আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ন্যাড়া কখন বারবার বেল তলায় যায় ঃ সমূদ্রাঞ্চলের পর নতুন করে স্থল ভাগে সরকারের গ্যাস ব্লক ইজারার নতুন উদ্যোগ।



দেশের চলমান গ্যাস সংকট কে পুজি করে অনেকটা নিরবেই সরকার আবার স্থল ভাগের নতুন আঙ্গিকে নতুন করে আন্তজাতিক তেল/ গ্যাস কেম্পানির সাথে উৎপাদন বন্টন চুক্তির (পিএসসি) আওয়তায় ইজারর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ২০০২ সালে হতে উচ্চ আদালতের এক নিষেধাজ্ঞার কারণে দীর্ঘদিন নতুন পি এস সি চুক্তির মাধ্যমে বিদেশী কোম্পানীর হাতে গ্যাস ব্লক ইজারা প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল। ২০০৭ সালে তৎকালিন তত্তাবধায়ক সরকার সমূদ্রাঞ্চলে পিএস সি চুক্তির আওয়তায় অনুসন্ধানের জন্য উচ্চ আদালতের অনুমোদন গ্রহণ করে। বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর স্থল ভাগেও নতুন পি এস সি সম্পাদনের উপর উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অপসরণে তৎপর হয়। গত ৯ অক্টোবর ২০০৯ Energy Bangla প্রকাশ করে যে , Awami League government, as part of the plan, has already moved to remove the embargo to pave the way for inviting the onshore gas block bidding. "We've moved the Attorney General Office (AGO) to pursue the case in the High Court so that the embargo is removed," said a top official at the energy ministry. Energy Bangla পেট্রোবাংলার তৎকালিন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ও জ্বালানি উপদেষ্টার উদৃতি দিয়ে বলে যে উচ্চ আদালত বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ঝামেলা মুক্ত হলে এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহন করবে।

সাম্প্রতি আদালত সে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। ন্যাড়া কি বারবার বেল তলায় যায় ? গত ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০১০ দৈনিক কালেরকন্ঠে লীড নিউজ হিসাবে আহমেদ দীপু এর ৭ বিদেশি কম্পানির খপ্পরে ৭ গ্যাস ব্লকঃকেউ কাজ করেনি, দুই যুগ ধরে শুধুই হাতবদল। শিরনামে আমাদের গ্যাস সম্পদ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ লেখা টি ছাপা হয়। এ লেখায় বাংলাদেশের তীব্র গ্যাস সংকট কালে জনগণের সম্মুখে গ্যাস ব্লক ইজারা গ্রহণ কারী IOC গুলোর স্বরুপ উন্মোচিত হয়েছে। লেখার সাথে প্রাসঙ্গিক কিছু বিষয় যোগ করতে চাই।

এক নজরে ১৯৯৩ থেকে ২০০১ সাল পযর্ন্ত ১২ টি ব্লক IOC সাথে সম্পাদিত চুক্তির তারিখ । ব্লক- ১৬ ঃ ০৫ মে ১৯৯৪ ব্লক -১২ ঃ ১১ জানুয়ারী ১৯৯৫ ব্লক -১৩ ঃ ১১ জানুয়ারী ১৯৯৫ ব্লক -১৪ ঃ ১১ জানুয়ারী ১৯৯৫ ব্লক -১৫ ঃ ১২ জানুয়ারী ১৯৯৫ ব্লক -১৭ ৎ ১৮ জানুয়ারী ১৯৯৭ ব্লক -১৮ ৎ ১৮ জানুয়ারী ১৯৯৭ ব্লক - ০৭ ৎ ০২ এপ্রিল ২০০০ ব্লক - ০৫ ৎ ০৮ জনু ২০০০ ব্লক - ০৯ ৎ ০২ এপ্রিল ২০০১ ব্লক - ১০ ৎ ০৪ জুলাই ২০০১ (একটি তারিখ জানা নাই) উল্লেখ্য খালেদা জিয়া সরকার তার প্রথম মেয়াদে ৮টি ব্লকের জন্য ইজারাদার নির্বাচন করলেও তাঁর প্রথম ক্ষমতাকালে ৬ টি চুক্তি স্বাক্ষর সম্পূর্ণ করে যেতে পারে। মাজার ব্যাপার আমাদের দেশে প্রতিহিংসার রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পূর্ববর্তী সরকার সকল উদ্যোগ ভাল-মন্দ বিবেচনাহীণ ভাবে পরিত্যাক্ত হলেও ; হাসিনার প্রথম মেয়াদের ঐক্যমতের সরকার পূর্ববর্তী সরকারের নির্বাচিত ইজারাদারের (তাল্লো) হাতে ১৮ জানুয়ারী ১৯৯৭ ব্লক -১৭ ও ব্লক -১৮ তুলে দেয়। হাসিনার ঐক্যমতের সরকার মডেল পি এস সি -১৯৯৭ প্রস্তুত করে আরও ৪ টি ব্লকের ইজারা প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে। ইজারা চুক্তিকৃত ১২ ব্লকের মাঝে ৭ টি ব্লকে IOC গুলো বছরের পর বছর নির্লিপ্ত থেকেছে।

