এসো, গল্প শোনাই।
আইজকা লেখালেখির দিন। দুখানা ব্লগ(ছাত্র নেতার ছাত্রজীবন-৩ , শানে নূযুল: বিফলে মূল্য ফেরত!!! ) লিখা ৩য়টা হাত দিলাম।
আমার বন্ধু আরেক খানা ব্লগ লিখার পরামর্শ দিলো। আব্দুলও কয়েকদিন আগে আইসা কইলো, আমি নাকি অর থ্রেট খাইয়া সিরিজ(আমাদের আব্দুল ,আমাদের আব্দুল-২ ,আমাদের আব্দুল-৩(পরীক্ষার হলে) ) লিখায় ইস্তফা দিছি।
ছোটো বেলায় হুজুরে ধর্মশিক্ষার সময় জ্ঞান দিছিলো, মানুষের রিপু নাকি পাচ খানা। কাম, ক্রোধ, লোভ....যাই হোক বাকি ভুইলা গেছি। জন্মসূত্রে আমিও একখানা রিপু পুরো মাত্রায় পাইছি আমার জনকের কাছ থাইকা। উহার নাম ক্রোধ।
আমার জনককে ডরায় না এহেন লোক আমাদের পরিবারে নাই।
আমার চাচার চুল দাড়ি পাইকা সাদা হইয়া গেছে, অথচ বাপের সামনে দাড়াইলে এখনো ঢোক গিলেন। চাচা বলেন, ইহা ভয় না শ্রদ্ধা।
বড় খালা বিবাহের পরেও জনকের হাতে থাপ্পর খাইছেন। দু'মামাও লাথ্থি পর্যন্ত খেয়েছেন, অবশ্য সংগত কারণেই। মামার বয়স চল্লিশের উপরে।
গলা খাকারি দেয়ার অভ্যাস আছে। বাসায় বেড়াতে এলে আমার জনকের ভয়ে বাথরুমে গিয়া গলা খাকারি দেন।
আমার ছোট খালা-খালুকে দেখলাম আমাদের বাসায় ইংরেজি পত্রিকা নিয়া মনোযোগ সহকারে পড়তেছে। আর তাদের বা্চ্চা গুলাও সাধারন জ্ঞানের বই নিয়া বসছে। আমি তো টাস্কি।
ঢাকায় বেরাতে আইসা গুস্ঠিসুদ্ধা পড়তে বসল? মার কাছে শুনলাম, আমার জনক পিচ্চিগুলারে বাপ মা সুদ্ধা সবাইরে পড়তে বসাইছে। কারণ গল্পগুজব করা জনকের কাছে ওয়েস্ট অব টাইম। এর থাইকা পেপার পত্রিকা পড়াও নাকি লাভজনক।
আমার দাদীর কাছে শুনেছি, জন্মের পর আমার জনক নাকি কোনো কারণে চেইতা গিয়া কান্দলে ধনুকের মত বাকা হইয়া যাইতেন, নিশ্বাস বন্ধ করে নীল বর্ণ ধারন করতেন।
জনকের বয়স যখন সাত কি আট, উনার খালার বাড়িতে গিয়া কাহিনী ঘটাইয়া আসলেন।
জনকের শিশু খালাতো বোন বাড়ির দরজায় কোনো এক কারণে ঘ্যাণর ঘ্যাণর করে কাদতে ছিলো। আমার জনক বিরক্ত হয়ে পিচ্চিকে ঠেং ধরে বাইরে ঢিল মাইরা বাইরে ফেলায় দিছিলেন। যাই হোক প্রানে বাচছে, খড়ের গাদার উপরে গিয়া পড়ছিলো।
জনক যখন ভার্সিটির ছাত্র, তখন আমার জনক নাকি কিপ্টা দাদার সাথে পকেট মানির পরিমান নিয়া রফাদফা করতে না পাইরা ঢিল মাইরা পয়সার বাক্স মাঝ পুকুরের পানিতে ছুইড়া ফেলায় দিছিলেন। অবশ্য দাদাও নাকি হাল ছাড়েন নাই।
পরে পানিতে জাল ফেলায় ফেলায় অর্ধেক পয়সা উদ্ধার করছেন।
জনকের উপরও জনক আছে। বাঘের উপরে টাগ। জনক ভার্সিটির গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে বাড়িতে আসলেন। আমার দাদা বললেন, বইসা থাইকা কাম নাই, গোয়ালঘর থাইকা গরু নিয়া হাল চড়া গিয়া।
চেতাচেতি কইরা আমার জনক গরু নিয়া বাইর হয়ে গেলেন। হাতে গরু চড়াবার লাঠি। গরমের দিন। গরু রাস্তা ছাইরা খালি ডোবার দিকে যায়। কথা শুনেনা।
জনকের যত মনের ক্ষোভ নিরীহ গরুর উপর গিয়া পড়ল। লাঠি দিয়া জম্মের এক বাড়ি দিলেন। গরু মেরুদন্ড ভাইঙ্গা অক্ক পাইলো।
এইটাই শেষ না। শেষ কাহিনী ঘটাইলেন নিজে বি্য়াতে।
বিয়ার সময় স্টেজে বইসা আছে আমার জনক। আর সামনে আমার দাদাকে আমার জনকের হবু শ্বাশুরীগন রং আর পাতিলের তলার কালি মুখে মাখাইতে ছিলো তামাশা করার জন্য। দাদার আপত্তি ছিলনা। বেয়ইনদের তামাশায় হয়ত মজায় পাইতে ছিলেন। কিন্তু আমার জনকের সহ্য হইলো না।
উইঠা গিয়া ডেকোরেটরের চেয়ার দিয়া যারে সামনে পাইছে তারেই ধইরাই মাইর।
পাঠকেরা আমাকে বা আমার জনকের সম্পর্কে ভুল ধারনা যেনো না নেন, সে জন্য দুটি কথা বলে শেষ করব। আমার জনককে সবাই শুধু ভয়ই করে না , প্রচন্ড শ্রদ্ধাও করে। কারণ আমার জনক বা জনকের জনক দুজনেই সারা জীবন নীতি নিয়ে সৎ জীবন যাপন করছেন। অন্যায়ের সাথে কখনো আপোষ করেন নি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।