আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রসঙ্গঃ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের লাশ বহনকারী এম্বুলেন্সে জুতা ও গোবর নিক্ষেপ: যৌক্তিকতা এবং খাঁটি তৈলের ব্যবহার

আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক।

প্রসঙ্গঃ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের লাশ বহনকারী এম্বুলেন্সে জুতা ও গোবর নিক্ষেপ: যৌক্তিকতা এবং খাঁটি তৈলের ব্যবহার টিভিতে দেখলাম বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের লাশ বহনকারী এম্বুলেন্সে কিছু লোক জুতা ও গোবর নিক্ষেপ করছে। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা নিঃসন্দেহে জাতির এক কলঙ্কজনক ইতিহাস। যেকোন হত্যাকান্ডেরই শাস্তি হওয়া উচিৎ মৃত্যূদন্ড এবং তাই হওয়াতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আমরা সবাই চেয়েছি, জাতি চেয়েছে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার হোক।

তা হয়েছে এবং সেই সাথে জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। আইন অনুযায়ী অপরাধী তার অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি পেয়েছে। কিন্তু লাশ বহনকারী এম্বুলেন্সে জুতা কিংবা গোবর নিক্ষেপ করাটা একটু বাড়াবাড়ি এবং তা নিয়ে আহ্লাদিত হওয়াটা রাজনৈতিক অপরিপক্কতার বহিঃপ্রকাশ। আগামী নির্বাচনের সময় এই জুতা/গোবর নিক্ষেপ নিয়েই কথা উঠবে, জনপ্রিয়তা কমার ঝুঁকি রয়েছে। লাশ আসলে একটি জড়পদার্থ এবং আমরা যারা ইসলামের অনুসারী তারা জানি লাশের সাথে আমাদের কি রকম ব্যবহার করা উচিৎ।

মৃত ব্যক্তির ভাল গুণ গুলোর কথা আলোচনা করার কথা বলা হয়েছে ইসলামে (অবশ্য যদি ইসলাম মানি)। ইসলাম আমাদেরকে ধৈর্যধারণ করতে উপদেশ দেয়, সীমা লংঘন করাকে নয়। আমরা আজও রাজাকারদের বিচার করতে পারি নাই, বরং রাজনীতি করার অধিকার দিয়েছি, যাদের গঠনতন্ত্রে বাংলাদেশের স্বীকৃতিই ছিল না (২ বছর আগের কথা, এখন জানি না)। অধিকন্তু, এই খুনিদের বেশিরভাগই ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। আমরা এটাও জানি যে, মুক্তিযূদ্ধের সময় মারা গেলে এঁরা পেতেন শহীদের সম্মান।

বরং রাজনৈতিক অবিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে, তড়িঘড়ি করে আইন করা হয়েছে যে, তাঁরা যেন রাষ্ট্রীয় সম্মান না পান। এতে আওয়ামী লীগ বা হাসিনার কি এমন রাজনৈতিক ফায়দা অনুমেয় নয়। তাদেরকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করলে বরং আওয়ামী লীগেরই রাজনৈতিক বিজয় হত বলে আমার ধারণা। জাতি বুঝত, আওয়ামী লীগ তার বখে যাওয়া সন্তানের বিচার করেছে। এখন জনগণ বুঝবে হাসিনা এক প্রতিহিংসাপরায়ন নারী এবং প্রতিহিংসাবসতঃ পিতার খুনের প্রতিশোধ নিয়েছেন।

(অবশ্য কেউ যদি আমার পরিবারের কাউকে খুন করেন তাকে আমি "অন দ্য স্পট" খুন করব, কিন্তু আমার মানসিকতা আর ব্যপ্তি রাজনৈতিক নেতাদের মত নয়। আমার গন্ডি আমার পরিবার আর রাজনীতিকের গন্ডি পুরো দেশ)। আমাদের রাজনীতিবিদগণ (বিএনপি/আওয়ামী লীগ/জাপা/জামাত সবাই) আসলেই যে প্রফেশনাল রাজনীতিবিদ নন তা এইসব হীন আচরণ থেকেই বুঝা যায়। রাজনীতি বলতে আসলে উত্তরাধিকার থেকে পাওয়া একভাগ ছেঁড়া ত্যানা, যার ব্যবহার হতে পারে শুধু কফ-কাশি মোছার মত ছোট কাজে। রাজনৈতিক শিষ্টাচার যে এঁরা কবে শিখবে আল্লাহ্‌ই জানেন।

যারা তাদের ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের লাশ বহনকারী এম্বুলেন্সে জুতা ও গোবর নিক্ষেপ করছেন, অনেকেই তাদের এই কাজকে বাড়াবাড়ি বলে আখ্যা দিচ্ছেন আবার কেউ কেউ বলছেন ইহা বাড়াবাড়ি নয়। তবে আমার মনে হয় ইহা বাড়াবাড়ি নয়, বরং জুতা/গোবর ছুঁড়ে মারা মানে শেখ হাসিনাকে খাঁটি তেলে অবগাহন করানো। শেখ হাসিনাকে খুশি করার এটাই মোক্ষম সময়। কারণ, কর্মসংস্থানের অভাবের এই দেশে চাই চাকুরী, দরকার টেন্ডার, দরকার চাঁদা এবং এতদমহানকর্মে চাই নিরাপত্তা, চাই পৃষ্ঠপোষকতা। যা আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনা বুঝতে পারবে না, যা শেখ মুজিব বুঝতে পারেন নাই।

শেখ মুজিব যেমন চামচাগুলোকে ভেবেছেন শুভাকাংক্ষী, ভেবেছেন তাঁকে পেয়ার-কারনেওয়ালা। তারা আসলে তা নয়, বাঙ্গালীরা বড়ই স্বার্থপর, বড়ই বিশ্বাসঘাতক। যাই হোক, যারা এই জুতা/গোবর নিক্ষেপকে বাড়াবাড়ি বলতে নারাজ তারাও হাসিনার চারপাশের তৈল খনি, ধান্দাবাজ। শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের ভাল চাইলে কোন সূস্থ মস্তিস্কের মানুষ এইরকম হীন কাজের সমর্থন করতে পারতেন না। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি এইসব ধান্দাবাজদের বুঝতে শিখুন, এদের উদ্দেশ্য ধরতে শিখুন, খাঁটি তৈলে ভাসবেন না, লাই দেবেন না, লাই দিলে মাথায় উঠে প্রস্রাব করবে।

এঁরা আপনার বাবার মাথায় উঠে একই কাজই করেছিল, যার দূর্গন্ধ এই জাতিকে ৩৮ বছর ধরে সইতে হয়েছে। আপনাদের রাজনৈতিক অবিচক্ষণতা এবং এই ধান্দাবাজদের জন্যই আমরা কালে কালে শেখ মুজিবের মত মহান নেতাকে বারবার হারাব। ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।