রঙ্গিলা বন্ধুরে....... i_mahmud2008@yahoo.com
ইসমাইল মাহমুদ
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় নববর্ষেও প্রথম দিনে বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী সিমা বেগম। স্থানীয় প্রশাসনের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে ১ জানুয়ারি দুপুরে মহা ধুমধামে বাল্য বিয়েটি সম্পন্ন হয়। বাল্য বিয়ের রোধের ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে সমাজসেবা কর্মকর্তা থানা পুলিশের সহায়তা চেয়েও পাননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাল্য বিয়ের এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় চলছে তোলপাড়।
কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের লাংলিয়া গ্রামের আনোয়ার মিয়ার মেয়ে সিমা বেগম লাংলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী।
পারিবারিকভাবে তার বিয়ে ঠিক হয় রহিমপুর ইউনিয়নের বড়চেগ গ্রামের সাবেক ইউপি মেম্বার ওয়াহাদ উল্লার ছেলে হারুন মিয়ার সঙ্গে। বিয়ের তারিখ নির্ধারিত হয় ১ জানুযারি। ছুটিতে ঢাকায় অবস্থানরত কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকাশ কান্তি চৌধুরী এ খবর পেয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সুরজিৎ পালকে যে কোন প্রকারে বাল্য বিয়েটি রোধের নির্দেশ প্রদান করেন। সমাজসেবা কর্মকর্তা নির্দেশ প্রাপ্ত হয়ে ৩১ ডিসেম্বর লাংলিয়া গ্রামে যান। সেখানে বাল্য বিয়ের আয়োজন দেখে তিনি কনের অভিভাবকদেও সাথে কথা বলেন।
কিন্তু তাদেও কাছ থেকে ফলপ্রসু কোন বক্তব্য না পেয়ে ওই বিয়ে রোধে কমলগঞ্জ থানার সহায়তা চান। কিন্তু পুলিশের কাছ থেকে তিনি কোন সহায়তা পাননি। ফলে সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে ১ জানুয়ারি সম্পন্ন হয় বাল্য বিয়েটি।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকাশ কান্তি চৌধুরী জানান, কমলগঞ্জ থানার ওসি মোঃ নাজিম উদ্দিন তাকে এ বাল্য বিয়ে রোধ করা হবে বলে নিশ্চিত করেছিলেন। তারপরও এটি রোধে পুলিশের কোন কার্যকর পদক্ষেপ ছিল না।
নববর্ষের প্রথম দিনে কমলগঞ্জে বাল্য বিয়ে হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক।
লাংলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সিমা আমার বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। আমরা ঘটনা সম্পর্কে বিয়ের দুদিন পূর্বে অবহিত হলেও আমাদের কিছুই করার ছিল না।
কমলগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিসার সুরজিৎ পাল জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছ থেকে নির্দেশপ্রাপ্ত হয়ে আমি বাল্য বিয়েটির আগেরদিন এলাকায় সরজমিনে পরিদর্শণ করে বাল্য বিয়ে রোধে প্রচেষ্টা চালাই। কিন্তু কনে পক্ষের অনঢ়তার কারনে ব্যর্থ হয়ে আমি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সহায়তা চাই।
কিস্তু থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিখিত অভিযোগ ছাড়া সহায়তা করতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। পুলিশের সাহায্য না পাওয়ায় বাল্য বিয়েটি ঠেকানো সম্ভব হয়নি।
কমলগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি সুব্রত দেবরায় সঞ্জয় জানান, শুক্রবার সকালে বাল্য বিয়ের এ ঘটনা শুনে তাৎক্ষনিকভাবে প্রেসক্লাবের পক্ষে মৌলভীবাজারের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথকে অবহিত করা হয়েছিল। তারপরও বাল্য বিয়ে ঠেকানো গেল না।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ নাজিম উদ্দীন জানান, বিষয়টি তিনি মৌখিকভাবে জেনেছেন।
লিখিতভাবে কেউ অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ থাকলে তিনি অবশ্যই সহযোগিতা করতেন।
বাল্য বিয়ের শিকার সিমা বেগমের মামা কামাল মিয়া জানান, সিমার বর্তমান বয়স ১৪ বছর। ভাল বর পেয়েছেন বলে বিয়েটি দেয়া হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।