নৌকা আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে সোনার বাংলার খোয়াব দেখা আর মান্দার গাছ লাগিয়ে জলপাইর আশা করা একই! বিস্ময়ের ব্যাপার হল দিনের পর দিন আমরা তাই করছি!!
'লিখতে জানা মানুষ কি বেশি লিখে' প্রশ্নের উত্তরে গবেষকরা পেয়েছেন 'নিজের নাম। ' আসলেই কারনে অকারনে আমরা নিজের নাম লিখি। আর স্বাক্ষর করার মত চাকরি করলে তো কথাই নেই। আবার প্রবাসিরা প্রথম সাক্ষাতে 'দ্যাশের কি খবর' বা 'বিএম্পি,' 'আমিলীগ। ' তেমনি বাংলাদেশের মানুষ যে কটি শব্দ নিয়ে বেশির ভাগ সময় ব্যস্ত থাকে তার একটি 'গ্রামীণফোন,' 'গ্রামীণ,' 'গেরামিন পোন,' 'জিপি' ইত্যাদি।
কি বেডরুম, বৈঠক খানা, হাটবাজার, মসজিদের চত্বর, বিবাহের মজলিশ অথবা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেনীকক্ষ। সর্বত্রই মোবাইল, গ্রামীন, বাংলালিংক বা একটেল। মাত্র ১০ বছরের মাথায় সম্পুর্ন 'অচেনা নতুন' একটি শব্দ বাংলাদেশে বিস্ময়কর ও মাত্রাতিরিক্ত আলোচ্য শব্দে পরিনত হয়েছে। তা গালিগালাজ, নিন্দা, প্রশংসা, আলোচনা, বিতর্ক যে কারনেই হোক! কাছাকাছি যে শব্দটি চেনা ছিল তা হল 'গ্রামীণব্যাংক। ' তবে নেহায়েৎ 'ফকিরনীদের ব্যাংক' বলে তা কখনোই 'সূধীমহলে'র বালিশকথনে এজেন্ডাভুক্ত হতে পারেনি!
ক্ষুদ্র বাংলাদেশের বিশালতম এ কোম্পানির গত বছরের সেলস রেভিনিউ ছিল ৬৬০০ কোটি টাকা (প্রায়)! এর আনুমানিক এসেট ভ্যালু ৩০,০০০ কোটি টাকা, যা আমাদের বাজেটের প্রায় ১/৩ অংশ! অর্থাৎ ৩টি জিপিকে বেচতে পারলেই বাংলাদেশ ১ বছর চলবে!! সরাসরি প্রায় ৫০০০ (গ্র্যাজুয়েট) ও থার্ড পার্টির প্রায় ৫০০০ লোক এখানে চাকরি করে।
জিপির শ খানেক ডিস্ট্রিবিউটর, লক্ষাধিক রিটেইলার ও সাপ্লাইয়ার প্রতিস্ঠানে কর্মরত আরও লক্ষাধিক লোক। নিছক 'ব্যবসা প্রতিস্ঠানের' গন্ডি ছাড়িয়ে ১২ বছরে জিপি এখন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক মহীরুহ। একে নিয়ে নানান কথা উপকথা। আসলে কেমন এর ভেতরটা? চলুন দেখি (তথ্যসুত্র: গ্রামীনফোনে চাকরি, ২০০৬-২০০৯):
ক্যামনে চাকরি হবে জিপিতে?
একসময় বিডিজবস্.কম ভর্তি থাকত জিপির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে। লেজ ধরে তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে লম্বা ফরম ফিলাপ।
কিন্তু কাংখিত ডাক আসেনি। এমনকি 'যেকোন বিষয়ে স্নাতক' চাওয়ার বিপরীতে আবেদন করেও না! সবগুলি প্রথম বিভাগ/শ্রেনী, প্রয়োজনের চেয়ে ঢের বেশী কম্পিউটার জ্ঞান, একেবারে নিস্প্রয়োজন হলেও ইংরেজি ভাষায় অভ্যস্ততা ইত্যাদির 'ফেরী' করেও 'সেলিব্রেশন' পয়েন্টের মন গলেনি। লোকেরা বলত 'লোক না থাকলে ওরা ডাকে না। ' আমি অনেক খুঁজেও 'লোক' পাইনি। তবে এগিয়েছে ছাত্রত্ব।
আইবিএ র এমবিএ প্রোগ্রাম। হঠাৎ করে এমবিএর শেষ পর্বের দিকে গিয়ে কোনোএকদিন আমার ক্ষুদ্র একটেল নাম্বারে সুরেলা নারীকন্ঠ। 'মি. ....বলছেন? জ্বি। আপনার একটা রিটেন পরীক্ষা আছে.......। ' এর কিছুদিন পর '...আপনার একটা ইন্টারভিউ...।
' বুঝলাম ঠেলেঠুলে লিখিত পার হয়েছি। নির্দ্দিস্ট দিনে 'অফিসার- ক্রিয়েটিভ রাইটিং' পদের ঐ ইন্টারভিউতে 'আপনার তো এখনো এমবিএ শেষ হয়নি? স্যার আমি এখন ইভেনিং এ আছি। তাও আগামী মাসে শেষ হয়ে যাবে' ব্যাখ্যা সম্ববত: কতৃপক্ষের মন গলাতে পারেনি। কেননা এ বিষয়ে জিপি আর কখনোই কিছু জানায়নি! (চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।