আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাত্র দুজন মেয়ে অচেতন হয়েছে



ব্লগে আমি নতুন। এটা আমার প্রথম ব্লগ লেখা। গত কয়েক দিন যাবৎ ভাবিছ একটা বিষয় নিয়ে লিখব। কিন্তু শুরু করতে পারছিলামনা। অবেশেষে দৈনিক প্রথম আলোর সহেযোগীতা নতে হল।

পত্রিকাটি তারিখ: ০৮-০২-২০১০ তারিখে লিখেছে: আনন্দ মোহন কলেজের ঘটনায় আট দিনেও তদন্ত শুরু হয়নি বহিরাগত সন্ত্রাসীরা জড়িত ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজের শতবর্ষপূর্তি উত্সব অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা ও মেয়েদের লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের ছত্রচ্ছায়ায় কিছু বহিরাগত সন্ত্রাসী। এসব চিহ্নিত সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে ছিনতাই ও অস্ত্র মামলা আছে। গত ৩০ জানুয়ারির ওই ঘটনার সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে ফাঁকা গুলি করেন এক সাংসদ। অনুষ্ঠানে ধারণ করা একটি ভিডিওচিত্র থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। ঘটনার আট দিন পার হলেও এ ব্যাপারে কোনো তদন্তই শুরু হয়নি।

ময়মনসিংহের স্থানীয় লোকজন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ময়মনসিংহে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাংসদদের মধ্যে দলীয় কোন্দল রয়েছে। এ ছাড়া এ অনুষ্ঠান ঘিরে সাবেক ছাত্রনেতারা নিজেদের প্রভাব ও আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করেন। এতে করে কোন্দল আরও বেড়ে যায়। এর জের ধরেই বিশৃঙ্খলা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে আনন্দ মোহন কলেজের অধ্যক্ষ মো. জহুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা কেউ কলেজের ছাত্র নয়।

এরা সবাই সন্ত্রাসী। মোবাইল ফোনসেট, টাকা-পয়সা, ব্যাগ ও অলংকার ছিনতাই করাই তাদের উদ্দেশ্য ছিল। তিনি বলেন, ‘হট্টগোলের সুযোগে কিছু মেয়ে লাঞ্ছিত হয়েছে বলে শুনেছি। ’ এ ঘটনার সময় তিনি ময়মনসিংহের বাইরে ছিলেন বলে জানান। গত ৩০ জানুয়ারি সন্ধ্যার পর আনন্দ মোহন কলেজের শতবর্ষপূর্তি উত্সব চলাকালে একদল যুবক মেয়েদের লাঞ্ছিত করে।

তারা মেয়েদের টানাহেঁচড়া করে ও শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। এতে বেশ কয়েকজন মেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। শতবর্ষপূর্তি উত্সব উদ্যাপন কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নেত্রকোনা-১ আসনের সাংসদ এবং এই কলেজের সাবেক ভিপি মোশতাক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই সময় অবস্থা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে আমি মাইকে ভিডিও ধারণ ও ছবি তোলার ঘোষণা দিয়েও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের থামাতে পারছিলাম না। একপর্যায়ে মঞ্চের নিচে নেমে রিভলবার থেকে একটি ফাঁকা গুলি ছুড়ি। পরে মানবদেয়াল তৈরি করে মেয়েদের হোস্টেলে নিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখি।

’ জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। কেউ অভিযোগ না করলে আমাদের কিছু করার নেই। ’ এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক এ এস এম শাহজাহান প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনা ঘটলে অভিযোগকারী না পেলেও পুলিশ নিজের মতো করে ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কারণে হয়তো পুলিশ দেখেশুনে ব্যবস্থা নিতে চাইছে। আনন্দ মোহন কলেজ শিক্ষক পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রণে অনুষ্ঠান হয়নি, হয়েছে অনেকাংশে রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ন্ত্রণে।

