এই দেশে এখনও পক্ষ দুটোই । রাজাকার - যুদ্ধাপরাধী বনাম মুক্তিযোদ্ধা।
মৌলবাদী হায়েনা বনাম মুক্তিকামী মানুষ।
২০০৯ এর বিজয় দিবসে এসে একাত্তরের আলবদর বাহিনীর ঘাতক নেতা আলী আহসান মুজাহিদ বলেছে, তারাই নাকি বিজয় এনেছিল! তারা ই বিজয় ধরে রাখবে !!
কী ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে রাজাকার । কী বলতে চাইছে তারা ।
ওরা আরও বলেছে , তাদের দলের সদস্য নাকি ৭০ লাখ !
যদি তাই হয় , তবে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের এমন ভরাডুবি হলো কেন ?
মিথ্যুকরা সবসময়ই মিথ্যা বলে। সুযোগ বুঝে শুধু কথার ধরণ পাল্টায়।
এই বিজয় দিবসেও তারা মিথ্যাবাদিতায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে মাত্র।
................
বছরের একটি দিনে রাজাকার ঘৃণা দিবস পালনের আহ্বান জানিয়েছেন বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান এর স্ত্রী মিলি রহমান।
শহীদ জায়া বলেছেন , রাজাকারদের তালিকা তৈরি করা হোক ।
দৈনিক ভোরের কাগজ কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছেন ,
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না হবার কারণেই এই হায়েনারা এখনও না না
ধরনের আসকারা দেখাবার সাহস পাচ্ছে ।
( দেখুন - দৈনিক ভোরের কাগজ / ১৬ ডিসেম্বর ২০০৯ )
বছরের একটি দিন রাজাকারদের প্রতি ‘ঘৃণা দিবস’ পালন করার আহ্বান জানিয়ে মিলি রহমান বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই শুনে আসছি মুক্তিযোদ্ধাদের লিস্ট তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু আমার মনে হয় যুদ্ধের পরই উচিত ছিল রাজাকারদের লিস্ট তৈরি করা।
স্বাধীনতার পর যদি সমস্ত রাজাকারদের নামের লিস্ট তৈরি করে গ্রামেগঞ্জে সবখানে ছড়িয়ে দেয়া যেতো, তাদের জঘন্য কার্যকলাপের বিবরণী ছাপা হতো পত্রপত্রিকায়, তাহলে আজ দেশের এমন অবস্থা হতো না। তাহলে আর রাজাকাররা কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ক্ষমতায় আসতে পারতো না।
নতুন প্রজন্ম শুনছে, দেখছে, জানছে সেইসব চিহ্নিত মানুষগুলোর অবস্থান। কীভাবে বুক টান করে গলা উঁচু করে বড় বড় কথা বলে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুদ্ধাপরাধীদের এখনো খুঁজে বের করে তার বিচার হয়। আর এই দেশে যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার, আলবদর, আলশামসদের বিচার করা তো দূরের কথা, তাদের সংসদে বসানো হয়। তিনি বলেন, সোনার বাংলা তৈরির স্বপ্নটাকে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য ৭ কোটি বাঙালি যুদ্ধ করেছিল।
দক্ষ সামরিক বাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অদক্ষ কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র এমনকি রাস্তার পাশের আধপেটা খাওয়া ভিক্ষুকও সেদিন এক সারিতে দাঁড়িয়ে সমানে লড়েছিল। তাদের একটাই চিন্তা ছিল আর বেশি দেরি নেই, দেশটা স্বাধীন হলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। দেশের মানুষ দুবেলা দুমুঠো ভাত খেয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবে। স্বাধীনতাবিরোধীদের ধরে একজন একজন করে সবার সামনে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিচার করবো। কিন্তু বাস্তবে এসব কিছুই হলো না।
বেইমানি করা হলো ছোপ ছোপ তাজা রক্তের সঙ্গে। বেইমানি করা হলো মা-বোনদের আর্তচিৎকারের সঙ্গে, মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে। মাফ পেয়ে গেলো যুদ্ধাপরাধীরা।
সত্যি ইতিহাস জানার জন্য নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান মিলি রহমান। তিনি বলেন, দেশের যুবসমাজের কাছে একটিই অনুরোধ, তোমরা যে দেশে জন্ম নিয়েছ, সে দেশের ইতিহাস যেমন করুণ, তেমনি গর্বের।
সঠিক ইতিহাস জানতে চেষ্টা করো। তারপর নিজের বিবেক বুদ্ধি দিয়ে কাজ করো। অযথা হাত রাঙিও না। এখনো এ দেশে ক্ষেতে লাঙল চালালে যে মাটি উপরে উঠে আসে তাতে কতো যোদ্ধার রক্ত মিশে একাকার হয়ে আছে তা কে জানে। এখনো মাটিতে খুব সাবধানে পা ফেলতে ইচ্ছে করে।
কী জানি কে কোথায় বলে ওঠে, আস্তে হাঁটো পথিক! আমি এখানে ঘুমিয়ে আছি।
....................
আমরা দেখছি কিছু ব্যক্তি আমাদেরকে নিরপেক্ষ থেকে সঠিক ইতিহাস জানার উপদেশ শোনাচ্ছে ।
তাদেরকে সবিনয়ে বলি , মুক্তিযুদ্ধ নিরপেক্ষ ছিল না ।
যুদ্ধ ছিল হায়েনাদের বিপক্ষে , মুক্তিকামী মানুষের।
তাই আজ যারা নিরপেক্ষ হবার বাণী শোনায় , এরা রাজাকারদেরই
উত্তরসূরি ।
এদেরকে চিনে রাখা প্রজন্মের প্রধান দায়িত্ব ।
ছবি- সব্যসাচী হাজরা
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।