নোয়াখালী বেগমগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের আন্দোলনরত বিএসসির ছাত্রদের সাথে ডিপ্লোমা কোর্সের ছাত্রদের দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয়পরে কমপে ১৫ছাত্র আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৫জনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২ থেকে এক ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে চৌমুহনী-মাইজদী সড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ উপস্থিত থাকলেও কাউকে আটক কিংবা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তেমন কোন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি।
একপর্যায়ে দুপুর দুইটায় কলেজ কর্তৃপ অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে। এদিকে কলেজের একাধিক শিকের বিরুদ্ধে ডপ্লোমা শিার্থীদের প্ররোচনার অভিযোগ উঠেছে।
প্রত্যদর্শীরা জানায়, চার দফা দাবিতে আন্দোলনরত বিএসসি শিার্থীরা বুধবার দুপুরে অধ্যরে কে তালা দেয়ার অজুহাতে ডিপ্লোমা কোর্সের শিার্থীরা বৃহস্পতিবার সকালে পূর্বনির্ধারিত মধ্যম পর্ব পরীা অংশ না নিয়ে অধ্যরে করে তালা ভাঙ্গে এবং বিএসসি শিার্থীদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে বিােভ মিছিল করে। একপর্যায়ে তারা কলেজের গেইট বন্ধ করে বিএসসির ছাত্রছাত্রীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা দেয়। এনিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে লাঠিসোটা নিয়ে ডিপ্লোমার ছাত্ররা গেইটের ভিতরে এবং বিএসসি ছাত্ররা গেইটের বাইরে অবস্থান নেয়।
খবর পেয়ে সহকারি পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) আলী হোসেন ও বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ কলেজ গেইটে অবস্থান নেয়। দুপুর ১২টায় পুলিশ বিএসসি ছাত্রদের ক্যাম্পাসে ঢুকানোর উদ্যোগ নিলে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উভয়পরে মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। শুরু হয় বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিপে। এসময় পুলিশে সামনেই ডিপ্লোমার ছাত্ররা ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে বিএসসির ছাত্রদের ওপর হামলা করলে বেগমগঞ্জের চৌরাস্তা পর্যন্ত সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ডিপ্লোমা ছাত্ররা সংঘটিত হয়ে বিএসসির ছাত্রদের ধাওয়া করে এবং ধরে ধরে পিটুনী দেয়।
বিএসসির ছাত্র সোহাগ চৌরাস্তার একটি লন্ড্রী দোকানে আশ্রয় নিলে ডিপ্লোমার ছাত্ররা সেখানেও হামলা করে সোহগের ওপর হামলা চালায়।
দীর্ঘ এক ঘন্টারও বেশি সময় ধরে থেমে থেমে সংঘর্ষ চললেও পুলিশ কোন লাঠিচার্জ কিংবা এ্যাকশনে যায়নি। হামলা ও সংঘর্ষে উভয়পরে কমপে ১৫জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে ছোটন (২২), শহিদুল (২০), মিরাজ আহম্মেদ (২৩), মামুন (২৪) ও শরীফ (২৪)কে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়া আহত কামরুল (১৯), রবিন (২৩), হিমেল (২২), মাইদুল (২৩) ও সোহাগ (২২)সহ অন্যদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়।
এদিকে ডিপ্লোমা ছাত্ররা ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএসসির আবাসিক ছাত্রীদের বের করে দেয়। এসময় কান্না জড়িত কন্ঠে বিএসসির ২য় বর্ষের ছাত্রী জেরিন বলেন, তিন বছর ধরে এ কলেজে বিএসসি কোর্স চালু হলেও কোন শিক নিয়োগসহ শিার ন্যূনতম সুযোগ সৃষ্টি করা হয়নি। যখন আমরা আমাদের অধিকার নিয়ে আন্দোলন করতে গেছি তখনই ডিপ্লোমার ছাত্ররা অজ্ঞাত কারণে বারবার বাধা সৃষ্টি করছে। আজও (বৃহস্পতিবার) অশোভন আচরন করে হল থেকে বের হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
বিএসসির শিার্থীরা ডিপ্লোমা ছাত্রদের উস্কে দেয়ার জন্য কলেজের একাধিক শিককে দায়ী করে একই সাথে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করে এবং তাদের ওপর ডিপ্লেমা ছাত্রদের চোরগুপ্তা হামলার কথা জানায়।
এনিয়ে ডিপ্লোমার শিার্থীরা কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। তারা সাংবাদিকদের জানায়, বিএসসির ছাত্ররা অধ্য এবং শিকদের সাথে খারাপ আচরণ করেছে একারণে তাদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেয়া হবে না।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, সকালে উভয় পরে ছাত্রদের উত্তেজনার খবর পেয়ে ক্যাম্পাসে যান। পরে ডিপ্লোমার ছাত্রদের সাথে আলোচনা করে বিএসসির ছাত্রদের ক্যাম্পাসে ঢুকানোর উদ্যোগ নিতেই উভয় প সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পুলিশের হস্তেেপই পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং আহতদের উদ্ধার করে পুলিশের গাড়িতে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্য আবু নাছের শামীম জানান, ডিপ্লোমার ছাত্ররা অধ্য এবং শিকদের সাথে বিএসসির ছাত্রদের অশোভন আচরণের কথা বলে তাঁর করে তালা ভাঙতে গেলে তিনি বাঁধা দেন। এসময় পুলিশে খবর দিলে পুলিশ পৌঁছার পূর্বেই তারা তালা ভেঙ্গে ফেলে। এরকিছুণ পরই সংঘর্ষ বাধে। পরবর্তীতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেন। একাধিক শিকের বিরুদ্ধে ডিপ্লোমা ছাত্রদের প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগ তাঁর নজরে আসেনি বলে দাবি করেন তিনি।
#
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।