আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অস্ট্রেলিয়া - ৪


সেদিন কটেসলো বীচে গিয়ে শেষ বিকেলে ফিশ এন্ড চিপস দিয়ে লাঞ্চ করলাম। বিকেলে বীচে গা চিল করা ঠান্ডা বাতাস ছিল, মনে হচ্ছিল শীতের শুরু। গাংচীল গুলো একদম আমাদের গা ঘেসে দাড়িয়ে রোদ পোয়াচ্ছিল। গাংচীল আগে অনেক দেখেছি কিন্তু এত কাছ থেকে কখনও দেখিনি। পার্থের কটেসলো বীচ টা খুব চমৎকার লাগল।

তবে বাতাসটা খুবই ঠান্ডা ছিল সেদিন আমাদের পোশাকের তুলনায়। তাই বিকেলটা বীচে কাটিয়েই বাড়ি ফিরলাম। পরের দিন আমাদের প্রজেক্ট হলো কোয়ালা ও ক্যাঙ্গারু দেখা। রওনা দিলাম কহুনু কোয়ালা পার্ক কলোনিতে। ভেতরে যেতেই প্রথমেই এক গাধা আরেক পনি এসে স্বাগতম জানালো মাথা দুলিয়ে।

পাশেই দেখি হামটি ডামটি ওয়ালে বসে মন খারাপ করে । ওপাশে এক কোয়ালা ফ্যামিলি গল্পে ব্যস্ত। কিছুদুর এগোতেই চমৎকার এক ময়ুর এসে "হাই" জানাল আমদের আর তা দেখে এক ইমু একটু বিরক্ত। গ্রাম্পি মুখে আমাদের জানান দিল - "এখানে বুঝে শুনে চলো বাছা...এ হলো আমাদের এলাকা , উমম ছবি তুলবেতো আগে জানাওনি কেন আমার মেকাপটা করা হয়নি ... তবু পোজ দিচ্ছি দয়া করে " অস্ট্রিচের ওদিকে ভিষন রাগ হচ্ছে ওকে কেন বেড়ার ভেতর রাখা হয়েছে এ জন্য । বেড়ার ফাক দিয়ে পারলে সে ঠোট বের করে ঠোকোড় দেয়।

ক্যাঙ্গারু পরিবারের দুই বাচ্চা তো আমার রিতি মত ভক্ত হয়ে গেল। আমার হাত ধরে বসিয়ে হাত থেকে পপকর্ন খেতে থাকলো....আর যেন ছাড়তেই চায় না । ভাবতেই পারছিলাম না আমি ক্যাঙ্গারুকে কোলে নিয়ে খাওয়াচ্ছি। এরাও যেন মানুষের মত মুখ তুলে তুলে আদর চায়। পেলিক্যান দাদা লম্বা ঠোট নিয়ে ধ্যানে বসেছে আর কোন সাড়া নেই এদিকে দাদী গরম সইতে না পেরে জ্বলে নেমে জুড়িয়ে নিচ্ছে।

কাকাতুয়া আমাদের দেখেই চিৎকার শুরু করল "হ্যালো..হ্যালো...হ্যালো....মরনিং.....মরনিং" - উমমম সামাজিকতা ভালই শিখেছেন উনি, গলাটাও সত্যি চমৎকার!! তাদের পাশেই ব্লাক সোয়ান অহংকারি ভঙ্গিতে দাড়িয়ে যেন কাছে গেলেই কামড়ে দেবে । কোয়ালা পরিবারের কাছে যখন পৌছালেম উনারা ১২তম পর্ব ঘুম দিচ্ছেন। কোয়ালা তাদের জীবনের বেশির ভাগ সময়ই ঘুমিয়ে কাটায়। গাছের ডালে ঝুলে ঝুলে অঘোর ঘুমে তলিয়ে। ইউক্যলিপ্টসের পাতা ওদের সবচাইতে প্রিয় ও প্রধান খাদ্য।

যাতে নিউট্রিশনাল ভ্যালু খুবই কম। তাই ওরা এনার্জি সঞ্চয় করতে প্রতিদিন ১৮ - ২০ ঘন্টা ঘুমায়। ওদের যখন বাচ্চা হয় মা বাচ্চাকে ৬ মাস তার পাউচের ভেতর ক্যারি করে, এর পরের ৪ মাস পিঠে ক্যারি করে। পানি ওরা খুবই কম পান করে। পানির ঘাটতি ওরা ইউক্যলিপ্টাসের পাতা থেকে পূরন করে।

যাই হোক কনো রকমে একজনকে ঘুম থেকে উঠিয়ে আমাদের সাথে দেখা করতে নিয়ে আসা হলো। কিযে আদুরে!! কোলে নিতেই ওর তুলতুলে নরম ফারে ভড়া শরীরটা খুব আদুরে লাগলো। হাতে করে ইউক্যলিপ্টসের পাতা চিবোতে থাকলো। এ এক নতুন অভিঙ্গতা !! চলবে.....পরের পর্বে কুল্গার্লি যাচ্ছি!! সোনার ক্ষনি দেখতে!!
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।