লেখিকাঃ সিফাত মেহজাবিন
দুপুরের দিকে ইউএসএ এর Oklahoma city তে ঘণ্টায় ৩২০ কিলোমিটার বেগে প্রায় এক কিলোমিটারের অধিক জায়গা নিয়ে একটি প্রচণ্ড শক্তিধর টর্নেডো আঘাত হানে। এর ফলে একটি সম্পূর্ণ neighbourhood আক্ষরিক অর্থে মাটির সাথে মিশে গেছে। বেশ কয়েকটি স্কুল আর একটি হসপিটাল এই ধ্বংসস্তূপের অন্তর্ভুক্ত। এখন পর্যন্ত ৯১ জন মৃত, যার মধ্যে ২১ জন শিশু; এছাড়াও বহু সংখ্যক আহত হয়েছে যাদের অনেকের অবস্থাই আশংকাজনক। এই মুহূর্তে উদ্ধারকর্মীরা একটি স্কুলের বাচ্চাদের উদ্ধারের চেষ্টা করছে যারা সম্ভবত সবাই তিন মিটার মাটির নিচে চাপা পড়ে আছে।
একটি সিনেমা হলকে মেইক শিফট মর্গ বানানো হয়েছে। যারা প্রানে বেঁচে গেছে তারা নিজেরাই বিশ্বাস করতে পারছে না কেমন করে তাদের জীবন বাঁচল?
জাপান ও ইন্দোনেশিয়ার ভয়াবহ সুনামি, হাইতি ও নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্ট চার্চের ভূমিকম্প এবং গতকালের এই টর্নেডো --- সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া এইসব প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলো যখন আঘাত হেনেছে; এক একটি জনপদ প্রায় বা সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। কুরআনে এই রকম অনেক জনপদ ও সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। এমনও বলা হয়েছে, 'যদি কুরআনে না উল্লেখ করা হতো তাহলে পরবর্তীরা জানতেই পারতো না এমনভাবে কোন সভ্যতা বিলীন হয়ে যেতে পারে; তারা ছিল সামর্থ্য ও সম্পদে তোমাদের চেয়েও শক্তিশালী'। সেই গুলো আমরা চোখে দেখিনি তাই আমাদের অনেকের কাছে এই সব সেকালের উপকথা বলে মনে হয়।
কিন্তু এই ইনফরমেশন ও মিডিয়ার যুগে উপরে উল্লেখিত প্রতিটি ঘটনা আমরা কমবেশী আমাদের নিজের চোখে দেখেছি ও দেখছি। কিন্তু তারপরও আমাদের মধ্যে কোন বিকার নাই; আমরা কিছুই শিখি না। কুরআনে যথার্থই বলা হয়েছে, এই সব ঘটনার মধ্যে যে নিদর্শন রয়েছে তা চিন্তাশীলদের জন্য চিন্তার খোরাক যোগাবে। এটা সত্যি যে আমরা সবাই 'চিন্তাশীল' নই!
কিছুদিন আগে ইটালির পম্পেই নগরীর সম্পর্কে একটি documentary তে দেখলাম এবং একটি archaeology র research paper এ পড়লাম। আমরা সবাই জানি ভিসুভিয়াস আগ্নেওগিরির অগ্নুৎপাতে এই শহরটি এক রাতের মধ্যে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
এই শহরের সকল অধিবাসী জীবিত সমাহিত হয় লাভার নিচে। কিন্তু যেটা আমরা অনেকেই জানি না যে, পম্পেই নগরীই হল ইউরোপের প্রথম শহর যেখানের দেয়ালে সচিত্র পর্ণগ্রাফি আঁকার প্রচলন হয়। সেখানকার অধিবাসীরা প্রকাশ্যে অশ্লীলতা করে বেড়াতো, সমকামিতা শিল্পের পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল আর ধনীদের মধ্যে দুর্নীতি ও নিষ্ঠুরতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল! আমি যখন আগে অর্থসহ রেগুলার কুরআন পড়তাম না, তখন এই সব প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর ঘটনায় অনেক বেশী দুঃখিত ও বিচলিত হতাম। এখনও যে হই না তা নয়, এখনও হই। তবে তার সাথে যোগ হয়েছে কৌতহল ও শঙ্কা।
আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে উপরে উল্লেখিত শহরগুলোর অধিবাসীরা সেই শহরে কি করতো? প্রাকৃতিক দুর্যোগের বেশে আল্লাহ্র গজব তাদের উপর কেন আপতিত হল? আর শঙ্কা জাগে আমাদের দেশের কথা ভেবে, কোন দিকে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা? নিশ্চিত ধ্বংসের দিকে কিসের আশায় ছুটে চলেছি?! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।