সোনালী মরুময় আরবের বুকে জেগে ওঠা মানবজাতির অন্যতম স্থাপত্যশৈলী কৃত্রিম দ্বীপ “পাম জুমিরাহ্” “Palm Jumeirah”। এই ৫.৫ কিলোমিটার দ্বীপটি তৈরী করা হয়েছে শুধুমাত্র বালু এবং পাথরে। ভূমিকম্প, ভয়াবহ ঝড় আর সমুদ্রের ঢেউয়ের মত প্রাকৃতিক ভয়াবহতার সম্ভাবতাকে নির্ণয় করে তৈরী করা “পাম জুমিরাহ্” সগৌরবে জানান দিচ্ছে মানবজাতির সাফল্যকে । প্রমাণিত হল আল্লাহর সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ “আশ্ রাফুল মাখলুকাত”।
পাম জুমিরাহ্ দ্বীপ
প্রকৌলীদের এখানে কাজ করতে হয়েছে প্রকৃতিকে নিয়ে, সময়কে নয়।
এটি এমনই একটি “মেগাস্থাপত্য” যা কোন প্রকৌলী তৈরী কথা চিন্তা করতে পারেনি।
আগষ্ট ২০০১ ইং দুবাই শুরূ করে মানব তৈরী সর্ব বৃহৎ কৃত্রিম দ্বীপ। এই স্থাপত্যটি অন্য আর সাধারণ স্থাপনার মত নয় বা সেভাবে তৈরী করা যাবে না । পৃথিবী অনান্য সকল স্থাপনাগুলো দাড়িয়ে আছে ভূমির উপরে, যার অধিকাংশই তৈরী হয়েছে কংক্রিট ও ষ্টিল দ্বারা. উপাদান সমূহও কৃত্রিমভাবে সংযোজিত (কাঁচ, কাঠের দরজা)। কিন্ত, কৃত্রিম দ্বীপটি তৈরী হয়েছে সমুদ্রের বুকে যার কারণে ব্যবহৃত হয়েছে শুধুমাত্র প্রাকৃতিক উপাদান বালু এবং পাথর দ্বারা।
এই প্রজেক্ট এর ম্যানেজার ছিলেন “রবার্ট বার্গার ”(Robert Berger)
মধ্য আরবের জুয়েল হিসেবে খ্যাত “দুবাই”, যাকে বলা হয় “ছোট্ট লন্ডন”, আরব বিশ্বের অতি সমৃদ্ধশালী স্থান হিসেবে বর্তমানে পরিচিত। কিন্তু “দুবাই” সব সময় এই রকম ছিল না। চলুন ফিরে দেখি ৫০বছর আগের “দুবাইকে”। যখন “দুবাই” ছিল সাধারণ মানের ব্যবসায়িক শহর। অথচ, মাত্র অর্ধশতকেই “দুবাইয়ের” আশ্চর্যজনক পরিবর্তন হয়, যা বর্তমানে বিখ্যাত স্বর্ণ, বাণিজ্য এবং প্রাকৃতিক তেলের জন্য ।
কিন্তু, এখানে মূলত “দুবাইয়ের” সমস্যার শুরূ। কারণ বলা হচ্ছে ২০৬০ এর মধ্যেই “দুবাইয়ের” প্রাকৃতিক তেলে ফুরিয়ে যাবে, যা তাদের অর্থনীতির ও বেঁচে থাকার সব চেয়ে বড় হুমকি । আর তাই তাদের প্রয়োজন আয়ের নতুন উৎস খুজেঁ বের করা। ক্রাউন শাহ্জাদা “শেখ মুহাম্মদ বিন রাশিদ আল মাক্ তুম" (Mohammed bin Rashid Al Maktoum) ২বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প হাতে নেন তার দেশ ও জনগণকে নতুন ভাবে বাচাঁবার জন্যে। তিনি তার দেশকে রুপান্তবিত করতে চাইছেন - “বিশ্বের ১নম্বর পর্যটন দেশ” হিসেবে।
যার কারণে তিনি ইতোমধ্যেই তৈরী করেছেন পৃথিবীর অন্যতম অতি উচ্চভিলাষী হোটেল, রেসকোর্স মাঠ এবং বুর্জ খলিফা (বর্তমান বিশ্বের সর্বচ্চো বিল্ডিং)। তিনি এখন জোড় দিচ্ছেন দেশের পর্যটন শিল্পের উপরে।
দুবাই হচ্ছে পরিপূর্ণ জায়গা যেখান বছরের সবসময়ই সূর্য থাকে, আছে সুদৃশ্য সী বীচ ও সাগর। প্রতি বছরে ৫ মিলিয়ন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমারে ১৫মিলিয়ন পর্যটক আসে। কিন্তু, ১৫মিলিয়ন পর্যটকের জন্য তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে সী বীচ এর জায়গা নেই, কারণ কোষ্ট লাইন মাত্র ৭২কিমি।
তখন চিন্তা করা হল কিভাবে সী বীচ বৃদ্ধি করা যায়। ক্রাউন শাহ্জাদা “শেখ মাহমুদ" প্ল্যান করলেন কৃত্রিম দ্বীপ বনাবেন, যার কাজ সম্পন্ন হবে ২০০৬ ইং এর মধ্যেই। কেমন দেখাবে যদি এই স্বর্গীয় দ্বীপটিকে “পাম” গাছের আকৃতিতে বানালে? যা বহন করবে তাদেরই সংস্কৃতির সাক্ষর।
চলবে . . . .
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।