যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে
সারাক্ষণ বিদ্যুতের একটা দর্শনীয় বস্তু আমাদের মাথার উপরে ঘুরতে থাকে অথবা দেয়াল ভেদিয়া শীতল একটা হাওয়া বিতরণ করে। ইহার কারণ আমাদের চর্মের উত্তপ্ততা দূরীভূতকরণ। এবং এই আমরা বলতে বোঝাই দেশের মাত্র এক-চতুর্থাংশ যাদের ফ্যান বা এসি রয়েছে। কিন্তু ইহা তেমন আবশ্যক নহে।
আমাদের চামড়া যে পরিমাণ উত্তপ্ততা ধারণ করতে পারে সে সম্বন্ধে আশা করি সবার একটা বিশ্বাস জন্মেছে।
নিজামী শুয়োরের বাচ্চা স্বাধীন বাংলাদেশের মন্ত্রী হয়েছিলো এবং আমাদের চামড়া তাতে পুড়ে যায়নি। জিয়াউর রহমান নামক একজনকে আমরা এখন বাংলাদেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসাবে শুনতে পাই, ইহাতেও কোনো সমস্যা হয় নাই। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর সমকাতারে উক্ত জিয়াকে ফেলিয়া নজরুল নামক বালবাচ্চার রচনা পড়িয়া আমাদের চামড়ায় ফোসকা পড়ে নাই। অএতব কেবল বৈদ্যুতিক বা শীতলযন্ত্রের পাখা ঘুড়াইবার উসিলায় বিদ্যুত আমাদের দরকার নাই।
চর্ম শীতল করা ব্যতীত আমাদের ফ্রিজ চালানোর জন্য বিদ্যুত প্রয়োজন হয়।
কিন্তু চিন্তা করিয়া দেখুন ফরমালিন যুক্ত মৎস, মাংশ, দুগ্ধ এমনকি কতেক শবজি ফ্রিজবদ্ধ করিয়া উহাতে ফরমালিন আরো ঘনিষ্ঠভাবে মিশ্রণের সুযোগ করিয়া দেয়া হইতেছে। যদি ফ্রিজ অকেজো হয় তবে আপনাকে নিত্য বাজার করিতে হইবে - এইভাবে হয়তো ফরমালিন মুক্ত টাটকা শবজি ক্রয়ে আপনার পারদর্শিতা জন্মিবে।
এছাড়া টিভি দর্শনের মত আনপ্রোডাক্টিভ কাজ আমরা পরিহার করিতে পারিবো। শ্রীধন্য শায়খ আব্দুল সিরাজ আর ফরিদ গাজী সাগরের চ্যানেল আই দেখার মত অত্যাচার আপনাদের সহ্য করিতে হইবে না। একমিনিট নাটক দেখানোর পরে দশ মিনিট যাবত বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে এই আবালযুগল আমাদের কুকুরগোত্রীয় যে সেবা প্রদান করিতেছে তা হইতে নিস্তার মিলিবে।
এছাড়া আছে ভোদাইকুসুম মিস্টার ইভা রহামনের চ্যানেল আর বৈদিক সভ্যতার শেষ অনুস্বার সম্বলিত ইন্ডিয়ান টেলি-পরিবারের সিরিয়াল রসঘনমঞ্জুরীগলধঘর্মদীঘলরেকর্ডি নাটক। এই অক্ষিনেশাগ্রস্থতা থেকে মুক্তির উপায় ঘটিতে পারে টিভি দর্শন না করিলে - যা একমাত্র কারেন্ট না থাকিলেই সম্ভব।
এছাড়া কারেন্টের প্রয়োজন আমাদের কম্পিউটার চালানোতে, দেশের সকল হাগামুতা ডিজিটাল করিতে। কিন্তু ডিজিটাল ও এনালগের মধ্যে বিন্দুমাত্র পার্থক্য কেউ এযাবত নিরূপন করিতে সক্ষম হন নাই। কম্পিউটারের মাধ্যমে ওয়েবে সংযুক্তি লাভ করিয়া আমরা কেবল নিজেদের পশ্চাতদেশের বালই কর্তন করিয়া থাকি।
ওয়েবের পরে ওয়েব করিয়া সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের মালিক হইয়া বসিয়াছে বটে কিন্তু জনগণের বেশীরভাগের সেই ডিজিটাল দেখার সুযোগ নাই। গুটিকতেক যারা কম্পিউটার ব্যবহার করেন তাহারা সূর্যের আলোর সাহায্যেও চালাইতে পারিবেন - কিন্তু এই বৃহৎ জনগোষ্ঠীর প্রকৃতপক্ষে কম্পিউটার চালাইবার জন্য বিদ্যুতের প্রয়োজন নাই।
বিদ্যুত না থাকিলে খরচের বিপুল সাশ্রয় হইবে - নতুন বৈদ্যুতিক কাঠামো তৈরী করিতে হইবে না। খাম্বা লইয়া টানাটানি হইবে না। তাছাড়া সিস্টেম লসের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকাও গচ্চা যাইবে না।
আমাদের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কিনিতে হইবে না এবং এগুলার উপরে নির্ভরতা পরিহার করিয়া আমরা কর্মঠ ও বিদ্বান হইয়া উঠিবো। কারণ বিনোদনের জন্য তখন কেবল পুস্তকের উপরে নির্ভর করিতে হইবে।
বিনোদন ও বিলাসের জন্য আমাদের যে বিপুল অপচয় তা রোধ হইবে। অলিগলিতে ক্লাব, লাইব্রেরী, জিমনিসিয়াম ও খেলার মাঠ গড়িয়া উঠিবে। পাবলিক অযথা হিন্দি ছবি ও টিভি সংবাদ দেখিয়া মহামূল্যবান সময় নষ্ট করিবে না।
সবদিক বিবেচনা করিয়া দেশ হইতে কারেন্ট চিরতরে নির্মূল করাই বাঞ্ছনীয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই লক্ষ্যে কাজ করিতেছেন বলিয়া তাকে শুভেচ্ছা জানাই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।