আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মানুষের আত্মায় রয়েছে বিভিন্ন প্রবৃত্তি বা প্রবণতা



মানুষের আত্মায় রয়েছে বিভিন্ন প্রবৃত্তি বা প্রবণতা। এসব প্রবৃত্তিকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা ও ব্যবহার করা সম্ভব হলে মানুষ পরিপূর্ণতার চরম শিখরে আরোহণ করতে সক্ষম হবে। মানুষের সমস্যা হল তারা অসচেতনতা বা উন্মত্ত অবস্থা থেকে মুক্ত নয়। প্রতিটি মানুষের ভেতরে থাকা এই যে উন্মত্ততা তাকে অবশ্যই নিয়ন্ত্রিত রাখতে হবে। মহান আল্লাহর স্মরণ ও আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়ার মাধ্যমে এই লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।

নামাজে আল্লাহর স্মরণ শানিত ও প্রদীপ্ত হয়। মানুষ যখন নামাজ পড়ে তখন তার ভেতরের সতর্ককারী বিবেক সজীব বা প্রাণবন্ত হয়। এ বিবেক তাকে বার বার অশ্লীলতা ও অন্যায়ের ব্যাপারে সতর্ক করতে থাকে। এ বিষয়গুলোর উচ্চারণ ও পুনরাবৃত্তি অন্তরকে বিনম্র এবং ভীত-সন্ত্রস্ত রাখে। এ জন্যই বার বার নামাজ পড়ার বিধান দেয়া হয়েছে।

রোজা বছরে একবার, হজ্বও একবার, কিন্তু নামাজ বার বার পড়তে হয় বা পড়া অবশ্য পালনীয় কর্তব্য। নামাজের বিশেষ গুরুত্ব এখানেই। নামাজ পড়ার মাধ্যমে মানুষের দেহ ও অন্তর সমাজ থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও নিরাপত্তা অনুভব করে। নামাজ বিনয় ও মনোযোগসহ পড়া হলে শুধু নামাজীর অন্তরই নয়, একইসাথে তার আশপাশের পরিবেশও কোমল, বিনম্র ও সুরভিত হয়। সমাজে প্রকৃত ও বিনম্র নামাজীর সংখ্যা যত বাড়বে ততই স্বার্থপরতা, সংকীর্ণতা, লোভ-লালসা এবং অন্যায়-অবিচারের অন্ধকার কমে যাবে, বরং মুক্তি ও কল্যাণের আলো দিনকে দিন মানুষের মধ্যে প্রদীপ্ততর হয়ে উঠবে।

নামাজ নিজেকে উন্নত করার মাধ্যম। আর এ জন্যই হাদীসে নামাজকে ধর্মের স্তম্ভ বলা হয়েছে। অর্থাৎ সমস্ত কল্যাণ ও পরিপূর্ণতার কেন্দ্রবিন্দু হল নামাজ এবং আল্লাহর সাথে সম্পর্ক। এ কারণেই সমস্ত খোদায়ী বা ঐশী ধর্ম প্রথমেই মানুষকে নামাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। নিয়াত ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যমে নামাজ শুরু করতে হয়।

আল্লাহর নৈকট্য অর্থ মহান আল্লাহর নামগুলোর দীপ্তীকে ধারণ করার যোগ্যতা অর্জন যে নামগুলোর মূল কেন্দ্রবিন্দু হল সমস্ত সৌন্দর্যের এবং চূড়ান্ত পরিপূর্ণতার জ্ঞান। নামাজের মাধ্যমে নামাজী খোদায়ী জ্ঞানের মহাসাগরে প্রবেশ করে। নামাজ যদি শুধু আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য পড়া হয় তাহলে সমস্ত অজ্ঞতা ও অন্ধকার উজ্জ্বল আলোয় রূপান্তরিত হবে। নামাজের রয়েছে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক দিক। বাহ্যিক দিকের সৌন্দর্য ছাড়াও এর অন্তর্নিহিত চেতনার রয়েছে অশেষ প্রভাব।

আল্লাহর সাথে বান্দার একান্ত ও একনিষ্ঠ কথোপকথনের প্রশান্তিদায়ক প্রাণস্পর্শী দৃশ্য দেখে বিমুগ্ধ হয়ে পবিত্র ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয় বহু মানুষ। এমনকি অনেক অমুসলমানও নামাজের স্বর্গীয় আধ্যাত্মিক দৃশ্যে বিমোহিত হয়ে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছেন। ২২ বছর বয়স্ক ফরাসী যুবক জ্যাক এভাবেই সুপথ তথা সিরাতুল মোস্তাকিম পেয়েছেন। নওমুসলিম মুহাম্মাদ ওরফে জ্যাক এ প্রসঙ্গে বলেছেন,একদিন প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে করতে এক ক্ষেতের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। এ সময় দেখলাম এক ব্যক্তি ক্ষেতের পাশে নামাজ পড়ছিলেন।

তার সমস্ত মনোযোগ যেন একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে কেন্দ্রীভূত ছিল । তার নম্রতা ও আদব-কায়দায় বোঝা যাচ্ছিল যে তিনি একজন উপস্থিত এবং জীবন্ত ব্যক্তির সাথে কথা বলছিলেন। তাই দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলাম এবং তার প্রার্থণার প্রতি আকৃষ্ট হলাম। এরপর এ বিষয়ে গবেষণার সিদ্ধান্ত নেই। আর এটাই আমাকে শেষ পর্যন্ত ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করেছে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.