আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চট্টগ্রামে এক ওসির ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক অর্থ

..............................

চট্টগ্রাম মহানগরের চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) একটি ব্যাংক হিসাবে গত পাঁচ মাসে প্রায় সাড়ে আট লাখ টাকা জমা হয়েছে। ১০টি আলাদা জমা স্লিপে ১০ দিনে এই অর্থ তাঁর হিসাবে জমা দেওয়া হয়। এ ছাড়া ওই ওসি প্রতি মাসে এসএ পরিবহনের মাধ্যমে কিছু টাকা ঢাকায় পাঠান বলে নিজেই স্বীকার করেন। পুলিশ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ওই ওসির মাসিক বেতন ১৫ হাজার টাকা। তিনি অবশ্য মাসে ২০ হাজার টাকা বেতন পান বলে দাবি করেন।

কোনো খরচ না করে বেতনের পুরো টাকা ব্যাংকে রাখলেও সাড়ে আট লাখ টাকা জমা হতে তাঁর অন্তত চার বছর সময় লাগার কথা। কিন্তু গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত ওসি হিসেবে তাঁর দায়িত্ব ছয় মাসও পূর্ণ হয়নি। এই ওসির নাম রওশন আরা বেগম। তিনি চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) চান্দগাঁও থানায় ওসি হিসেবে যোগ দেন গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর। এর আগে তিনি সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

তার আগে ছিলেন ঢাকায়। ঢাকায় থাকাকালে তিনি একটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখায় একটি সঞ্চয়ী হিসাব খোলেন। চট্টগ্রামে বদলি হয়ে আসার আগ পর্যন্ত তাঁর ওই ব্যাংক হিসাবে উল্লেখযোগ্য কোনো লেনদেন হয়নি। চট্টগ্রামে তাঁর কোনো বিত্তশালী নিকটাত্মীয় কিংবা ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বন্ধুবান্ধব নেই বলে ওসি নিজেই স্বীকার করেন। ওসি রওশন আরা ব্যাংকে অস্বাভাবিক লেনদেনের বিষয়টি প্রথমে স্বীকার করেননি।

সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান জানানোর পর তিনি অর্থের উত্স সম্পর্কে একেকবার একেক কথা বলেন। প্রথমে তিনি বলেন, ‘আমি পরিচিত লোকজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ব্যাংকে জমা রাখি। এ টাকা আমার মেয়ে ও তার স্বামীর জন্য লন্ডন পাঠাতে হয়। ’ রওশন আরা আবার বলেন, ‘আমার মেয়ে ব্যারিস্টারি পড়ে। তার জন্য প্রতি সেশনে (ছয় মাস পরপর) পাঁচ-ছয় লাখ টাকা করে পাঠাতে হয়।

’ আবার তিনি বলেন, ‘আমার ভাইদের অনেক টাকা, দুজন যুক্তরাষ্ট্রে ও একজন ফ্রান্সে থাকেন, একজন দেশে ব্যবসা করেন। তাঁরাই আমার মেয়ের খরচ জোগান। আমি এঁদের কিছু কিছু করে টাকা দিই। মাঝেমধ্যে চট্টগ্রাম থেকে এসএ পরিবহনে করে টাকা পাঠাই। ’ অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ওসি রওশন আরা বেগমের নামে একটি বেসরকারি ব্যাংকের ঢাকার ধানমন্ডি শাখায় সঞ্চয়ী হিসাব রয়েছে।