অতিরিক্ত দর্শকসমাগম ঘটায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এ ঘটনার সময় দুজন সাংসদ মঞ্চে উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছেন। আনন্দ মোহন কলেজের ছাত্রসহ আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই ঘটনার সময় ধারণ করা ভিডিও ও স্থিরচিত্র এখন শহরে মানুষের হাতে হাতে ঘুরছে। তবে প্রকাশ্যে এ নিয়ে কেউ কথা বলতে চইছে না। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সংগ্রহ করা ভিডিওচিত্রে দেখা যাচ্ছে, প্যান্ডেলের ভেতরে হইচই শুরুর পরপরই মাইকে ঘোষণা করা হচ্ছে, হট্টগোল না থামালে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে।

এর পরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে যারা হট্টগোল করছে, তাদের ভিডিও ধারণ করা হচ্ছে বলেও মাইকে বারবার ঘোষণা করা হয়। এ সময় মেয়েদের চিত্কার শোনা যায়। একপর্যায়ে বিদ্যুত্ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। সে কথাও মঞ্চ থেকে মাইকে জানিয়ে দিয়ে সবাইকে সতর্ক করা হয়। ভিডিওচিত্রে চেয়ার ছুড়ে মারার একপর্যায়ে আলো নিভে যাওয়ার দৃশ্য দেখা যায়।

শোনা যায় মেয়েদের ভয়ার্ত আর্তনাদ। লাঞ্ছনার শিকার অনেক মেয়ে প্রথম আলোর কাছে ঘটনার বীভত্স বিবরণ দিয়েছে। অনুষ্ঠানের স্বেচ্ছাসেবীরাও একই রকম তথ্য দিয়েছেন। কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি শফিকুর রহমান ওরফে মুকুল সরকার জানান, কলেজের পাশে গোলাপজান রোডের আরমান ওরফে সুন্দরী আরমান গ্রুপের সদস্য হামিদ উদ্দিন রোডের অভি, রনি, অপু ওরফে কালা অপুর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এরা কেউ ছাত্র নয়।

এরা সব সময় ক্ষমতাসীন দলের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে এলাকায় ছিনতাই করে। এরা ছাত্রলীগের বদনাম করছে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে সাংসদ মোশতাক আহমেদ একটি ফাঁকা গুলি ছোড়েন। তাঁর সঙ্গে কথা বলার সময় কলেজের দুজন শিক্ষক ও ছাত্র সংসদের অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাঁর সঙ্গী আহত মীর মোহাম্মদ মুখে আঘাত পাওয়ার চিহ্ন দেখান।

স্থানীয় লোকজন জানায়, হট্টগোলকারীরা সবাই সরকারি দলের কর্মী। এদের মধ্যে আনন্দ মোহন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও সন্ত্রাসী মশিউর রহমান ওরফে পা কাটা অপু সাংসদ মোশতাকের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। অপু অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তারের পর সম্প্রতি জামিনে বের হয়েছে। প্রতিপক্ষের হামলায় বেশ কয়েক বছর আগে তার একটি পা খোয়া যায়। কলেজ রোড এলাকার আরেক সন্ত্রাসী গ্রুপের প্রধান রাসেল মুক্তাগাছার সাংসদ কে এম খালিদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।

তা ছাড়া কলেজের বর্তমান ভিপি শফিকুর রহমান ময়মনসিংহ সদরের সাংসদের ছেলের আশীর্বাদপুষ্ট বলে শোনা যায়। তবে বর্তমান শিক্ষার্থীদের কাছে ভালো ছেলে হিসেবে তাঁর পরিচিতি রয়েছে। এ ছাড়া কলেজ এলাকার সন্ত্রাসী সুন্দরী আরমান ও মাসুম গ্রুপ যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, তাদের ছত্রচ্ছায়ায় এলাকায় ছিনতাইসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বেড়ায়। আরমান এখন কারাবন্দী। এরা নিজেদের কোন্দল ও বড় বাজেটের এই অনুষ্ঠানের টাকা-পয়সা ভাগাভাগির কারণে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

হট্টগোলের পরের দিন শফিকুর রহমান একই মঞ্চে আরেকটি অনির্ধারিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেন সন্ত্রাসী অপুর সহযোগিতা নিয়ে। এই অনুষ্ঠান শেষে সুন্দরী আরমান গ্রুপ হামলা চালালে রাসেল গ্রুপের রাসেল ও তাঁর ভাই মাহফুজ আহত হন। রাসেল বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। এ ঘটনার পর প্রতিপক্ষের হামলায় পা কাটা অপুসহ তার চার সঙ্গী গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়ে বর্তমানে হাসপাতালে রয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

