আগুন্তক প্রথম রায়ে যখন বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসি দেয়া হয় তখন আওয়ামীলীগের সবাই বলতে থাকল যে তারা এই প্রথম কোন যুদ্ধপরাধির ফাসির রায় দিল বা বিচার করল। কিন্তু কালকে যখন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হল কাদের মোল্লা কে এবং সারা দেশের মানুষ এর প্রতিবাদ করতে লাগলো যে কেন তাকে ফাঁসির আদেশ দেয়া হলনা তখন উনারা বলতে থাকলেন যে আওয়ামীলীগ বাঁদি পক্ষ, রায়টা বিচারকের দায়। অর্থাৎ বলীর পাঠা বিচারকরা। তাই না? আইন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম আবার বলীর পাঠা বানালেন জনগণকে। কাদের মোল্লার এই রায়ের জন্য তিনি বাংলার জনগন কে দোষারোপ করলেন।
তিনি বলেন, জনগণ এখন যেভাবে মাঠে নেমেছে আগে থেকে এভাবে সোচ্চার হয়ে মাঠে থাকলে রায় অন্য রকম হতে পারতো বলে মন্তব্য করেছেন আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। যখন সফলতা তখন সফলতার সব ক্রেডিট উনাদের আর যখন ব্যর্থতা তখন আরেকজন? অর্থাৎ, উনারা সবসময় সেফ সাইডে থাকতে চান, নিজের স্বার্থ রক্ষায়। বাচ্চু কে ফাঁসি দেয়া হল কারন সে তো নাই। পলাতক। ফাঁসির আদেশ দিলেও কি আর হবে।
কিন্তু কাদের মোল্লার ফাঁসি দিলে তো নাটকের এপিসোড শেষ হয়ে যেত। এমন রাজনৈতিক ভুল আওয়ামীলীগ করবে না, এটাই স্বাভাবিক। কারাদণ্ড দিলে ভবিষ্যতে অন্য কোন সরকারের আমলে আসামীরা প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বের হতে পারবে, আর আওয়ামীলীগ আবার এটা নিয়ে রাজনীতি করার সুযোগ পাবে। দরকার পরলে প্যারোল দীর্ঘায়িত করবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রয়োজনের সময় আবারও জামাতকে কাছে টানতে পারবে। কিংবা, আগে থেকে কোন একটা মামলা ঝুলিয়ে রেখে ভবিষ্যতে তাদের ফাঁসী দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আবারও বিপুল সংখ্যক ভোটারদের মন জয় করতে পারবে।
ঠিক একই রকম বিশ্বজিতের ব্যাপারে। প্রথমে উনাদের নেত্রী বলেন হত্যাকারীরা নাকি ছাত্রলিগের কেউ না। কিন্তু যখন ছাত্রলীগের মিছিল মিটিঙে তাদের ছবি পত্রিকায় আসলো তখন বলেন ওরা ছাত্রলীগের সমর্থক কিন্তু কমিটির কেউ না, কর্মী না, কর্মী পদের জন্য আবেদন করেছিল ইত্যাদি ইত্যাদি। একই নাটক বার বার করেন, একই মিথ্যা বার বার। জনগণকে কেন যে এত বোকা ভাবেন উনারা বুঝি না।
এখন আবার আসি কালকের রায় নিয়ে, কালকের রায়ে ৩ টা ব্যাপার মাথায় আসছে। প্রথমটা তো উপরেই বলে ফেললাম। ২য় টা হল এমনও দেখা যেতে পারে যে কিছুদিন পর সরকার আবার আপিল করল এবং ফাঁসির আদেশ হল। তাহলে বুঝতে হবে যে সরকার জনগণ কে একটু পুতুল নাচ খেলল। প্রথমে যাবজ্জীবন এবং সাধারণ জনগণের চাপে পুনরায় আপিল এবং ফাঁসি।
সরকার যেন দেখাতে চায় যে তারা জনগণের মতামতকে অনেক গুরুত্ব দেয় ( যদিও সাগর-রুনি, বিশ্বজিৎ এসব ঘটনায় তা সমর্থন করে না) । এটা নির্বাচনের আগে আওয়ামীলীগের জন্য একটা বড় নির্বাচনী হাতিয়ার হবে। উনারা ভাতটা একটু ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে খেলেন, আর সাথে জনগণকেও একটু নাচালেন এবং তাতে সমর্থন বেড়ে গেল অনেক আর পরবর্তী নির্বাচনে জয়ের সুযোগ আসলো। যদিও এটা খারাপ তাও এটাকে মন্দের ভালো বলা যায় আরকি। ফাঁসি তো দিল।
আর ৩ য় টা হল বিদেশী প্রভুদের চাপে পড়ে এমন রায় দিতে বাধ্য হল সরকার। তাই যদি হয় তবে আশা করি আওয়ামীলীগ তার পরবর্তী নির্বাচন ইশতেহারে ( স্বপ্ন দেখানো) সব প্রতিশ্রুতি লিখে। তার নিচে এমন কিছু যোগ করবেন। **
** শর্ত প্রযোজ্য। শর্ত সমূহ হল
১।
বিদেশী প্রভুদের অনুমোদন সাপেক্ষে
২। নিজের পকেট ভরার পর যদি কিছু অর্থ বাকি থাকে।
আর আমরা সাধারণ জনগণ আর কত এদের নাটক সহ্য করবো। একটা নতুন রাজনৈতিক দল দরকার যাতে আওয়ামীলীগ/বিএনপি/জামাত ইত্যাদি ইত্যাদি কোন দলেরই লোক থাকবে না, যাতে থাকবে দেশের সৎ এবং যোগ্য নাগরিকরা, যাদের পীঠে দুর্নীতি/দালালীর কোন সিল থাকবেনা। অনেক দেখসি এদের নাটক।
আর না। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।