ধানমন্ডি শাখার ঠিকানা দেওয়া হয়েছে—বাড়ি নম্বর ২১, সড়ক নম্বর-৮, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা, ব্রাঞ্চ কোড-১০৬। ওই হিসাবে টাকা জমা হয় ওই ব্যাংকেরই চট্টগ্রামের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা শাখা থেকে। ব্যাংক হিসাবের লেনদেনপত্রে (স্টেটমেন্ট) দেখা যায়, সেপ্টেম্বর মাসে সঞ্চয়ী হিসাবে কোনো লেনদেন নেই। লেনদেনপত্রে দেখা যায়, পরের মাস অক্টোবরে রওশন আরার ওই ব্যাংক হিসাবে তিন দফায় (৮, ১৪ ও ২০ অক্টোবর) মোট এক লাখ ৮৫ হাজার টাকা জমা হয়। ১৭ নভেম্বর ৭২ হাজার ৫০০ টাকা, ১০ ডিসেম্বর দেড় লাখ টাকা এবং জানুয়ারিতে তিন দফায় (৬, ১১ ও ১৩ জানুয়ারি) দুই লাখ ৫৫ হাজার টাকা জমা হয়।

ওই ব্যাংক হিসাবে সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জমা হয় ৮০ হাজার টাকা। এর আগে ১৫ ফেব্রুয়ারি জমা হয় ৯৯ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে পাঁচ মাস শেষ হওয়ার আগে তাঁর ওই হিসাবে আট লাখ ৪৬ হাজার টাকা জমা হয়। এর মধ্যে গত ৪ ফেব্রুয়ারি রওশান আরার সইয়ে ওই হিসাব থেকে প্রথমে এক লাখ ১৫ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়। লেনদেন শেষে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ওই হিসাবে জমা ছিল প্রায় সাড়ে সাত লাখ টাকা।

জানা গেছে, স্থানীয় রাজনীতিক ও পুলিশের একটি চক্র কাপ্তাই-বান্দরবানসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে চোরাই পথে কাঠ পাচারে জড়িত ব্যবসায়ী, বৈধ কাঠের আড়তদার, করাতকল, বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল ও মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড, জুয়ার আসরসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে নিয়মিত মাসোহারা আদায় করছে। মাসোহারার অংশ পুলিশকেও দেওয়া হয়। মাসোহারার অর্থের অংশ ওই ব্যাংক হিসাবে জমা হচ্ছে কি না, এ বিষয়ে ওসি বলেন, ‘আমার ব্যাংক হিসাবে রাখা অর্থ ঘুষের নয়, ঋণের টাকা। এই অর্থ আমি নিজেই ব্যাংক হিসাবে জমা রেখেছি। আমার মেয়ে আর মেয়ের জামাই দেশে ফিরলে তারাই সব ঋণ শোধ করবে।

’ প্রসঙ্গত, দুর্নীতি-অনিয়মসহ নানা অভিযোগে ইতিমধ্যে চান্দগাঁও থানার মুন্সি হিসেবে পরিচিত কনস্টেবল আবুল খায়েরকে প্রত্যাহার (ক্লোজ) করা হয়েছে। একই অভিযোগে এসআই জাহাঙ্গীরকে চান্দগাঁও থানা থেকে পাঁচলাইশ থানায় বদলি করা হয়েছে। এ দুই জন ওসি রওশন আরার নাম করে লোকজনের কাছ থেকে অবৈধ অর্থ আদায় করতেন বলে অভিযোগ আছে। মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) বনজ কুমার মজুমদার বলেন, অবৈধভাবে অর্থ আদায়সহ নানা অভিযোগে কনস্টেবল আবুল খায়েরকে কমিশনার এক মাস আগে প্রত্যাহার করেন। এসআই জাহাঙ্গীরকে লোকজনের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে চান্দগাঁও থানা থেকে পাঁচলাইশ থানায় বদলি করা হয়।

তিনি বলেন, ‘চান্দগাঁও থানার ওসির দুর্নীতির কোনো বিষয় আমার জানা নেই। Prothom alo report this, no one had the guts to say the truth. They could have mentioned this is nothing conparing to the real senerio. 99% of our police forces are corrupted. Did any one heard about any police officer who's children can't go abroad or private university because he/she don't have money. It may be possible 20/30 years ago but now........................you know what I am talking about.

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.