"You may like a situation which is not good for you And You may dislike a situation which is good for you." (Al- Quran)
সারসংক্ষেপঃ
শাহবাগে তিনতলা বাড়ীর মালিকের মেয়ে বাঁধন। খুবই পড়–য়া। জীবনে সে কোনদিন সেকেন্ড হয়নি। গুণের দিক থেকে যেমন রূূপেও সে অতুলনীয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক ছেলেই তার সঙ্গে প্রেম করতে চেয়েছে কিন্তু সবাই জানে সে কাউকে পাত্তা দেয়না।
আসলে ব্যাপারটা সে রকম নয় । বাঁধন প্রেম করতে চায় কিন্তু কোন ছেলেকে তার পছন্দ হয় না। যদিও সে ব্যাপারটা কাউকে বুঝতে দেয়না। ভাসিটিতে অনেক ছেলেই খুব হ্যান্ডসাম কিন্তু কেন জানি তার ভালো লাগে না।
সে চায় সহজ সাধারণ একটি ছেলে যে ভাণ করবে না।
একেবারে মাটির মানুষ। কিন্তু এরকম ছেলে সে পাচ্ছে না। আরেকটা ব্যাপার হল বিষয় হিসেবে প্রেম তার সেকেন্ড চয়েস। তার প্রথম চয়েস হল পড়ালেখা। তার যখন মন খারাপ হয় তখন সে পড়তে বসে।
তার মন ভাল হয়ে যায়। তার শুধু জানতে ইচ্ছে করে অনেক কিছু জানতে ইচ্ছে করে।
বাঁধনের একটি অত্যন্ত প্রিয় খাবার হল হোটেলের পরটা। বাসায়ও তার মা পরটা বানান কিন্তু তার কাছে সে পরটা বিস্বাদ মনে হয়। সে প্রায়ই তাদের বাসার কাছের ভাই ভাই হোটেল থেকে পরোটা আনিয়ে খায় চায়ে ডুবিয়ে।
এই হোটেলেরই দুই ওয়েটার চঞ্চল আর মোশাররফ করিম (মেছিয়ার বললে তারা রাগ হয় কারণ তারা শিক্ষিত। )
চঞ্চল ইন্টার পাশ আর মোশাররফ মেট্রিক পাশ। ওদের হোটেলের ম্যানেজার হল হাসান ভাই। এই হোটেলে গার্মেন্টস্ কর্মী শেফালি নাস্তা খেতে আসে। চঞ্চল আর মোশাররফ করিম দুজনই ওর পানিপ্রার্থী।
কিন্তু বাঁধন যেদিন পরোটা কিনতে নিজেই এই হোটেলে আসে সেদিনই কাহিনী মোড় নেয় অন্যদিকে...
১.
হাসান ভাই - স্যার কেমন আছেন! বসেন বসেন...কী বাধনের জন্য পরোটা নেবেন? পরোটা তো নেবই! তবে তার আগে নিজে একটু বসে চা খাই... বাসায় চিনিছাড়া চা খেতে খেতে একেবারে অরুচি ধরে গেছে...
-এ্যাই মোশা চঞ্চল কীরে কই গেলি তোরা সব! স্যারেরে পরোটা আর চা দে
-তোমার এখানে বসে খেলে তো আর বাধনের মা দেখবে না! তুমিও আস দেখি হাসান তোমার সাথে একটু কথা বলি
-জ্বী স্যার । হাসান ভাই নেমে আসে...
-তো হাসান টাকা-পয়সা তো তোমার ভালই হইছে। বিয়া শাদী করবা না...
-স্যার শুধু টাকা পয়সা দিয়া মনে হয় বিয়া হয় না...চেষ্টা তো কম করলাম না... আমার রূপ দেইখা কেউ তো আর রাজী হয় না।
-কী কও মিয়া ঢাকা শহরের মেয়েরা টাকাওয়ালা রে বিয়া করে না? কবে থেকে...
-স্যার আমিও জানি অনেকে একপায়ে খাড়া কিন্তু ঐগুলা কোন জাতের মেয়ে না। আর ঐ লোভী মাইয়াগুলার বাপ মা তো আরোা খাচ্চর।
সেজন্যই স্যার ব্যাটে বলে হচ্ছে না...
-তুমি এককাজ কর তুমি গ্রামে যাও । গ্রামে তুমি ভাল মেয়ে পাবে। ভাল একটা মেয়ে দেখে বিয়ে কর। আরে ছেলে মেয়ে না হলে এত টাকা পয়সা খাবে কে?
-স্যার আপনে তো সবই জানেন। আমি নিজে এই হোেেটলর মেছিয়ার আছিলাম।
টাকা জমাইতে জমাইতে এই হোটেল কিনছি। যুদ্ধের পর মালিক চইলা যাওয়াতে পানির দরে এই হোটেল কিনতে পারছিলাম। আমি স্যার এমনেও কালো আছিলাম তয় সার আমার মনে হয় এই হোটেলের পিছনে খাটতে খাটেেত আমি আরো কালো হইয়া গেছি!
-হা হা হা হা তোমার পরিশ্রম তোমাকে এই জায়গায় এনেছে...
পরিশ্রমী মানুষ দেখলে আমার বুকটা ভরে যায়... আমি কলেজে পড়িয়ে এখন না হয় রিটায়ার্ড করেছি... বাড়ী করেছি ... কিন্তু একটা সময় আমি ঢাকা শহরে লজিং থেকে পড়াশোনা করেছি। তারপর একদিন লজিংটাও ছেড়ে দিতে হলো... এরপর ঢাকা মেড়িকেলের বারান্দায় অগুণিত রাত কাটিয়েছি.... কত কষ্ট কতো পরিশ্রম...যাই হোক অনেক কথা বলে ফেললাম... বাধনের পরোটা প্যাকেট করে দাও
২.
‘এই জমিলা ... জমিলা...’ বাঁধনের চিৎকার শুনে বাঁধনের মা জবাব দিলেন...
-জমিলা ছাদে গেছে। ওর অনেক সময় লাগবে।
মকবুল কে বলি পরোটা এনে দিক।
-মকবুল ভাই ঠান্ডা পরোটা নিয়ে আসে। তার চেয়ে আমিই যাই। হেঁটেও আসলাম। বসতে বসতে (টেবিলে) কোমর ব্যাথা হয়ে গেছে।
-ঠিক আছে যা। কী যে পাস হোটেলের পরোটায়! ওরা ময়লা হাত গায়ের ঘাম দিয়ে বানায় আর তাই তোর স্বাদ লাগে!
-লাগে মা লাগে! ওটাই স্বাদ লাগে।
বাধন নিচে নেমে যায়। গ্যারেজে মকবুল বাধন কে দেখামাত্রই...
-আপামনি কই যান?
-পরোটা আনতে
-আমাকে দেন। আমি আনি...
-আপনি পরোটা আনেন আর আমি শক্ত শক্ত ঠান্ডা পরোটা খাই... আপনি চোর ডাকাত পাহারা দেন।
গ্যারেজে আরেকদিন কিছু চুরি গেলে আব্বু আপনার চাকরী নট করে দেবে।
-আপামনি মকবুল মিয়াকে(সিদ্দিকুর রহমান) চোর একবার ফাঁকি দিতে পারে কিন্তু দুইবার পারবে না।
-দেখা যাবে...
বাধন রাস্তা দিয়ে হেঁটে ভাই ভাই হোটেলের দিকে যাচ্ছে... ভাই ভাই হোটেলে তখন ধুন্ধুমার অবস্থা...(চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।