নেহায়েত শীর্ণ এই বইটা পড়তে গিয়ে তার সম্পর্কে অনেক কথা মনে পড়ল। আহমদ ছফা এত অগোছালো মানুষ ছিলেন এই ডায়েরিতে তার লেখা যদি স্কেন করে তুলে না দিত তো আমি বিশ্বাসই করতাম না।
ডায়েরি বস্তুত নেহায়েত ব্যক্তিগত ব্যাপার। একেবারে অর্ন্তগত সিদ্ধান্ত ধারণা, মন্তব্য এই ভাবে ব্যাপারগুলো ঘঠতে থাকে। আহমদ ছফার এই ডায়েরিতে বার বার যে ক'জন মানুষের নাম আসছে।
তারা হলেন ফরহাদ মাজহার, মোর্শেদ শফিউল হাসান, আহমদ শরীফ, আব্দুর রাজ্জাক,, নুরুল হুদা, ও সাহিত্য জগতের বাইরের বেশ কিছু লোকজন। যাদেরকে টাকা ধার দিছেন অথবা তাদের কাছে ধার করেছেন।
আমার মধ্যে একটা prophetic property আছে। সেটিকেই পরিচর্যা করতে হবে। রাশি রাশি বস্তু ছেকে ছেনে পরীক্ষা করে দেখা আমার কর্ম নয়।
আমি তো অতি অনায়াসেই বস্তুর অন্তবর্তী জটসমূহ দেখতে পাই।
জাতীয় নিজের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ উপলব্ধি যেমন আছে। তেমনি প্রলাপের মতো উচ্ছাসপূর্ণ কথাবার্তাও আছে।
যেমন এক জায়গায় বলছেন, আমার মধ্যে দানা বাধার জন্য ইতিহাস অপেক্ষা করছে। আমার পর থেকে শুরু হবে অন্য এক ইতিহাসের ধারা।
ইত্যাদি।
বেশ ক'জন নারীর কথা আছে যাদের সাথে অদ্ভুদ এক দ্বন্ধিক বৈপরীত্যময় একটা সম্পর্ক তিনি টিকিয়ে রেখেছেন এবং তা তাতে তিনি দগ্ধ হয়েছেন।
ছফা ভাইকে আমি একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম। বিয়ে করেন নি কেন? জবাবে তিনি বলেছিলেন মানুষ বিয়ে করে কেন সেটা আপনাকে আগে দেখতে হবে। বংশরক্ষার জন্য।
তো আমার বইগুলোইতো আমার বংশ রক্ষা করবে।
যাইহোক তলে তলে ছফা যে একজন নারীর জন একটা সংসারের জন্য কীরকম কাঙাল ছিলেন তা এই ডায়েরিটা না পড়লে বুঝতে পারতাম না। শামীম, রোজি,শ্যমা, সুরাইয়া খানম সহ আরো দুতিন জন নারীর প্রতি নিজের আকর্ষনের কথা ব্যক্ত করেছেন।
তার মানষিক অবস্থাটা আসলেই একজন মৌলিক ক্রিয়েটিভ মানুষের ।
নিজকেই প্রশ্ন করছি, এই সমাচ্ছন্ন অন্ধকারে আমি কি নিজের গন্তব্য অভিমুখে অগ্রসর হতে পারছি।
এখনো তো কর্তব্যকর্মের মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে দিতে পারছিনে। প্রচন্ড একটা আমিত্ব এখনো চারদিকে বেস্টনী রচনা করে রেখেছে। চারদিকে যশ, মা,. সফলতা এবং কামনার স্রোত বইছে প্রবল বেগে, অথচ আমি যেনো কিছুতেই নেই।
হুমায়ুন আহমদ তার বলপয়েন্ট বইতে লিখেছিলেন আহমদ ছফার অনেক কথা তার স্বমস্তিস্কপ্রসূত। সত্যমিথ্যা জানিনা।
তিনি লিখলেন এখানে যে চেষ্টা করা সত্বেও লিবিয়ার দূতাবাস তাকে লিবিয়া যাবার ভিসা দিলনা। অথচ তিনি পরে অনেককে বলতে লাগলেন কিছু দিন অনুপস্থিত থাকার পর তিনি লিবিয়া গিয়েছিলেন মাথার টুপিটা দেখিয়ে বলছেন এটা গাদ্দাফি নিজহাতে তাকে পরিয়ে দিয়েছেন। এটা হুমায়ুন আহমেদের কথা। আর ছফা বারবার ডায়েরিতে লিখছেন তিনি আর মিথ্যাকথা বলবেন না।
যাইহোক বইটা পড়ে একজন মৌলিক লেখকের অন্তর্গত অনেক বিষয়ে উপলব্দি করা যায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।