শতবর্ষপূর্তি উত্সব উদ্যাপন কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ময়মনসিংহ-৫ মুক্তাগাছা আসনের সাংসদ, কলেজের সাবেক ছাত্রনেতা কে এম খালিদ জানান, কোনো কোন্দলের কারণে এ ঘটনা ঘটেনি। কিছু বখাটে এর সঙ্গে জড়িত। তবে ঘটনার ঠিক আগমুহূর্তে তিনি মঞ্চ থেকে নেমে যান। এ ঘটনায় অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচার হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। রাসেলকে মদদ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, কলেজের ঘটনাটি রাজনৈতিক নয়।

সাংসদ মোশতাক জানান, কলেজে ছাত্রলীগের একাধিক গ্রুপ রয়েছে। অনুষ্ঠান ঘিরে রাজনৈতিক দল ও ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ গ্রুপিং-আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটতে পারে। এ জাতীয় ঘটনা যেই ঘটাক, তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তবে তিনি এ ঘটনার সঙ্গে পা কাটা অপু জড়িত নয় বলে দাবি করেন। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, সন্ত্রাসী আরমান অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছে।

তার দলের ছেলেরা এখন পলাতক। এরা ছিনতাইসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত। তা ছাড়া পা কাটা অপু ও রাসেলের গ্রুপও সক্রিয় রয়েছে। তবে কলেজ রোড ও আশপাশের এলাকার পার্থ, রুবেল, সুজন, অভি, রনি, কালা অপু, কালা আরমানসহ বিভিন্ন গ্রুপের সদস্যরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। এরা কলেজ রোড ও আশপাশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বেড়ায়।

অধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম জানান, র্যাব-পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে দেখা করে অনুষ্ঠানের নিরাপত্তার বিষয়ে চিঠি দেওয়ার পরও যথোপযুক্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘আমরা কলেজের শিক্ষক ও দুজন সাংসদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব। প্রয়োজনে তদন্ত কমিটি গঠন করব। ’ শতবর্ষপূর্তি উত্সব উদ্যাপন কমিটির সদস্য সচিব সাবেক ছাত্রনেতা কাজী আজাদ জাহান অবশ্য এ নিয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, যেভাবে ঘটনার ব্যাপকতা প্রকাশ করা হয়েছে, আসলে ঘটনা এত বড় নয়।

এ ঘটনায় মাত্র দুজন মেয়ে অচেতন হয়েছে। আর কিছু মেয়ে হুড়োহুড়ির শিকার হয়ে লাঞ্ছিত হয়েছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্র সূত্র জানায়, এ ঘটনার তদন্তে তাদের দুই সদস্যের একটি দল ময়মনসিংহ গেছে। .............. শতবর্ষপূর্তি উত্সব উদ্যাপন কমিটির সদস্য সচিব সাবেক ছাত্রনেতা কাজী আজাদ জাহান আসলে ঘটনা এত বড় নয়। এ ঘটনায় মাত্র দুজন মেয়ে অচেতন হয়েছে।

দুজন ছাত্রী অজ্ঞান হওয়াটাকে জাহান সাহেব খুব স্বাভাবিক ভাবে দেখছেন। জানিনা কতটুকু নির্যাতনের সম্মুখীন হলে একটা মেয়ে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। তবে এটা ১০০% সত্য আজাদ সাহেবের জননী একজন মাত্র নারী। আনন্দ মোহন কলেজের অধ্যক্ষ মো. জহুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘হট্টগোলের সুযোগে কিছু মেয়ে লাঞ্ছিত হয়েছে বলে শুনেছি। অধ্যক্ষ সাহেবের “কিছু” কথাটার বাস্তব অবস্থা হল শতাধিক।

ছাত্রলীগ বখাটেদের নির্যাতনের শীকার এই শতাধিক ছাত্রীর একজনের পরিবারও কি লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত নেই.? তাহলে অর্থ কি দাড়ায়ৃৃৃৃৃৃ.? তাহলেকি বখাটেরা তাদের বোনদের ইজ্জত হরন করেছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.