আইন প্রতিমন্ত্রী ও ঢাকা-২ আসনের সাংসদ কামরুল ইসলাম মিরপুরের উত্তরণ বহুমুখী সমবায় সমিতির জমির চার কাঠার মালিক। লালবাগের ৪৮/১ আজগর লেনে পৈতৃক বাড়ির এক-তৃতীয়াংশেরও মালিক তিনি। নির্বাচন কমিশনে দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে কামরুল ইসলাম এ তথ্য উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এটি গোপন করে গত ৩০ ডিসেম্বর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) উত্তরা প্রকল্পে আইন প্রতিমন্ত্রী পাঁচ কাঠার একটি প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন।
তবে আইন প্রতিমন্ত্রী প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘আমার পৈতৃক বাড়িটি ছোট।
আমরা তিন ভাই এর সমান অংশীদার। আর মিরপুরের জমিটি তিন মেয়েকে দিয়েছি। এবার বলেন, আমার কি কিছু আছে?
সরকারি দলের সাংসদ ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী রহমত আলী শংকরের ৩৩৮ জাফরাবাদে দুটি বাড়ির মালিক। যেখানে তিনি নিজে বসবাসও করেন দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু প্রবীণ এই সাংসদ রাজউককে দেওয়া হলফনামায় এ তথ্য গোপন করেছেন।
বিশেষ কোটায় তিনিও গত ৩০ ডিসেম্বর উত্তরায় পাঁচ কাঠা জমি বরাদ্দ পেয়েছেন।
জানতে চাইলে গতকাল মঙ্গলবার এই প্রতিবেদককে রহমত আলী বলেন, ‘আসলে রাজউকের আবেদনের ব্যাপারে আমি খুঁটিনাটি জানি না। আবেদনপত্র পূরণ করেছে আমার ছেলে। আমি শুধু সই করেছি। ’ রহমত আলী বলেন, ‘আমি শংকরে নিজের বাড়িতে বসবাস করি।
তবে ছেলে এখান থেকে অন্যত্র চলে যেতে চাইছে। ’
অন্যদিকে ঢাকা-১৬ (মিরপুর-পল্লবী) আসনের আওয়ামী লীগের সাংসদ ইলিয়াসউদ্দীন মোল্লা পল্লবীর হারুনাবাদের ৫/১ মাদবর মোল্লা সড়কে দোতলা বাড়ির মালিক। এ ছাড়া তাঁর নামে সেনপাড়া মৌজায় ৭ নম্বর দাগে ৪ দশমিক ৭৮ কাঠা জমিও আছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরের আয়কর বিবরণীতে তিনি সম্পদের যে হিসাব দিয়েছেন, তাতে রাজধানীতেই তাঁর আরও ৩০ বিঘা জমির কথাও উল্লেখ আছে। কিন্তু রাজউকে দেওয়া হলফনামায় তিনি এসব তথ্য দেননি।
তিনিও বিশেষ কোটায় উত্তরায় পাঁচ কাঠা প্লট বরাদ্দ পেয়েছেন।
প্রথম আলোর অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকা শহরে নিজের ও স্ত্রীর নামে প্লট বা ফ্ল্যাট থাকার তথ্য গোপন করে এভাবে অন্তত দেড় ডজন সাংসদ উত্তরা সম্প্রসারিত তৃতীয় প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। অন্যদিকে পূর্বাচল উপশহর প্রকল্পের ক্ষেত্রে হলফনামার বাধ্যবাধকতা না থাকলেও ঢাকা শহরে একাধিক জমি ও ফ্ল্যাট আছে—এমন অনেক সাংসদ বিশেষ কোটার সুবিধা নিয়ে ১০ কাঠার পৃথক প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন।
উত্তরায় প্লট পাওয়ার ক্ষেত্রে রাজউকের শর্ত ছিল, ঢাকা শহরে আবেদনকারীর নিজ ও স্ত্রীর নামে প্লট বা ফ্ল্যাট থাকা চলবে না। কিন্তু মন্ত্রী, সাংসদ ও সমমর্যাদার যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁদের সবাইকেই বিশেষ বিবেচনায় প্লট বরাদ্দ দিয়েছে রাজউক।
