আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উচ্ছিষ্ট।

মানবিক, যৌক্তিক আর অযৌক্তিক। সোজা কথা আরেকটা মানুষ। দশ জনের ভীরে ডুবে থাকার প্রানান্ত চেষ্টায় থাকা মানুষ। বাবার গাঁয়ের গন্ধ মনে পড়েনা আর। ছাই হতে বসেছে দাদার মুখচ্ছবিটা, উদোম গাঁয়ের, শুভ্রতায় আঁকা শ্মশ্রু।

নানার বেঁকে চলা পথ, ঋজু শরীর, মেয়ের অপমানে চোখে জমাট অশ্রু। নাহ, মনে পড়ে না। খবর সেতো যার যার। ভুলতে বসেছি নানির হাতের স্পর্শ। কবরে শোয়ানোর মুহূর্ত, আলতো করে ঠেলে দেয়া দু’ মুঠো আনুষ্ঠানিক মাটি।

চোখে জোর করে ঠেলে আনা আধেক খানি ফোটাজল, হাতে স্তব্ধ শীতল পাটি। আরে না। আরে না। আরে নারে নারে না না না। আমি বালিশে মাথা চেপে রাখি, চোখের পাতা জোর করে এক করি।

বাবার ঘামে ভেজা শার্ট, নোংরা ঘাড়ের ছোঁয়া লাগা কলার, সস্তা সুতি লুঙ্গি, আমার এই মাথায় কিছুতেই বাড়ি খায় না। মাকে ডাকি, মায়ের মাঝে আবার বিলীন হবার দৃঢ় চেষ্টা আমার। মরণে ভয় নেই, প্রস্থানে ভয়। ভুলে যাচ্ছিই তো স্মৃতি সবার। দুষাই রে মা, জনম ক্যান দিলি মা ক্যান দিলি, যা বলে।

মা-রে তুইও যাস না আমার আগে চলে। অদ্ভুত মৃত্যু আঁধারে ডুবে যাবার অপেক্ষায় যেন, পা ফেলি, আলতো শব্দ। ছ্যাঁত করে ওঠে বুক। কান পাতি, প্রকৃতি স্বার্থপর হাসছে, যেন বর্ষা ছাপানো সুখ। মরব কিভাবে? সেকি এভাবেই, যেভাবে পুড়ে মরে তাজ্রিন।

সেকি এভাবেই, উপর নিচ দেয়াল এক হয়ে রুদ্ধ হয়ে থাকা আমার মগজ, রক্ত। মাংস, প্রান, আবেগ, অনুভূতি, কামনা- বাসনা???? সাধের ল্যাপটপ, একটু পর পর ঢু মেরে দেখা ফেবু আর ব্লগ। আমি নেই, তবুও ভরে যাবে লাশের প্রথম দিনের সৎকার চিত্রে। আমার স্থাবরের দিকে কিছু চোখ ঠিকই পড়বে ঠিকরে। আমি নেই কিন্তু, আমার জন্যে মাংসের স্বাদে মুখ ঠিকই ভরবে সব।

আবার কেউ ভুলবে আমায়, আমার গন্ধ, আমার ঘাম, আমার সিগারেটে শেষটান। উনত্রিশে, তিন পাতায় সঙ্গীরা আবার, মুখরিত হবে তুমুল আড্ডা আর গান। দেশ ঠিকই ফি বছর ভরে উঠবে বানে, অনন্ত দোলা জাগবে আবার কোটি প্রাণে। একটা মানুষ কেবল, মা আমার ঠিকই চেয়ে থাকবে তার অভদ্র, বেয়াদব বাবনার পানে। কি হতে পারে? রাস্তায় হাটছি, মাথায় বড়জোর গার্ডার এসে পড়লো, অথবা, পাশ থেকে, ওপর থেকে আমায় চুমু খেয়ে গেলো ভয়ানক দর্শন কোন ট্রাক।

মর্গে পড়ে থাকলাম দু’ একদিন নির্বাক। ছবি নিয়ে আপনজনের বুকফাটা আর্তনাদ। তখনো কি কেউ ঢুকে পড়বে ঘুরতে ঘুরতে এই বাড়িতে, আমি এখনো যেমন দেখি ইমন জুবায়ের তাকিয়ে আছেন শান্ত প্রাণে। তখনো কি কেউ ঢুকে পড়বে, আমার ফেবু দেয়ালে। পড়ে বিরক্ত হবে, অথবা হাসবে, অথবা... আমি যেমন হই তোরটাতে গিয়ে স্তব্ধ।

লাশপুরীতে বাঁচতে এখন ভয়ে ভয়ে থাকি, মরণ অনেক সোজাই সে কি? অসুস্থতা কোন টা বড়, কলজে পচন নাকি আমিই জড়? মরণ-রে আসিস না তুই সন্তর্পণে। ঘুমের মাঝে, নিজ যতনে। ঘুম পাড়াবি একটা বার- ই, স্মৃতির কিছু রাখিস। মরণ-রে তুই লোক ডাকিয়ে, পাড়ার সবার ঘুম ভাঙ্গিয়ে, আলতো হাত টি রাখিস। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.