জীবনে প্রাণ আসুক। প্রতিটা মুহূর্তকে আমরা সুন্দর করে তুলি।
ছোটবেলায় একটা গল্প শুনেছি। মানুষ যখন মিথ্যা বলে তখন তার কথাগুলো পিঁপড়া হয়ে যায়। আমাদের দেশের লাল বা কালো নিরীহ পিঁপড়া নয়, বিদেশি বিষাক্ত পিঁপড়া।
এক মিথ্যায় একটা পিঁপড়া তৈরি হয়। এভাবে পিঁপড়াগুলো একসময় হাজার হাজার পিঁপড়া হয়ে ওই মিথ্যাবাদীকে কামড়ায়। সমাজে এ রকম অনেক মিথ্যাবাদী বা পিঁপড়া-মানুষ আছে। মানুষ তাদেরকে পছন্দ করে না, তাদের নিয়ে হাসাহাসি করে। পিঁপড়ায় কামড়ানো অনেক মিথ্যাবাদীকে আমরা দেখেছি।
মিথ্যাবাদীর পতনও দেখেছি।
আচ্ছা, যারা মিথ্যা কথা বলে তাদের কি আমরা পছন্দ করি? করি না। আর যারা মানুষ খুন করে? তাদের কথা শুনলে শিউরে উঠি। তাদের ঘৃণা করি। ক্ষমতা থাকলে প্রতিরোধ করি, আইনের হাতে তুলে দিই।
পৃথিবীর সব মনীষী মানুষকে মিথ্যা থেকে দূরে থাকতে বলেছেন। পবিত্র কোরান থেকে শুরু করে সব ধর্মে মিথ্যাবাদী সম্পর্কে বলা হয়েছে। আমাদের আজকের শপথ হোক নিজেকে মিথ্যা থেকে দূরে রাখার শপথ। আমরা মিথ্যাবাদীকে দূরে রাখব, একঘরে করে রাখব। তাদের ব্যাপারে আরো সচেতন হব।
আর যারা মিথ্যা প্রচারণা চালায়, তাদের কী হবে? এক লেখায় আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেছেন, তারা গোয়েবলসের নাতি। হিটলারের গোয়েবলসের কথা নিশ্চয় আপনাদের মনে আছে! গোয়েবলসকে আমরা যেভাবে ঘৃণা করি, ঠিক সেভাবে দেশবিরোধীদের ঘৃণা করতে হবে। তাদের সম্পর্কে মানুষকে সজাগ করে দিতে হবে।
ওইদিন ছোট্ট এক সোনামণি গণজাগরণ মঞ্চে এসেছে মানুষের প্রতিবাদ দেখতে। মানুষের প্রতিবাদের মধ্যে সৌন্দর্য আছে।
তা দেখে সে মুগ্ধ। তার বাবাকে জিজ্ঞেস করল, বাবা, রাজাকার কোথায়? বাবা সন্তানকে যা বলেছে, আমি শুনেছি। বাবা বলে, রাজাকার তো সবখানে আছে। কারা রাজাকার জান? যারা নানাভাবে দেশ ও জাতির ক্ষতি করে, দেশবিরোধী কাজ করে তারাই তো রাজাকার। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে রাজাকার ছিল।
এখনো আছে।
সোনামণি জাতীয় পতাকা দেখে, স্লোগান শোনে। আমি তার চেহারায় সুন্দর এক দেশ দেখি। সেই দেশের তরুণরা বলে, আমরা দেশবিরোধী মানুষ চাই না। একেকজন খাঁটি বাঙালি চাই।
যার চেতনায় লাঙলের ফলার মতো ধার থাকবে। মনে পড়ে কৃষক-শ্রমিকের কথা। ক্রান্তিকালে তারাই এগিয়ে আসে। প্রহরীর মতো এসে আমাদের ভেজাল মানসিকতার ওপর লাঙল চালিয়ে দেয়। মন-জমির মাটি উল্টে পাল্টে নতুন করে দেয়।
আমাদের রাষ্ট্র, সমাজ সত্যের ওপর দাঁড়িয়ে, সংগ্রামের ওপর দাঁড়িয়ে। যারা এই সত্যকে মিথ্যা বানাতে চায়, তাদের সম্পর্কে সতর্ক হতে হবে। কোনো প্রচারণায় অন্ধ হলে চলবে না। তাহলে প্রলয় আসবে। সত্য দিয়ে, সৌন্দর্য দিয়ে আর সবার উপরে দেশপ্রেম দিয়ে মিথ্যাকে মুছতে হবে।
দেশ-চেতনা ও জাতীয় সংহতি রক্ষা করতে হবে। সত্যের চেয়ে সুন্দর ও শিল্পময় আর কিছু নাই। মা-মাটির চেয়ে বড় সত্য আর কী আছে?
(২০ ফেব্র“য়ারি দৈনিক আজাদী পত্রিকায় প্রকাশিত)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।