ফ্রেমে ফাগল....
গতকাল থার্ডপারসন সিংগুলার নাম্বার এর প্রিমিয়ারে গেছিলাম। পুরো টেলিভিশন মিডিয়ার লোকজন আসছিলেন প্রিমিয়ার দেখতে। পাবলিশিং মিডিয়ার লোকরাও আইছিলেন। জমজমাট এক শো। সিনেপ্লেক্সে লোক জনের যায়গা দেয়াই মুশকিল হইছিল।
তবে ভিড়-ভাট্টা ভালভাবেই নিয়ন্ত্রন হইছিল। অনেকের সাথেই দেখা হইছিল যাদের সংগে আমার দীর্ঘদিন দেখা হয়নাই। সবাই মোটামুটি একধরনের ভালছবির প্রিমিয়ার দেখবেন বলে আইছিলেন। মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তার এই ছবি কে আর্ট-ফিল্ম বলতে নারাজ। তিনি এই ছবিটাকে বললেন হার্ট-ফিল্ম।
ছবি শুরু হয় জেইল্ড আসামী মুন্নার (মোশাররফ করিম) স্ত্রী রুবা (তিশা)'র অসহায়ত্ব নিয়া। পরিবারহীনা রুবার থাকার যায়গা নিয়া অনিশ্চয়তার বিষয়কে কেন্দ্র করে আগায়া যায় ছবির কাহিনী। একজন একা নারী এই সমাজে কতরকম, কত ঘরাণার সামাজিক, অর্থনৈতিক, মানসিক ও শারীরিক সমস্যার সম্মুথীন হন এই বিষয়টা নিপুনভাবে তুলে আনছেন চলচ্চিত্রকার। ছবিটার মধ্যে নারীশৃংখলের নানা রূপ ও তার ফলাফল যেভাবে এসেছে তা এর আগে কোন বাংলা সিনেমায় এত যথার্থ ভাবে আসছে কিনা আমার জানা নেই।
ছবির এক তৃতীয়াংশ শেষ হওয়ার পর, রুবার নিজেকে আবিষ্কারের দৃশ্যায়ন গুলো মন কাড়ার মত।
রুবার কৈশোর ও শৈশবের সাথে বতর্মান রুবার সাইকেডেলিক কনভার্সেশন, ঝগড়া এবং সিদ্ধান্ত আবার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ডিলেমা মন-সুড়ঙ্গের বিভিন্ন বাঁক-উপবাঁক আলোকিত হয়ে দর্শক মনে ভীষন প্রভাব ফেলে। ফারুকী শুধু রুবার মনস্তত্ব দেখায়েই চুপ করে যান নাই, তিনি রুবার বতর্মান প্যাট্রোনাইজার কাম আশিক, তপুর (গায়ক তপু)'র সাইকোএনালাইসিস ও করেছেন। যে শিল্পী (তপু) সে তো নিয়ম ভাঙ্গবেই।
এদিকে রুবা আর তপুর মধ্যকার ক্যামিস্ট্রি যখন ঘনীভুত তখন জেইল থেকে ছাড়া পেল মুন্না। একদম মোক্ষম ক্লাইমেক্স।
এরপর আমি আর বলবনা হলে যেয়ে বাকি টা দেখে নেন। জেইলের ভিতরে মুন্নার সাথে রুবার সংলাপ অসাধারন লেগেছে। একজন জেইল বন্দী আর আরেকজন সমাজ ও তার চারপাশ দ্বারা ক্যাপটিভেটেড। আসলে দুজনেই বন্দী দুটো ভিন্ন জেইলে। যারা উভয়েই নিস্তার পেতে চায়, মুক্ত হতে চায়।
ছবিটা শেষ হয় মুক্তি দিয়ে, আহা! লং ওয়েটেড ফ্রিডম। তবে দশর্কদের কাছে প্রশ্ন থাকে কে আসলে এই 'থার্ড পারসন সিংগুলার নাম্বার' রুবা? মুন্না? না তপু?। আমার তো মনে হলো ফারুকী নিজেই; আপনার কি মনে হয় তা জানার জন্য ছবিটা দেখেন, মিস কইরেন না।
স্বাধীনতাহীনতায় কে বাচিঁতে চায়? 'ফ্রিডম ফর অল' এই ছবির সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব। এককথায় বলা যায়, বাংলা চলচ্চিত্রে থার্ড পারসন সিংগুলার নাম্বার একটা সিনে-বিপ্লব।
সবশেষে, হ্যাপি এন্ডিং উইথ এ থ্রি-সাম লিভ-টুগেদার। ;p
বি: দ্র: ছবির গান নিয়ে কিছু বলার নাই। পাঠক, দশর্ক-শ্রোতারা নিশ্চয়ই গান গুলো সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।