আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নেপালে পারবে কী বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক ফুটবলে ব্যর্থতা বা ভরাডুবি নতুন কিছু নয়। সাফল্য ভাণ্ডারে বাংলাদেশ এখনো বড় কিছু সঞ্চয় করতে পারেনি। এসএ গেমস ও সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ট্রফি জেতাটাই সান্ব্তনা হয়ে আছে। এবার কিন্তু ক্রীড়ামোদিরা চেয়ে থাকবে নেপালের দিকে। আগে যেনতেন প্রস্তুতি হলেও এবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন সাধ্যমত সবকিছুই করেছে।

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে ফুটবলাররা ইতোমধ্যে কাঠমান্ডুতে পৌছে গেছেন। নেপাল এমন এক জায়গা, যেখানে বাংলাদেশের ফুটবলে অনেক সুখ-দুখের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। ১৯৮৪ সালে প্রথম সাফগেমসে লিগ পর্বে ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে নেপাল দাঁড়াতে না পারলেও ফাইনালে তারা প্রতিশোধ নিয়ে স্বর্ণ জিতে নিয়েছিল। সেই ব্যর্থতা এখনো ফুটবলপ্রেমীরা ভুলতে পারেননি। আবার এই নেপালের মাটিতেই বাংলাদেশ সাফ গেমসে প্রথম স্বর্ণ জেতার কৃতিত্ব পেয়েছিল।

১৯৯৯ সালে অনুষ্ঠিত এ আসরে ফাইনালে নেপালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। ব্যর্থতা ও সাফল্যের দুই স্মৃতিতে নেপাল নামটি ফুটবলারদের মাঝে জেগে রয়েছে।

কথা হচ্ছে এবার কি করবে বাংলাদেশ। নেপালে এর আগেও ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েছিল, শিরোপা ছাড়াই দেশে ফিরতে হয়েছিল। আগে যাই ঘটুক না কেন, ফুটবলপ্রেমীদের এবার একটাই প্রত্যাশা নেপাল থেকেই এমিলিরা ফুটবলে হারানো গৌরব উদ্ধার করবে।

সাফচ্যাম্পিয়নশিপ ইতিহাসে বাংলাদেশ একবারই শিরোপা জিতেছিল। ২০০৩ সালে ঢাকায় ফাইনালে মালদ্বীপকে হারিয়ে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়। এরপর শিরোপা যেন সোনার হরিণ হয়ে দেখা দিয়েছে। গেলবারতো দেশের ফুটবলাররা আসরে দাঁড়াতেই পারেননি। গ্রুপ পর্ব খেলেই দেশে ফেরেন।

সেই লজ্জা ঢাকতে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন সাফল্যের লক্ষ্যে ফুটবলারদের সবরকমের সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন। উন্নতমানের প্রশিক্ষক এনে দুই মাসের বেশি সময় ধরে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। সে সঙ্গে ফিজিও এনে ফিটনেস পরীক্ষা এমনকি গোলরক্ষক প্রশিক্ষকও আনা হয়েছে। পর্যাপ্ত অনুশীলন ম্যাচও খেলানো হয়েছে। খেলোয়াড়রা এক বাক্যে স্বীকার করছেন এমন প্রস্তুতি তারা তাদের ক্যারিয়ারে করেননি।

একটা ব্যাপার না বললেই নয়, আগে হয়তো দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ করানো হয়নি। কিন্তু সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে এমন কোনো শক্তিশালী দল খেলে না যে মাত্র একবার শিরোপা জিতবে। অন্যরা কিন্তু বলে থাকে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারত হচ্ছে আর্জেন্টিনা আর বাংলাদেশ ব্রাজিল। অথচ শিরোপা পরিসংখ্যানে কোথায় ভারত আর কোথায় বাংলাদেশ। যাক অতীত অতীতই।

ফুটবলপ্রেমীরা এখন সাফে সাফল্য পেয়ে জনপ্রিয় এ খেলাকে এগিয়ে নিতে চায়। কিন্তু তাদের এ প্রত্যাশা মামুনুল বা এমিলিরা পূরণ করতে পারবেন কি? ঢাকা ছাড়ার আগে ক্রুইফ ও মামুনুল অভিন্ন সুরে বলে গেছেন নেপালে তাদের লক্ষ্য থাকবে সব ম্যাচ জেতা। অর্থাৎ টার্গেট হিসেবে তারা শিরোপার কথা বলে ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। কিন্তু সব ম্যাচ জেতা মানেই তো চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাওয়া। কেউ কেউ আবার শঙ্কায় আছেন।

কেননা গ্রুপ পর্যায়ে বাংলাদেশকে খেলতে হবে ভারত, নেপাল ও পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে। এ ক্ষেত্রে সেমিফাইনালে কে যে যাবে বলা মুশকিল। কিন্তু বাংলাদেশের যে সামর্থ্য রয়েছে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই সেমিতে খেলা। তবে ২৮ আগস্ট নেপালের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটাই হবে বাঁচামরার লড়াই। এখানে যারা জিতবে তাদের শেষ চারে থাকা অনেকটা পরিষ্কার হয়ে যাবে।

কি হবে সেদিন? বাংলাদেশ জিতবে না হারবে। চ্যালেঞ্জ কাপে স্বল্প প্রস্তুতিতে খেলতে গেলেও নেপালকে ঠিকই পরাজিত করেছিল। সাফে এসেছে দারুণ প্রস্তুতি নিয়ে। নেপালিরা তাই বাংলাদেশকে নিয়ে ভয়ে রয়েছে। কিন্তু এমিলিরা কি পারবেন প্রথম খেলাতেই ভালো কিছুর আভাস দিতে।

কিযে ঘটবে সে অপেক্ষায় ফুটবলপ্রেমীরা চেয়ে থাকবে নেপালের দিকে। আগে যাই হোক না কেন সাফকে ঘিরে পুরো বাংলাদেশের প্রত্যাশা অনেক। দেখা যাক নেপালে কি ঘটে?

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।