অথচ আবেদনকারীদের হলফনামা দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উত্তরায় যে ৮৩ জন সাংসদ প্লট পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ১৮ জনের নিজের অথবা স্ত্রীর নামে ঢাকা শহরে জমি, বাড়ি কিংবা ফ্ল্যাট আছে। এই সাংসদদের ১৪ জন আওয়ামী লীগের, দুজন জাতীয় পার্টির, একজন বিএনপির ও একজন জাসদের।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান প্রথম আলোকে বলেন, যদি প্রমাণিত হয় কেউ মিথ্যা হলফনামা দিয়েছেন, তাহলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্লট বা ফ্ল্যাট থাকলে নতুন করে উত্তরায় কেউ প্লট পেতে পারেন না।
এ ব্যাপারে করণীয় সবটুকুই তিনি করবেন বলে জানান।
রাজউকের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ঘোষণাই দিয়ে রেখেছি, যেখানে আমার এক পা কবরে, সেখানে অনিয়মের সঙ্গে আপস করার প্রশ্ন নেই। ’ তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘দায়িত্বশীল কেউ হলফনামায় ভুল তথ্য দিতে পারেন, এটা বিশ্বাস করা যায় না। তবে এমন কিছু ঘটলে আইন তার নিজস্ব গতিতেই চলবে। ’
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এম হাফিজউদ্দিন খান আলাপকালে প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা আইন প্রণয়ন করবেন তাঁরা যদি এভাবে মিথ্যা হলফনামা দিয়ে বিশেষ সুযোগ নেন, তাহলে এর চেয়ে বড় প্রহসন আর কী হতে পারে? তিনি বলেন, যাঁরা এমনটি করেছেন, তাঁরা জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।
এটি নৈতিক স্খলন ও দণ্ডনীয় অপরাধ। বিষয়টি অবশ্যই তদন্ত হওয়া প্রয়োজন এবং সরকারের আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
এভাবে উত্তরায় যাঁরা প্লট নিলেন:
নরসিংদী-৩ আসনের সাংসদ জহিরুল হক ভূঁইয়া খিলগাঁওয়ের ২৭১/১/বি, তালতলায় পৌনে তিন কাঠা জমির ওপর পাঁচতলা বাড়ির মালিক। বিগত নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় দেওয়া হলফনামায় তিনি এ তথ্য দিয়েছেন এবং ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরের আয়কর বিবরণীতেও এ তথ্য আছে। কিন্তু বিষয়টি গোপন রেখে উত্তরায় পাঁচ কাঠা প্লট নিয়েছেন তিনি।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ পারভীন তালুকদারের স্বামী মোহাম্মদ আলী তালুকদারের নামে রাজধানীর অভিজাত গুলশানের ১১৪ নম্বর সড়কের ৩৫ নম্বর বাড়িতে ফ্ল্যাট আছে দুটি। তিনিও উত্তরায় পাঁচ কাঠা প্লট নিয়েছেন। পারভীন তালুকদার প্রিটি কম্পোজিট টেক্সটাইলের পরিচালক ও প্রিটি উল ওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
আলাপকালে সাংসদ পারভীন তালুকদার বলেন, গুলশানের ফ্ল্যাট তাঁর স্বামীর নামে এবং ফ্ল্যাটের বিপরীতে ব্যাংক ঋণও আছে। কাজেই তিনি প্লট পাবেন না কেন?
টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনের সাংসদ একাব্বর হোসেনের মগবাজারে তিন কাঠা জমির ওপর চারতলা বাড়ি আছে; যা তিনি বিগত নির্বাচনের সময় হলফনামায় উল্লেখ করেছেন এবং ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরের আয়কর বিবরণীতেও এ তথ্য দিয়েছেন।
কিন্তু রাজউকের হলফনামায় এটি উল্লেখ না করে তিনি উত্তরায় পাঁচ কাঠা প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৭ (নবীনগর) আসনের জাসদের (ইনু) সাংসদ শাহ জিকরুল আহমেদের স্ত্রীর নামে পুরানা পল্টন লেনে ছয়তলা বাড়ি আছে। গত নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় তিনি এ তথ্য দেন। কিন্তু জিকরুল আহমেদ উত্তরায় পাঁচ কাঠা প্লট নিয়েছেন। ঢাকায় তাঁর বা স্ত্রীর নামে এই সম্পদ থাকার তথ্য তিনি রাজউককে দেননি।
এ বিষয়ে আলাপকালে জিকরুল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর স্ত্রীর নামে ঢাকায় বাড়ি আছে। তাঁর নিজের নামে কিছু নেই। এ জন্য তিনি উত্তরার প্লটের জন্য আবেদন করেছিলেন এবং পেয়েছেনও।
ভোলা-৪ আসনের সাংসদ আবদুল্লাহ আল ইসলাম (জ্যাকব) মিরপুরের ১২ নম্বর সেকশনের বি ব্লকের ২ নম্বর সড়কের ২ নম্বরে একটি বাড়ির মালিক। তাঁর ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরের আয়কর বিবরণীতে এ তথ্য আছে।
তিনিও উত্তরায় পাঁচ কাঠার একটি প্লট পেয়েছেন। জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনের সাংসদ মুরাদ হোসেনের ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ জমি আছে উত্তরায়। রাজউকে দেওয়া হলফনামায় এটি উল্লেখ না করে উত্তরাতেই বিশেষ কোটায় পাঁচ কাঠার প্লট নিয়েছেন সরকারি দলের এই সাংসদ।
সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ সাহেদা তারেকের (দীপ্তি) স্বামী তারেক মিন্টুর নামে পাঁচ কাঠা জমি আছে; যা সাংসদ নিজেই নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় উল্লেখ করেন। কিন্তু বিষয়টি গোপন রেখে উত্তরায় তিনিও পাঁচ কাঠার প্লট নিয়েছেন।
অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, সংরক্ষিত নারী আসনের আরেক সাংসদ তহুরা আলীর নিজ নামে দুই হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট আছে গুলশানে। তিনিও উত্তরায় পাঁচ কাঠার প্লট নিয়েছেন। ঢাকা-১৪ আসনের সাংসদ আসলামুল হক আমিনবাজার এলাকায় সাড়ে তিন বিঘা জমির মালিক। উত্তরায় পাঁচ কাঠা জমি বরাদ্দ নিয়েছেন তিনিও। নেত্রকোনা-২ আসনের সাংসদ আশরাফ আলী খানের (খসরু) স্ত্রীর একটি ফ্ল্যাট আছে ঢাকায়।
তিনিও উত্তরায় পাঁচ কাঠা জমি নিয়েছেন
