ঢাকা শহরে আমার কয়েকটা প্রিয় চায়ের দোকান আছে। প্রতিটা দোকান রাস্তার পাশে। আমি প্রতিদিন কোন একটা চায়ের দোকানে যাই। না গেলে আমার ভালো লাগেনা। এই সব চায়ের দোকানে কত মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে।
কবি,সাহিত্যিক,সাংবাদিক,পাড়ার মাস্তান,রিকশাওয়ালা,ফকির। প্রতিটা মানুষই আলাদা আলাদা চরিএ।
রেললাইনের পাশে একটা চায়ের দোকান,আমি এখানে বেশী যাই। আমার খুব ভালো লাগে। একটু পরপর ট্রেন যায় আসে,কু ঝিক ঝিক শব্দ।
রেল লাইনের ওপাশে বস্তি। ছোট ছোট বাচ্চারা খেলা করে,দেখতে ভালো লাগে। একদিন সন্ধ্যায় বসে আছি একা। কোন বন্ধুরা এখনো আসেনি। আমরা সব বন্ধুরা মিলে জটিল সব বিষয় নিয়ে আড্ডা দেই।
সাথে থাকে চুন্নু মামার চা,সিগারেট।
হঠাৎ রেল লাইনের ওপাশে তাকিয়ে দেখি অনেক মানুষের ভীড়। আমি ভীড় সরিয়ে সামনে এগিয়ে দেখি-১৭/১৮ বছরের একটা মেয়েকে দুই তিন জন ধরে চোখে সরিষার তৈল দিচ্ছে। মেয়েটা কষ্টে ছট ফোট করছে। মেয়েটাকে জীনে ধরেছে।
খারাপ জীন। সরিষার তৈলে কাজ হয়নি। এখন নাকে সুকনো মরিচ পড়া দিচ্ছে। এই সব দেখে আশে পাশের মানুষ খুব মজা পাচ্ছে। তাদের চোখ চক চক করছে।
পড়া মরিচ দিয়েও ফাযিল জীনটাকে দূর করা গেলো না। তিন জন মানুষ মেয়েটাকে ধরে রেখেছে,আর একটা লোক মেয়েটার গলায় পাড়া দিয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন মেয়েটা আর নড়তে পারছে না। মূখ দিয়ে লালা গড়িয়ে পড়ছে। মোটা লোকটা এই বার চিৎকার করে বলে ঊঠল-সবাই সরে দাঁড়ান জ়ীনকে যাওয়ার রাস্তা দিন বলে মেয়েটার একটা আঙ্গুল ঊল্টো করে ধরলো!মেয়েটা যে কী ভয়ানক একটা চিৎকার দিল।
আমার পক্ষে এই সব আর সহ্য করা সম্ভব না। কিছু একটা করতে হবে। আমি এখন দুটা কাজ করব। ওই তিনটা লোককে হাতের আঙ্গুল উল্টো করে ধরবো আর মেয়েটাকে ভালো একটা ডাক্তার দেখাব।
কিন্তু কি আশ্চর্য আমি কিছুই করলাম না অন্য সবার মতো চুপ করে দেখলাম।
তারপর মাথা নিচু করে চলে এলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।