যুক্তরাষ্ট্রে লবিং করছে তারা। বাংলাদেশে মানবাধিকার লংঘনের নামে তৎপর মৌলবাদীর । ওদের লক্ষ্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকানো ।
তারা ইতোমধ্যে নিউইয়র্কে সমাবেশ করেছে। একটি সাংবাদিক সম্মেলনও করেছে ওয়াশিংটনে।
একজন সাংবাদিকও আসেননি বাংলাদেশে মানবাধিকার লংঘন বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে। ২২ মার্চ সকাল ৯টায় এ সংবাদ সম্মেলনের ঢাক-ঢোল পিটানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত ন্যাশনাল প্রেসক্লাবের ১৩ তলায় লিসাগর কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল আমেরিকান মুসলিম এলায়েন্স (এএমএ), আমেরিকান মুসলিম ফর প্যালেস্টাইন (এএমপি), কাউন্সিল অন আমেরিকান ইসলামিত রিলেশন্স (কেয়ার), ইসলামিক সার্কেল অব নর্থ আমেরিকা (ইকনা), মুসলিম এলায়েন্স ইন নর্থ আমেরিকা (এমএনএ), এমএস ফ্রিডম, মুসলিম স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন, মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকা (মুনা) এবং ইউনাইটেড মুসলিম অব আমেরিকা (উমা)। বাংলাদেশে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড বন্ধ, বহুদলীয় গণতন্ত্রের নিশ্চয়তা, বিরোধী দলকে নির্যাতনের জন্যে পুলিশ, বিচার বিভাগ এবং প্রশাসনকে ব্যবহার থেকে বিরত হওয়া, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং বেআইনীভাবে গ্রেফতার করা সকল বন্দিকে মুক্তি দানের দাবি জানানোর কথা এ সংবাদ সম্মেলন থেকে।
নাগরিক অধিকার ও নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে কাজের জন্যে উপরোক্ত সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠিত ‘আমেরিকান মুসলিম টাস্ক ফোর্স’ (এএমটি) এর ব্যানারে কথিত ঐ সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন এএমটির চেয়ারম্যান ড. আগা সাঈদ।
সঞ্চালক ছিলেন এমএএস-ফ্রিডমের নির্বাহী পরিচালক মাহদী বে। বেসররকারী একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ওয়েবসাইট পত্রিকার একজন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক হিসেবে। এমনি অবস্থায় ঐ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে গত তিন মাসে মানবাধিকার লংঘনের ভয়াবহ চিত্র উপস্থাপনের পর ফ্লোর থেকে আপত্তি উত্থাপন করেন গ্রেটার ওয়াশিংটন আওয়ামী লীগের নেতা অমর ইসলাম এবং ওয়াশিংটন মেট্র আওয়ামী লীগের নেতা শেখ সেলিম। তারা উভয়ে জানতে চান, যে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে তা আদৌ সত্য নয়। এছাড়া ৩ মাসের চিত্র কেন উল্লেখ করা হচ্ছে, বিগত ৭ বছরের চিত্র উত্থাপনের পর তুলনামূলক আলোচনা হলে সহজ হতো সার্বিক পরিস্থিতি অবহিত হওয়া।
এ সময় ফ্লোর থেকে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের উপপ্রধান শেখ মোহাম্মদ বেলাল বলেন, স্টেট ডিপার্টমেন্টের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনেও বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতির কথা বলা হয়েছে। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে দীর্ঘ দিন পর স্টেট ডিপার্টমেন্টের রিপোর্টে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি ঘটার প্রসঙ্গ স্থান পেয়েছে। স্টেট ডিপার্টমেন্টের ঐ রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী ২০০৮ সালে ক্রস ফায়ারে নিহত হয় ৬৮ জন এবং ২০০৯ সাল অর্থাৎ গত বছর নিহত হয়েছে ৪৪ জন। ২০০৬ সালের তুলনায় গত বছর ক্রস ফায়ারে নিহত হওয়ার ঘটনা ৮০% কমেছে বলেও স্বীকার করা হয়েছে স্টেট ডিপার্টমেন্টের রিপোর্টে। জামাতে ইসলামীর আদর্শ এই প্রবাসে লালনকারী সংগঠন ‘মুসলিম ইম্মাহ অব নর্থ আমেরিকার’ সাবেক নেতা ড. আবুল কাশেমের উত্থাপিত তথ্যকে ফ্লোর থেকে উপরোক্ত ব্যক্তিরা চ্যালেঞ্জ করলে তিনি বলেন যে, মানবাধিকার লংঘনের বিস্তারিত তথ্য তিনি জেনে আসতে পারেননি।
এজন্যে তাকে আরো স্টাডি করতে হবে। এ কথা বলার পর অমর ইসলাম উচ্চস্বরে বলেন, সঠিক তথ্য না জেনে কেন এমন একটি ফোরামে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখা হচ্ছে? ১৯৭১ সালে মানবতার বিরদ্ধে অপরাধকারীদের বিচার ব্যাহত করার জন্যেই কি এ আয়োজন করা হয়েছে? ২০০১ সালের পর থেকে ক্রস ফায়ারে বহুলোকের প্রাণহানী ঘটেছে, এর আগে কেন আপনারা এমন সংবাদ সম্মেলন করেননি? এ ধরনের প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে পরিস্থিতি ক্রমে উত্তপ্ত হয় এবং তড়িঘড়ি করে সাংবাদিকহীন সংবাদ সম্মেলনটি সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশ দূতাবাসের উপপ্রধান শেখ মোহাম্মদ বেলাল ,উপরোক্ত পরিস্থিতির কথা স্বীকার করে বলেছেন, মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রদানের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ইমেজ বিনষ্টের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। তবে কোন সাংবাদিকই তাতে সাড়া দেননি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।