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রংপুর-২ আসনের জাপার সাংসদ আনিছুল ইসলাম মণ্ডল ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরের আয়কর বিবরণীতে রাজধানীর উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৬ নম্বর সড়কের ৩৬ নম্বর বাড়িটি তাঁর নামে বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু রাজউকের উত্তরা তৃতীয় পর্বে তিনিও পাঁচ কাঠার প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনিছুল ইসলাম মণ্ডল বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি প্লট পেয়েছি নাকি!’ তাঁর আবেদনের সিরিয়াল নম্বর এবং পিতার নাম সেখানে কী আছে স্মরণ করিয়ে দিলে বলেন, ‘এ বিষয়ে পরে সামনাসামনি কথা বলব। ’
জাপার অপর সাংসদ কাজী ফারুক কাদেরের (নীলফামারী-৩) ২৬৫০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট আছে গুলশানের ৪ নম্বর সড়কে। ফারুক কাদেরও প্লট নিয়েছেন উত্তরায়।
উত্তরায় পাঁচ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়া ভোলা-৩ আসনের সরকারদলীয় সাংসদ জসিমউদ্দিনের ফ্ল্যাট আছে মোহাম্মদপুরের রাজিয়া সুলতানা রোডে। একই দলের নেত্রকোনা-৩ আসনের সাংসদ মঞ্জুর কাদের কোরায়শী বিগত নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, এলিফ্যান্ট রোডে তাঁর স্ত্রীর নামে একটি ফ্ল্যাট আছে। কিন্তু বিষয়টি রাজউকে গোপন রেখে তিনি উত্তরায় পাঁচ কাঠার প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। আবার রাজশাহী-৫ আসনের সাংসদ আবদুল ওয়াদুদ বনানী এফ ব্লকের ৭ নম্বর সড়কে একটি ফ্ল্যাটের মালিক। তিনিও উত্তরায় প্লট নিয়েছেন।
অগাধ সম্পদ, তবু বিশেষ সুবিধায় পূর্বাচলে প্লট: ঢাকা-৩ (কেরানীগঞ্জের একাংশ) আসনের সাংসদ নসরুল হামিদ (বিপু) রাজধানীর অভিজাত এলাকা বারিধারার ১০ নম্বর সড়কে একটি বাড়ির মালিক। এ ছাড়া পরীবাগ ও বনানীতে একটি করে বাণিজ্যিক ও তিনটি আবাসিক ফ্ল্যাটের মালিক তিনি। ২০০৮-২০০৯ সালের আয়কর বিবরণীতে তিনি তাঁর এই সম্পদের হিসাব দিয়েছেন। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর বিশেষ বিবেচনায় পূর্বাচলে ১০ কাঠার প্লট নিয়েছেন তিনি।
টাঙ্গাইল-৭ আসনের জাতীয় পার্টির সাংসদ আবুল কাশেমের ২৫ কোটি টাকা মূল্যের একটি বাড়ি রয়েছে রাজধানীর গুলশানে।
এ তথ্য তিনি নিজেই দিয়েছেন বিগত নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় হলফনামায়। তাঁর ২০০৮-২০০৯ সালের আয়কর বিবরণীতেও এ তথ্য রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ এলাকায় ছয় শতাধিক বিঘা জমি আছে তাঁর। তবু বিশেষ বিবেচনায় পূর্বাচলে ১০ কাঠার একটি প্লট নিয়েছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার-২ আসনের সাংসদ এ এইচ এম হামিদুর রহমান (আযাদ) রাজধানীর পূর্ব রামপুরার ব্যাংক কলোনিতে ছয়তলা বাড়ির মালিক।
এ ছাড়া মগবাজারে তাঁর দুই কাঠা জমিও আছে। বিশেষ কোটায় তিনিও ১০ কাঠার একটি প্লট পেয়েছেন পূর্বাচলে।
ঢাকা-৬ আসনের সাংসদ মিজানুর রহমান খানের নামে রায়েরবাগ। যাত্রাবাড়ীতে তাঁর ১৬ শতাংশ জমি আছে। ৫৫ তনুগঞ্জ লেন, সূত্রাপুরে বাড়ি আছে তাঁর।
