রোববার সন্ধ্যায় আজিমপুর পর্যন্ত এসে তিনি হঠাৎ করেই ফিরে গেছেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হলেও হেফাজতের দাবি, তাকে সমাবেশে আসতে দেয়া হয়নি।
হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহনগরের প্রচার সম্পাদক আহমুদুল্লাহ ওয়াসেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নিরাপত্তাজনিত কারণে শফী হুজুর সমাবেশে যাচ্ছেন না। ”
দাবি দাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত মতিঝিলে অবস্থানের জন্য আহমদ শফী তাদের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন বলেও দাবি করেন ওয়াসেল।
অবশ্য সমাবেশস্থল থেকে মোবাইল ফোনে হেফাজতের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, “আহমদ শফীকে সমাবেশস্থলে যেতে দেয়া হচ্ছে না। ”
কারা যেতে দিচ্ছে না- জানতে চাওয়া হলে তিনি জবাব না দিয়েই ফোন কেটে দেন।
হেফাজতের এ অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (লালবাগ বিভাগ) হারুনুর রশীদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হুজুর সমাবেশস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েও শিক্ষাবোর্ডের সামনে থেকে ফিরে গেছেন। ”
গত ৬ এপ্রিল মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে উপস্থিত থাকলেও কোনো বক্তব্য দেননি আল্লামা শাহ আহমদ শফী। তার পক্ষে ছেলে আহমেদ আনাস একটি সংক্ষিপ্ত লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান।
এর আগে সন্ধ্যায় মূল মঞ্চ থেকে জানানো হয়েছিল হেফাজত আমির আল্লামা আহমদ শফী সমাবেশস্থলে উপস্থিত হয়ে পরবর্তী দিক নির্দেশনা দেবেন।
তবে তিনি না আসার পর সমাবেশ মঞ্চ থেকে জানানো হয়, দাবি আদায়ের আগে সমাবেশস্থল না ছাড়ার কথা বলেছেন আমির।
সরকারের আহ্বান সত্ত্বেও অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার এক পর্যায়ে ভোররাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে মতিঝিল ছাড়তে বাধ্য হয় হেফাজতকর্মীরা।
তবে ওই সময় হেফাজতের কোনো নেতাকে মতিঝিলে দেখা যায়নি। সমাবেশ থেকে হটিয়ে দেয়ার তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়াও হেফাজতে নেতাদের কাছে পাওয়া যায়নি।
রোববার সমাবেশে যোগ দেয়া হেফাজতকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিস্থান-পল্টন এলাকায় তিনজন নিহত হন। হেফাজতকর্মীরা আগুন দেয় সিপিবি ভবনসহ পল্টন ও বায়তুল মোকাররম এলাকার অসংখ্য দোকানে।
দুপুরে সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার পর ঢাকার প্রবেশ পথে অবস্থান নেয়া হেফাজতকর্মীরা মতিঝিলে শাপলা চত্বরে জড়ো হতে শুরু করেন। অবশ্য এর আগেই যাত্রাবাড়িতে অবরোধের সৃষ্টি করা হেফাজতকর্মীদের একটি অংশ মতিঝিলে অবস্থান নিয়ে রেখেছিলেন।
মতিঝিলে আগে থেকে অবস্থান নেয়া হেফাজত কর্মীদের একটি অংশ বেলা ১২টার দিকে পল্টনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে, যা সময়ের সঙ্গে কাকরাইল, নয়াপল্টন থেকে শুরু করে মতিঝিলের আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে।
ব্লগারদের শাস্তি ও নারীনীতি বাতিলসহ ‘বিতর্কিত’ ১৩ দফা দাবিতে সরকারকে চূড়ান্ত চাপ দিতে হেফাজতে ইসলামের অবরোধে ভোর থেকে সারাদেশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রাজধানী।
রোববার ভোরে ফজরের নামাজের পরপরই ১৩ দফা দাবিতে হেফাজতকর্মীরা টঙ্গী ব্রিজ, যাত্রাবাড়ির কাজলা, ডেমরা, বাবুবাজার ব্রিজ, পোস্তগোলা ব্রিজ, নারায়ণগঞ্জ ও সাভারের আমিনবাজার ও গাবতলীতে অবস্থান নেয়।
তাদের ঢাকার কেন্দ্রে আসা ঠেকাতে বিভিন্ন স্থান ব্যারিকেডও দেয় পুলিশ।
ফজরের নামাজের পরপরই অবরোধ করে ঢাকা 'বিচ্ছিন্ন' করে ফেলা হেফাজতের নেতাকর্মীরা অবশ্য পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে হলেও ঢাকায় সমাবেশ করার হুঁমকি দিচ্ছিলেন। প্রয়োজনে দুই-তিন দিন অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ারও কথা জানান হেফাজতকর্মীরা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।