আমরা যদি না জাগি মা, কেমনে সকাল হবে...
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফোর্টহুড সেনাঘাঁটিতে সেনা কর্মকর্তা নিদাল হাসানের এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণে ১৩ সেনার মৃত্যুর পর মার্কিন গণমাধ্যমের আচরণ, তাদের সংবাদ প্রকাশের ভঙ্গি নিয়ে একটি বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেছেন আমেরিকান ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ কমিউনিকেশনের সহকারী অধ্যাপক অ্যাঞ্জি চুয়াং। যদিও প্রায় ক্ষেত্রেই মার্কিন গণমাধ্যমের একচক্ষু আচরণ নতুন কোনো বিষয় নয় আলোচনার, তবু অ্যাঞ্জি চুয়াংয়ের লেখাটিতে ভাবনার রসদ আছে বলে মনে হল।
যুক্তরাষ্ট্রের দুটি প্রধান দৈনিকের উদাহরণ দেখিয়েছেন তিনি। ফোর্ডহুডের ঘটনার পর ওয়াশিংটন পত্রিকার শিরোনাম- Army Suspect Said 'Allahu Akbar!' Before Shooting এবং ওয়াশিংটন পোস্টের শিরোনাম ছিল- Suspect Devout Muslim from VA, Wanted Army Discharge, Aunt Said.
লক্ষ্য করার বিষয় হল, অভিযুক্ত নিদাল হাসান যে প্রতিদিন সিলভার স্প্রিংয়ের মুসলিমদের সঙ্গে নামাজ আদায় করতেন, তার বর্ণনা দিয়েই শুরু হয়েছে ওয়াশিংটন পোস্টের সংবাদটি। কলেজ পার্কের দ্য মুসলিম লিংকের সম্পাদক মিনহাজ হাসানকে উদ্ধৃত করে লেখাটিতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, একজন সাধারণ মুসলিম দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেই পারেন, কিন্তু ফোর্ট হুডের ঘটনার সঙ্গে তার যোগসূত্র কী? কেনই বা সংবাদে ধর্মপালনের বিষয়টি প্রধান হয়ে উঠবে? মিনহাজ হাসান বলেন, যখন কোনো মুসলমান অপরাধ করে, তখনই ধর্মকে অভিযুক্ত করা হয়।
এই সূত্রে অ্যাঞ্জি চুয়াং প্রশ্ন তুলছেন, যদি নিদাল হাসান খ্রিস্টান হতেন কিংবা যদি তার ধর্মবিশ্বাসের সঙ্গে 'গড' বা 'যীশু' শব্দটি জড়িত থাকতো, তাহলে সহযোদ্ধাদের গুলি করার দায়ে তার ধর্ম কিংবা চার্চে যাওয়া কি সংবাদের শিরোনাম হতো?
তিনি বলছেন, আমি স্মরণ করতে পারছি না ওকলাহোমার ভয়াবহ সেই বোমা হামলায় মূল অভিযুক্ত টিমোথি ম্যাকভেইয়ে ধর্ম পরিচয় কী ছিল? কলাম্বিয়ান স্কুল হত্যাকান্ডের এরিক হ্যারিস কিংবা হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে গুলি চালানো জেমস ডব্লিউ ভন ব্রুনের ধর্ম নিয়ে গণমাধ্যমে কি কখনো কোনো কথা উঠেছে?
চুয়াং বলেন, আমি খুবই অবাক হয়ে যাই, যখন সেনাবাহিনীর মনোরোগ চিকিৎসক নিদাল হাসানের মানসিক অস্থিরতার বিষয়টি দ্বিতীয় হয়ে ওঠে, আর ধর্ম হয়ে ওঠে প্রথম। পথচারী থেকে শুরু করে সাংবাদিক- সবাই তাকে আমাদের মতো নয় হিসেবেই শনাক্ত করেছে। মার্কিন সাংবাদিকরা নিদাল হাসানকে সবার আগে 'মুসলিম' হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিতেই ব্যতিব্যস্ত ছিল।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।