আছে উত্তরায় ৭ নম্বর সেক্টরের ৩৩ নম্বর সড়কের ১৮ নম্বর বাড়িতে ১৯৫৪ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাটও। এ ছাড়া দিলকুশায় ২৮৮১ বর্গফুট ও কাকরাইলে ৫৩০ বর্গফুট বাণিজ্যিক ফ্ল্যাটের মালিক তিনি। কিন্তু বিশেষ বিবেচনায় পূর্বাচলে ১০ কাঠা জমি ঠিকই নিয়েছেন ধনাঢ্য এই সাংসদ।
কুমিল্লা-৮ আসনের সাংসদ নাছিমুল আলম চৌধুরী রাজধানীর বনানীর পুরাতন ডিওএইচএসে ৪ নম্বর সড়কে একটি ফ্ল্যাটের মালিক। শতাধিক বিঘা জমি আছে তাঁর গাজীপুরে।
তবু ১০ কাঠা প্লট নিয়েছেন পূর্বাচলে।
আবার ঢাকা-১১ আসনের সাংসদ আসাদুজ্জামান খান (কামাল) মণিপুরি পাড়ায় একটি পাকা বাড়ির মালিক। এ ছাড়া মিরপুর ও মহাখালী এলাকায় সাড়ে আট কাঠা জমিও আছে আওয়ামী লীগের এই সাংসদের। আশুলিয়া থানা এলাকায় তাঁর জমি আছে ১৪৫ শতাংশ। কিন্তু পূর্বাচলে ১০ কাঠা জমি নিয়েছেন তিনিও।
পিরোজপুর-৩ আসনের সাংসদ আনোয়ার হোসেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ২৬ শতাংশ ও দুই কাঠার দুটি পৃথক জমির মালিক। সাভারে তাঁর পাঁচ কাঠার পৃথক দুটি প্লটও আছে। এ ছাড়া নিজের নামে ধানমন্ডির ৮/এ সড়কে একটি ফ্ল্যাটও আছে। আওয়ামী লীগের এই সাংসদও বিশেষ কোটায় পূর্বাচলে ১০ কাঠা জমি নিয়েছেন।
নওগাঁ-৩ আসনের সাংসদ আকরাম হোসেন চৌধুরীর স্ত্রী মাহফুজা খাতুনের নামে ঢাকায় ফ্ল্যাট আছে পাঁচটি।
আরও দুটি ফ্ল্যাট কেনার জন্য বায়না করেছেন তিনি। আকরাম হোসেন নিজের নামে পূর্বাচলে ১০ কাঠা জমি বরাদ্দ নিয়েছেন। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, সংরক্ষিত নারী আসনের সরকারদলীয় সাংসদ মমতাজ বেগম রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় চার কাঠা জমির ওপর তিনতলা বাড়ির মালিক। তিনিও পূর্বাচলে প্লট নিয়েছেন। একই দলের সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ জাহানারা বেগমের স্বামী তোফাজ্জল হোসেন সরকারের নামে পূর্ব হাজীপাড়া, খিলগাঁওয়ে তিন কাঠা জমির ওপর তিনতলা বাড়ি আছে।
নিজের নামে ১০ কাঠার প্লট নিয়েছেন তিনি পূর্বাচলে।
আবার নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ নজরুল ইসলাম (বাবু) দনিয়া মৌজায় সাড়ে আট কাঠা জমির মালিক। ঢাকায় বেইলি রোডে তাঁর একটি ফ্ল্যাট আছে। পূর্বাচলে ১০ কাঠার প্লট নিয়েছেন তিনিও।
টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এম হাফিজউদ্দিন খান সার্বিক বিষয়ে বলেন, এভাবে বিশেষ বিবেচনায় প্লট বরাদ্দ নিয়ে এই সাংসদেরা অন্যের অধিকার ক্ষুণ্ন করেছেন।
ঢাকা শহরে বসবাসের স্থায়ী ব্যবস্থা থাকতে তাঁরা আবার প্লট নিয়ে নৈতিকতাবিরোধী কাজ করেছেন।
এ ছাড়া আরও তিনজন সাংসদ উত্তরা ও রাজউক—দুই জায়গাতেই প্লট পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজউকের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা বলেন, একই ব্যক্তি দুই জায়গায় প্লট পেতে পারেন না। এমন হয়ে থাকলে অবশ্যই তাঁর বরাদ্দ বাতিল করা হবে।
- আরিফুর রহমান
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।