হয়ত খেয়াল করেছেন প্রত্যেক ইয়ারের শুরুতে যে বেতনটা আমরা দেই তাতে পরিবহনখাতে সম্ভবত ৬০০টাকা করে দেয়া হয়। এই টাকাটা যে কি হয় আজো এর হিসেব মেলাতে পারিনি। প্রায় সবরুটেই ভার্সিটির নিজস্ব বাসগুলো চরম বাজে অবস্হা, চলে যে কিভাবে কে জানে? এক্সেস বাস সম্ভবত ২টা, কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখুন কোন না কোন রুটে বাসগুলো পারমানেন্টলি চলতে চলতে নিজেরাই বিকল হয়ে পরে আছে। বিআরটিসির ভাড়ায় চালানো ডাবল ডেকারগুলোই ভরসা। এগুলো কখনোই মিস দেয়না, নষ্ট হলে ডিপো থেকে আরেকটা পাঠিয়ে দেয়া হয়।
তবে বিআরটিসির এই ভাড়া দেয়ার ফল যে নগরীর পরিবহন ব্যবস্হায় চাপ ফেলছে, তা কি আমরা অস্বীকার করতে পারি?
ঢাকা কলেজের বাসগুলোতে যারা চড়ে তাদেরও ভার্সিটির ছাত্রদের মতই মনে হয়েছে দুর থেকে দেখে। পুরা পথের রাজার মত যাওয়া, রিকশা দেখলে এমন বিকট চিৎকার দেয়া যে আশেপাশের সবার আঁতকে উঠা......
ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে বাস চড়া নিয়া অনেক মাজার অনেক মজার ঘটনা আছে, সেগুলো পরে অন্য কোন পোস্টে বলব। কয়েকদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন এক কোটিপতি জানি নরসিংদি রুটে নতুন একটা বাস কিনে দিয়েছেন, আগে এই রুট-টা ছিলনা। এই রুটে ঢাকা কলেজের ছেলেদের উঠা নিয়ে হয়ে গেছে আরেক কান্ড Click This Link
তবে সবচেয়ে ফানি বিষয় কি জানেন? যারা বাসার পাশের নটরড্যাম কলেজ রেখে সারা ঢাকা শহর ঘুড়ে কলেজে যেয়ে দেখে টিচাররা ক্লাশ নেন না
বি.দ্র: মেগাসিরিয়ালে সামনের পর্ব থেকে ক্লাশমেটদের সাথে বিভিন্ন মজার ঘটনাগুলো আসবে। আজকের পর্বটা শুধু ঢাকা কলেজ না, নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্হা আছে এরকম সবার জন্য।
প্লীজ আপনাদের কথাগুলোও শেয়ার করূন। ধন্যবাদ সবাইকে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।