আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

'ছেলে' নিয়ে সেকালে ভাবা ভাবনা



“ছেলেরা পেছনে লাগলে ভালই লাগে, না রে?” এটা ছিল আমার স্কুলজীবনে শোনা অন্যতম সেরা একটা স্বীকারোক্তি। কথাটা বলেছিল আমার এক বান্ধবী। তখন ক্লাস টেনে পড়ি আমরা। ‘ছেলেরা পেছনে লাগা’ বিষয়টার সাথে অল্পবিস্তর পরিচয় সবারই হয়ে গেছে ততদিনে। আমি ওর কথাটা বিবেচনা করে বুঝতে পারলাম পুরোপুরি ভুল বলে নি সে।

দুইজন মিলে ভেবে দেখলাম আসলেই ছেলেদের মনোযোগ পেতে বেশ একটা খুশি খুশি লাগে। তবে সেই ছেলে হতে হবে “নর্মাল ছেলে” অর্থাৎ কিছুতেই কোন গুণ্ডামাস্তার গোছের কেউ না, সে ভদ্র টাইপ হবে, লাজুক হবে এবং পছন্দের কথাটা মুখে বলতে আসবে না, আচার আচরণে প্রকাশ হয়ে পড়বে। আহা কি মজার দিনই না ছিল! কিশোরকাল। বাসার আশেপাশের রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময়েও ক্রিকেট খেলতে থাকা ‘ছেলেরা’ নজর এড়াতো না। সারা পথ চিল্লাচিল্লি করতে করতে এলেও ক্রিকেট খেলোয়াড়দের মাঝ দিয়ে যাওয়ার সময় একটু ভাব নিতে হত।

সেই সাথে তাদেরকে যেকোন রকম গুজগুজ করতে দেখলেই একটা কপট বিরক্তি-‘এদের সমস্যা কি? মেয়েরা হেঁটে গেলেই আলোচনা শুরু করে। যত্তসব!’ সুন্দর করে সাজগোজ করে কোথাও যাবার সময় কেউ একটুও না দেখলে কি সাজটা ষোলআনা হত কখনও? বন্ধুরা কাউকে নিয়ে খোঁচা দিয়ে কথা বলতে গেলে যতই মেজাজ খারাপের ভান করা হোক না কেন, তলে তলে তো ঠিকই দারুণ লাগত সেই ‘ক্ষ্যাপানো’। ভার্সিটিতে ধীরে ধীরে ‘ছেলেরা’ স্বাভাবিক হয়ে আসতে শুরু করে। কিন্তু কারো ভাল লাগা পাওয়ার ইচ্ছা তখনও মরে যায় না। মনে মনে আফসোস ঠিকই চলতে থাকে-আমাকে কেউ চোখে দেখে না কেন? কেউ পছন্দ করে ফেলে না কেন? তখন সেই না দেখার পেছনে একটা দোষও বের হয়ে যায়, সেটা হল ‘ছেলেদের’ কাছে সুন্দর চেহারাই সব।

কিছুদিনের মধ্যেই মোবাইল ফোন হয়। আবার বান্ধবীদের সাথে আলাপ, ‘আচ্ছা তোরা সবাই দেখি মোবাইল নিয়ে এত ঝামেলায় পড়িস, আমাকে কেউ ডিসটার্ব করে না কেন রে?’ এখানেও আবার একমত হওয়া, একটা ‘ভাল’ ছেলে যদি অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ফোন নাম্বারটা যোগাড় করত! সেই ছেলের আবার আমাকে খুব ভাল করে জানতে চিনতে হবে। ফোন করে অবাক করে দেয়ার মত কথা বলবে যেগুলো কারো খেয়াল করার কথা না, জন্মদিনের দিন হ্যাপি বার্থডে উইশ পাওয়া যাবে, কিন্তু কিছুতেই বের করা যাবে না সে কে। তবে সবসময়ই সব কথার বড় কথা ছিল, ছেলেকে অবশ্যই ভালমানুষ হতে হবে, কারো কোন ক্ষতি করবে না, শুধু দূর থেকে ‘অ্যাডমায়ার’ করে যাবে। এখন অনেক বড় হয়ে গেছি।

এমন কত কি ভাবতাম মনে করে হাসি পেয়ে যায়। (শেষের একটা লাইন আমি তুলে নিলাম। আমার এক বড় ভাইয়ের একটা মন্তব্য পেয়ে, যেটা এখানে করা হয়নি, আলাদাভাবে পেয়েছি, মনে হয়েছে হয়তবা শেষ লাইনটা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হতে পারে যেটা কিনা আমার ভাবনার সাথে মিলবে না। ভাইয়াকে ধন্যবাদ। এবং তাকে জানিয়ে রাখছি আমি আসলেই একজনের মনোযোগ নিয়েই খুশি থাকতে পারি।

আমি চাই যেন একজন গুণী মানুষ হই আর সবাইকে যেন গুণ দিয়ে জয় করতে পারি, সবার সম্মান পেতে পারি। এর বেশি কিছু না। )

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.