কী কারণে তার সত্য উপলদ্ধি করা যাবে ৎ ০৪ জুলাই ২০০১ ব্লক - ১০ পিএস সি স্বাক্ষরকরারী কেয়ার্ণ এনার্জী উক্ত ব্লকে তাদের কর্মকান্ড সম্পর্কে তাদের ওয়েব পেজে মন্তব্য করে........... ''These production sharing contracts (PSCs) were due to terminate on 4 July 2006 if no viable market existed for gas discovered in Bangladesh blocks. Although this date has passed, each party has agreed to amend work commitments in the PSCs. We have also agreed that a viable market exists in Bangladesh. These amendments now need to be formalised in writing. '' অপর দিকে , ০২ এপ্রিল ২০০০ এ চুক্তি স্বাক্ষর হলেও বাংলাদেশের অভ্যন্তরের গ্যাসের বাজার না থাকার কারণে এদেশীয় ভূতাত্তিকদের দৃষ্টিতে অত্যন্ত সম্ভাবণাময় ব্লক-৭ এ শেভরণ জুন ২০০৮ পযর্ন্ত কোন কাযর্ক্রম চালায় নি । জুন ২০০৮ সালে চুক্তির মেয়াদ পুনরায় বৃদ্ধির পর তারা কর্মকান্ড সম্পূর্ণ করে। এ পর্যন্ত প্রায় দুই বৎসর সমযে মাত্র ৪৬০ লাইন কিমি সিসমিক সার্ভে সম্পূর্ণ করেছে। তুলনা মূলক বিচারের জন্য উল্লেখ্য করা যায় , সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থ ( সরকারের সাহয্য ছাড়া) ও লোক বলে বাপেক্সের প্রতি বছর ৩৫০ লাইন কিমি সিসমিক সার্ভে সম্পূর্ণ করতে সক্ষম। একই স্লথ গতি কথা উঠে ব্লক- ১২ (বিবিয়ারানা ক্ষেত্র সম্পর্কে)।

১১ জানুয়ারী ১৯৯৫ চৃক্তি স্বাক্ষর হলেও এবং গ্যাসের অস্তিত্ত্ব সম্পর্কে পূর্ব উপাত্ত থাকা স্বত্ত্বেও বিবিয়ারা ক্ষেত্র থেকে উৎপাদন করে এক যুগ পরে ২০০৭ সালে। IOC মাধ্যমে পি এস সি চুক্তি করে ব্লক ইজারা পক্ষে অন্যতম যুক্তি করা হয় যে , IOC গুলো সীমিত সময়ে বিপুল বিনিয়োগে রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠান হতে কযেকগুন দক্ষতার সাথে অনেক বেশি কাজ করেত সক্ষম। উপর আলোচনা তারই নমুনা?!অর্থাৎ সমূদ্র বক্ষের ব্লক IOC হাতে একই ভাবে সমাপর্ণ করে দেশের গ্যাস সংকট নিরসণের স্বপ্র দেখবার কোন কারণ নেই। ইজারা চুক্তিকৃত ১২ ব্লকের মাঝে কোন ৫ টি ব্লকে IOC গুলোর কমর্কান্ড চলেছ এবং কেন বিনিয়োগ করেছে ? ব্লক-১২,ব্লক-১৩ ও ব্লক-১৪ ( বৃহত্তর সিলেট ) শেভরণ ব্লক-০৯ ( কুমিল্লা অঞ্চল) তাল্লো ব্লক-১৬ ( সাগু-হাতিয়া-ম্যাগনামা) কেয়ার্ণ এনার্জি লক্ষণীয় বৃহত্তর সিলেট ও কুমিল্লা অঞ্চল ৬০-৭০ দশক হতে গ্যাস অঞ্চল হিসাবে স্বীকৃত এবং এই অঞ্চল অবস্থিত গ্যাস ক্ষেত্র হতে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে IOC আগমনে বহু বছর আগ থেকে দেশের গ্যাস চাহিদা মেটানো হয়ে আসছে। এই অঞ্চলে দেশীয় ভুতাত্ত্বিক ও ভুপদার্থবিদদের বহু বছরের উপাত্ত বিদ্যমান ছিল।

বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে, ব্লক -১৩ এর জালাবাদ ক্ষেত্র টি ১৯৮৮ সালে Scimita কর্তৃক আবিষ্কৃত। Scimita সাথে এরশাদ সরকারের সম্পাদিত চূক্তি গন আন্দোলনের চাপে ও উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষিত হলে; 'জালালাবাদ গ্যাস ক্ষেত্র উৎপাদন শুরুর আগেই পেট্রোবাংলার হাতে হস্তান্ত করে তারা চলে যায়। একিট আবিষ্কৃত গ্যাস ক্ষেত্র কে (ব্লক -১৩) ১১ জানুয়ারী ১৯৯৫ পি এস সি আওতায় বিদেশি কোম্পানীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। অপর দিকে ১৯৭৪ সালের Petroleum Act এর আওতায় পিএস সির আওতায় ব্লক-১৬ (মনপুরা -সাগু-হাতিয়া-ম্যাগনামা) অঞ্চল সহ সমূদ্র গ্যাস বক্ষে ৩১ হাজার লাইন কিমি সিসমিক সার্ভে করে ভূতাত্তিক উপাত্ত সংগ্রহ করা হয় এবং ১৯৭৭ সালে কুতুবদিয়ায় গ্যাস স্তর আবিষ্কৃত হয়। উক্ত পিএস সি আওয়তায় IOC গুলো মূলত তেল আহরণে আগ্রহী ছিল এবং বাংলাদেশে সে সময় গ্যাসের বাজার না থাকায় তারা ১৯৭৮ সালে চলে যায়।

লক্ষনীয় যে, ০৫ মে ১৯৯৪ ব্লক- ১৬ পিএসসি চুক্তি স্বাক্ষরের মাত্র ৩ বছরের মাথায় কেয়ার্ণ সমূদ্র বক্ষে ভূতাত্ত্বিক জরিপ (প্রয়োজন হযেছে কিনা সন্দেহ!)- অনুসন্ধাণ কুপ খনন এবং সমূদ্র বক্ষে প্লাট ফরম নির্মাণ করে গ্যাস উৎপাদন শুরু করে। মূলতৎপূর্বোক্ত ১৯৭৪-১৯৭৮ সালের অনুসন্ধানের ফলাফল কেয়ার্ণ ব্যবহার করে। কিন্তু, সম্পূর্ণ নতুন আবিষ্কার হিসাবে কেয়ার্ণ একদিকে সিসমিক অনুসন্ধান খরচ হিসাবে দেখায় এবং ক্সস্ট রিকভারির নামে ৮০% গ্যাস হজম করে। আমার আলোচনা থেকে আমি দুই টি বিষয় সিদ্ধান্তে উপনীত হতে চাই। একৎ IOC গুলো শুধু সেই সকল ব্লকে (৫ টি ব্লক) বিনিয়োগ করেছে যেখানে পূর্বেই যথেষ্ঠ উপাত্ত ছিল।

দুই ৎ IOC গুলো সার্বিক কমর্কান্ডে ও তার গতিতে তাদের বিবেচনায় 'গ্যাসের লাভজনক বাজার প্রাপ্তি' প্রধান নিয়ামক হিসাবে কাজ করেছে। ***************************************** সূত্রঃ Bangladesh: Exploration for Petroleum –Stalemate Situation Bangladesh Govt Plans Int’l Bidding for Onshore Blocks বার্ষিক প্রতিবেদন ঃ পেট্রাবংলা ২০০৮ Chevron completes 70pc seismic survey in Block-7 Bangladesh: Highlights of Operations

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.