মিজান রহমান শ্রেষ্ঠ
করিম সাহেব দাঁতের ব্যাথায় চিৎকার চেচামেচি করলেন সাড়াটাদিন। সন্ধ্যাবেলা বড় ছেলে বাসায় এসে তার এই অবস্থা দেখে লোক পাঠিয়ে টেক্সিক্যাব আনালেন। করিম সাহেব বলল, আমি কোথাও যাবনা।
যাবনা বলেই আবারও চিৎকার চেচামেচি শুরু করে দিলেন।
ছেলে বলল, তোমার কোন কথা শুনব না চলো তোমাকে ডাক্তার দেখাতে হবে।
অবশেষে টেক্সি ক্যাবে করে তাকে দাঁতের ডাক্তারের চেম্বারে হাজির করা হলো। চেম্বারে অনেক সিরিয়াল পযন্ত দাঁতের ব্যাথা সহ্য করিয়া যখন করিম সাহেবর ভিতরে ভিতরে অসহ্য প্রকাশ পাইল তখনই করিম সাহেবের ডাক পরল।
ডাক্তার তার ব্যাথা যুক্ত দাঁতটি তুলে ফেলল। দুএকদিনের মধ্যই তার দাঁত ব্যাথা সেরে গেল।
কদিন বাদে আরেক যন্ত্রনা।
করিম সাহেবের চোখের ব্যাথা শুরু হলো। সেই একই কান্ড। তাকে আবার চক্ষু ডাক্তারের কাছে নিতে হল। এবারের ডাক্তারও তার একই কাজ করিলেন। চোখ হারিয়ে করিম সাহেব এর মন ভেঙ্গে গেল।
দুটো মাত্র চোখ তার একটা ফেলে দিতে হলো কদিন পড়ে যদি অন্য চোখেও ব্যাথা শুরু হয় আর ডাক্তার যদি তার সেই চোখটাও ফেলে দেয় তাহলে বাকী জীবনে সে কমন করে চলবে।
এভাবে কেঁদে কেটে তার দিন যাচ্ছিল। হঠাৎ একদিন চোখের যন্ত্রনা শুরু না হয়ে তার বুকের ব্যাথা শুরু হলো। বাড়ী শুদ্ধ হইচই শুরু হয়ে গেল। ঘরে এসিডিটির ঔষধ ছিল তা খাওয়ানো হলো।
ব্যাথা আর কমে না। বাসার কাছে ফার্মেসি থেকে ডাক্তার আনা হলো। সমস্যা শুরু হলো তখনই। ডাক্তার বললেন, এ ব্যাথা সারানোর সাধ্য আমার হবেনা আমি একটু ব্যাথা কমার ঔষধ দিচ্ছি কিছুটা ব্যাথা কমবে। উনার ব্যথাটা হচ্ছে হার্টে তাই পুরো মতো ভাল হতে করিম সাহেবকে হার্টের ডাক্তার দেখাতে হবে।
করিম সাহেব গোঙ্গাতে গোঙ্গাতে সব কথাই শুনলো। তার পর ঔষধটাও খেল। কিছুটা ব্যাথাও কমলো। করিম সাহেব বিছানা ছেড়ে উঠলো। তার পর আর কেউ জানে না করিম সাহেব কোথায় গেল।
শুধু করিম সাহেবের বিছানায় একটা চিঠি পড়ে রইল। তাতে লেখা,
আমার আদরের সন্তানেরা,
আমার জন্য তোমরা চিন্তা করনা। আমার হার্টের ব্যাথা শুরু হওয়ায় আমি ভেবে দেখলাম তোমরা আমাকে নিয়ে এখনই হার্টের ডাক্তারের কাছে যাবে। কারণ তোমরা আমাকে অনেক ভালবাসো। কিন্তু হার্টের ডাক্তারতো আর আমাকে ভালবাসেনা সে আমার হার্টটা চোখ্ ও দাঁতের ডাক্তারের মতো ফেলে দেবে।
একবার ভেবে দেখ, আমার হার্টটা ফেলে দিলে আমি কিভাবে বাঁচবো। তাই আমি তোমাদের থেকে অনেক দূরে চলে গেলাম।
ইতি
তোমাদের বাবা
আবদুল করিম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।