এই ব্লগে জামাত-শিবির শুয়োরের বাচ্চারা ভুলেও নাক ডুবানোর চেষ্টা করবি না
বরিশালের গৌরনদীতে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ঘুরছেন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী। শহীদ পরিবারের স্বীকৃতি পাচ্ছে না সম্মুখ সমরে জীবন দেয়া অনেক মুক্তিযোদ্ধার বউ, ছেলে-মেয়ে। অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছেন অমুক্তিযোদ্ধারা। এদের মধ্যে শিল্পপতি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ, এতে প্রতি বছর অন্তত অর্ধ কোটি টাকা গচ্চা যাচ্ছে সরকারের ।
জানা গেছে, গৌরনদী উপজেলায় ভাতাপ্রাপ্ত ৪৮৮ মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ১৫০ জন সরকারি কর্মকর্তা এবং ১২০ জন বিত্তবান ও সমাজপতি রয়েছেন। এর মধ্যে বহু ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা, এমনকি লুটেরারাও ভাতা গ্রহণ করছেন।
সম্প্রতি উপজেলার ৬৮ মুক্তিযোদ্ধার জন্য পুনরায় ভাতা বরাদ্দের প্রস্তাব আসে। গৌরনদী সমাজ সেবা অফিস থেকে এজন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলে দুই শতাধিক আবেদন জমা হয়। এবারের আবেদনের তালিকাতেও অনেক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বিত্তবান ও সমাজপতি রয়েছেন।
ভাতা পাওয়ার জন্য তারা আয়ের হিসাব গোপন রেখে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। এখানকার প্রকৃত অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা তাই বাদ পড়ার আশংকায় শংকিত।
সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী যে সকল মুক্তিযোদ্ধার বার্ষিক গড় আয় ১২ হাজার টাকার বেশি নয়, যারা কর্মক্ষম নন বা আংশিক কর্মক্ষম, ভূমিহীন, সহায়সম্বলহীন তাদের ক্ষেত্রে ভাতা প্রদানের নির্দেশ রয়েছে। আর যেসব মুক্তিযোদ্ধা সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত, যাদের গ্রাচুইটি বা পেনশনের সুবিধাসহ বার্ষিক গড় আয় ১২ হাজার টাকার বেশি তাদেরকে সম্মানি ভাতা পাওয়ার অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু গৌরনদীতে ভাতাপ্রাপ্তদের মধ্যে নাঠৈ গ্রামের আ. খালেক মোল্লা ঢাকা ওয়াসার ইঞ্জিনিয়ার, একই গ্রামের কাজী মোশারফ হোসেন পিডব্লিউডি কর্মকর্তা, সৈয়দ লিয়াকত হোসেন পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তা, পশ্চিম শাওড়া গ্রামের সহকারী পুলিশ সুপার চোকদার আব্দুল হালিম ঢাকায় র্যাবে কর্মরত, মোতাহার হোসেন বাটাজোরের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, সৈয়দ শাহ আলম হোসনাবাদ গ্রামের শিল্পপতি ও মজিবুর রহমান মোল্লা হোসনাবাদ নিজামউদ্দিন কলেজের সহকারী অধ্যাপক।
বিত্তবান হয়েও রাজনৈতিক বিবেচনায় ভাতা পাচ্ছেন গৌরনদী ঊপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সরোয়ার আলম বিপ্লব, সরিকল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গির মৃধা, নলচিড়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ন আহবায়ক সেকান্দার আলী মৃধা, পৌর কাঊন্সিলর ও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম ফকির, আওয়ামী লীগের উপজেলা আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সরিকল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মৃধা, চাঁদশী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা হাক্কানি আলম, বাটাজোর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা পরিমল চক্রবর্তী প্রমুখ।
খাঞ্জাপুর ইঊনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল হক ঘরামী শীর্ষ নিউজ ডটকমকে জানান, কটকস্থল গ্রামের মৃত মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ গোমস্তার এক পুত্র আমেরিকা ও এক পুত্র লন্ডনে বসবাস করেন। তার স্ত্রীর নামে ভাতা বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু পূর্ব ডুমরিয়া গ্রামের মৃত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক তালুকদারের স্ত্রী ভানু বিবি পরের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন অথচ তার নামে ভাতা বরাদ্দ হয়নি।
জাতীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা জনতা ঐক্য পরিষদের গৌরনদী উপজেলা সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক সৈয়দ মনিরুল ইসলাম বুলেট ছিন্টু শীর্ষ নিউজ ডটকমকে জানান, নিয়ম বহির্ভূত ভাবে বহু ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা, লুটেরারদের ভাতা দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, উপজেলার নাঠৈ গ্রামের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আমির হোসেন, লুৎফর রহমান শরীফ (লুতু) ও আ. মালেক মোল্লার পরিবারকে এখনো শহীদ পরিবার হিসেবে স্বীকৃতি বা ভাতা দেয়া হয়নি। গৌরনদী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের আহবায়ক আলাউদ্দিন বালী ক্ষোভের সাথে শীর্ষ নিউজকে জানান, আধুনা গ্রামের মৃত মুক্তিযোদ্ধা মোবারেক আলীর নাম তালিকায় থাকা সত্ত্বেও তার পরিবারকে এখনো ভাতা দেয়া হচ্ছে না। তার স্ত্রী ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। অপরদিকে সরিকলের বিএনপি নেতা মো. জাহাঙ্গির মৃধা মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছেন।
তথ্যসূত্রঃ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।