© লেখকের অনুমতি ব্যতীত এই ব্লগের কোন লেখা সম্পূর্ণ বা আংশিকরূপে কোথাও প্রকাশ করা যাবে না।
নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি সব মানুষেরই আকর্ষণ চিরন্তন । বুঝে কিংবা না বুঝে ওইসব জিনিসের প্রতি আগ্রহী হন নাই এমন মানুষ খুব একটা নেই । আর বাংলাদেশে পথেঘাটে যেভাবে নিউজ প্রিন্টের কাগজে রসময় গুপ্ত আর সস্তা বিশ টাকা দামের গোলাকার যে বস্তু পাওয়া যায় তাতে পাবলিক কৌতুহল নিবারন করবে সেটাই স্বাভাবিক ।
যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে তখম মাত্র প্রাইমারী শেষ করে হাইস্কুলে ওঠলাম ।
বয়েস হাইস্কুল । প্রাইমারীতে "বডের হাড্ডি" কি জিনিস ও কতপ্রকার সবকিছুর তালিম নিয়ে হাইস্কুলে শুরু হলো আমাদের পথ চলা । হৃদয়ে সবারই কিঞ্চিত বেদনা । ক্লাশে পরী দর্শন করতে না পারার আফসোস । সবাই উদাস ।
ভাবুক । এমনি করে ক্লাশ সিক্সের অনেকটা দিন পেরিয়ে গেল ।
একদিন ক্লাশে আমি বসেছিলাম একটু পেছনের দিকে । হঠাৎ দেখলাম আমার ক্লাশের বন্ধুরা একজন একজন করে সবাই হৈ হৈ করে সামনের বেঞ্চের দিকে ছুটে যাচ্ছে । পতঙ্গ যেভাবে আগুনের দিকে ছুটে যায় সেরকম ।
আমি তখনও আমার বেঞ্চে বসে আছি অপার কৌতুহল নিয়ে । আস্তে আস্তে সবাই যে যার বেঞ্চে ফিরে আসতে লাগল । সবার চোখে-মুখেই সীমাহীন তৃপ্তি । বিশ্ব জয় করে আসার আনন্দ । সবার মুখেই একই কথা " জটিল মাল " মারাত্বক জটিল জিনিস" ।
জানতে চাইলাম - কি জটিল জিনিস ? একজন বলল - "তুই দেখে আস । "
শেষ পর্যন্ত কৌতুহলের জয় হলো । গেলাম সামনের বেঞ্চে যার কাছে "জটিল জিনিস" আছে সেটা দেখতে । সে ততক্ষনে সেটা ব্যাগে লুকিয়ে ফেলেছে । বললাম - "তুই নাকি জটিল মাল আনছোস ? "
গম্ভীর স্বরে বন্ধুটা বলে - হমম....
- আমারে দেখা ।
আরো গম্ভীর স্বরে বলল - না দেখানো যাবেনা ।
-কেন যাবেনা ?
উত্তর না দিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে রইল। আবার বললাম - "জিনিস" টা দেখা । তোকে টিফিন টাইমে নাস্তা খাওয়াবো। " আমাকে নাস্তা খাওয়াতে হয়নি ।
আরো কয়েকজনের চাপাচাপিতে সে ব্যাগ থেকে বের করল "জটিল জিনিসটা" । নিউজ প্রিন্টের কাগজ । তার মাঝে সাদাকালো একটা ছবি । ছবিতে একজন জটিল মেয়ে আরো জটিল পোজ দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে গাছের নিচে । পরনে কিছুই নেই ।
সেটা দেখে আমি হতভস্ম । আমি মুগ্ধ । কি চমৎকার তার রূপ । কি অপূর্ব তার.......................................... ( যেসব কবিদের কাছে নারী মানেই কবিতা তারা আরো সুন্দর উপমা দিতে পারবেন খালি জায়াগাটিতে । )
মনে হলো বিরাট এক গুপ্তধন আবিষ্কার করলাম ।
চোখ দু`টো দুষ্টুমিতে ঝিকমিক করে ওঠল । আহা ! অবাক হয়ে চেয়ে রইলাম । সুকান্তর কবিতাকে একটি অন্যভাবে :
"দু`চোখ অবাক তাকিয়ে রয়
মুগ্ধতা বিস্ময়ে হতবাক
তবু চোখ ফেরানোর নয় । "
তখনো আমার নিজের পিসি এবং নেট ছিলোনা । কৌতুহলটা বেড়ে গেল অনেক ।
আরো কয়েক বছর পরে যখন পিসি কিনে দিল সেই প্রথম গোলাকার বস্তুর ভেতরের জিনিস দেখলাম । যথারীতি আবারো হতবাক । সচিত্র ওসব আজগুবি দেখে আরো ভয় পেলাম । কিছুই বুঝলামনা । শুধু নিজেই নিজেরে বলিলাম - এতো চিল্লাইতেছে কেন ?
এখন আমার পিসিতে নেট ।
মোবাইলেও নেট । সুযোগ থাকা সত্বেও ওসব আর দেখিনা বললেই চলে । সারাদিনের ব্যস্ততা , ব্লগিং আর ইন্টারনেটে ঘুরে বেড়ানো আর বন্ধুদের সাথে জমিয়ে চ্যাট এবং ফেসবুক নিয়েই থাকি । সবকিছুই এখন স্বাভাবিক মনে হয় । কৌতুহল মিটে গেছে সেই কত আগে ।
জীবনের ক্যানভাসের অন্য পর্ব গুলো
১. প্রথম প্রেমের অনুভূতি
২. আমাকে লেখা মেয়েটির সেই প্রেমের চিঠি
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।