thanks all over
আজ ২১ নভেম্বর (শনিবার) মৌলভীবাজার জেলা তথা সিলেট বিভাগের কৃতি পূরুষ, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও সাবেক সংসদ সদস্য জননেতা মরহুম মোহাম্মদ ইলিয়াস এর ২২্তম মৃত্যু বাষির্কী। ১৯৮৭ সালের ২১ নভেম্বর তিনি ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ইন্তেকাল করেন।
সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম ইলিয়াস ছিলেন মহান রাষ্ট্র ভাষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা, স্বাধীনতা সংগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। সকল লোভ লালসার উর্ধে অবস্থানকারী মরহুম ইলিয়াসের আদর্শেই শ্রীমঙ্গল গড়ে উঠে আ‘লীগের রাজনৈতিক বলয়। গণ মানুষের প্রাণ প্রিয় নেতা মোহাম্মদ ইলিয়াস ১৯২৯ সালের ১ অক্টোবর কমলগঞ্জ উপজেলার কুশালপুর গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন এবং ১৯৮৭ সালের ২১ নভেম্বর তিনি ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ৪৮ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।
শ্রীমঙ্গলের শ্যামল মাটিতে অন্তিম শয্যায় শায়িত মরহুম ইলিয়াস ইতিহাস সৃষ্টি করেন। অফুরন্ত মর্মত্ববোধ আর স্নেহ মমতার ভান্ডার উজাড় করে বিলয়ে দিয়ে তিনি এই অঞ্চলের মানুষে মধ্যে ভালবাসার যে প্রিয় প্রাঙ্গন গড়ে তুলেছিলেন, তা কোন দিন বিলিন হওয়ার নয়। বর্তমান রাজনৈতিক অঙ্গনের নেতৃত্বের শীর্ষে যারা অবস্থান করছেন তাদের অনেকেই মোহাম্মদ ইলিয়াসের সে ভালবাসার প্রাঙ্গন থেকে উঠে এসেছেন। এক কথায় বলা যায়, মৌলভীবাজার জেলা আ‘লীগের নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে বর্তমানে যারা (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) সহ এবং সংসদে যারা ছিলেন এবং আছেন তারাও মরহুম ইলিয়াসের হাতে গড়া।
মরহুম ইলিয়াস তৎকালীন বেঙ্গল মেডিকেল সার্ভিসের সদস্য খান বাহাদুর ডাঃ বজলুল হাসানের ভ্রাতুষ্পুত্র।
তাঁর বাবার নাম মৌলভী মোহাম্মদ তাহির ও মাতার নাম মোছাঃ জুবায়দা খাতুন। তার প্রাথমিক শিা স্তর গ্রামের বাড়ি কুশালপুরে এবং ভারত বিভাগের পূর্বে তিনি মৌলভীবাজার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে (৪র্থ) প্রবেশিকা পরীায় উত্তীর্ণ হন। অতপর ঢাকা কলেজ থেকে তিনি প্রথম বিভাগে (৯ম) স্থান অধিকার করে আইএসসি পাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর গোল্ড মেডেল পেয়ে এমএসি পাশ করেন।
মরহুম ইলিয়াস ১৯৪৮ সালে রাজনীতিতে যোগদান করেন।
মতার রক্ত চুকে উপাে করে প্রতিবাদের বিপদ স্কংুল পথে তাকে পা বাড়াতে হয়েছিল। রাষ্ট্র ভাষা আন্দোলনের সক্রিয় সদস্য হিসেবে এবং তৎকালীন প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন পূর্ব পাকিস্ত্না ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হিসেবে এদেশের প্রগতিশীল ধারার রাজনীতিতে তার অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। মরহুম ইলিয়াস ১৯৬৭ সালে শ্রীমঙ্গলে স্থায়ী বসবাস শুরু করেন। তিনি দেশ স্বাধীনের পূর্বে ১৯৬৯ সালে পাকিস্থান আমলে প্রথম এমএএলে নির্বাচিত হন। ১৯৭০ এর নির্বাচনের পূর্বে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে আওয়ামীলীগে যোগদান করে ৭০‘এর সংসদ সদস্য নির্বাচিত বিজয়ী হন।
তিনি বঙ্গবন্ধুর খুব ঘনিষ্ট সহযোগী ছিলেন ও মৃত্যর পূর্ব পযর্ন্ত তিনি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি চার চার বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। বলা যায় বাংলাদেশ নামক ভূখন্ডের প্রতিষ্ঠা সংসদ সদস্য ছিলেন মরহুম ইলিয়াস। ১৯৬৯ সালের গণ অভ্যত্থানের সময় তার নির্দেশে এই এলাকায় গড়ে ওঠে প্রবল ছাত্র আন্দোলন। ১৯৬৯ সালের শেষের দিকে মোহাম্মদ ইলিয়াস আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব গ্রহন করেন।
শুধু তাই নয়, তার নেতৃত্ব আর সাংগঠনিক প্রতিভার গুনে মৌলভীবাজার জেলা আ‘লীগের সামগ্রিক নেতৃত্ব ও দায়িত্ব তার হাতে চলে আসে। এক কথায় শ্রীমঙ্গল তথা মৌলভীবাজার জেলায় ঝিমিয়ে পড়া আ‘লীগের প্রবল গতি সঞ্চার হয়।
রাজনৈতিক জীবনে তিনি এলাকার সর্বজনশ্রদ্ধেয় আদর্শ ও সৎ মানুষ ছিলেন। মৃত্যকালে তিনি ৬ মেয়ে ১ পুত্র ছাড়া এক ইঞ্চি ভূখন্ড রেখে যাননি। মরহুমের স্ত্রী মনোয়ারা ইলিয়াস বাবার বাড়ী থেকে উত্তরাধিকার সুত্রে পাওয়া শ্রীমঙ্গলে ছোট একটি বাসায় বর্তমানে ছেলে তার স্ত্রী ও নাতিদের নিয়ে খুব কষ্টে জীবন কাটাচ্ছেন।
মনোয়ারা ইলিয়াস দুঃভ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমানে অনেক নেতারই হাতে কড়ি মরহুম ইলিয়াস এর কাছে, কিন্তু কেউ এখন আর তার পরিবারের খোঁজ খবর রাখে না। তিনি জানান মরহুম ইলিয়াসের মৃত্যর পর জাতীয় নেতা ড. কামাল হোসেনসহ অনেকে শ্রীমঙ্গল এসে তার পরিবারকে দেখে গেছেন। এখন দুঃসহ সময়ে আর কেউই আসেন না।
মরহুম জননেতা মোহাম্মদ ইলিয়াসের ২২তম মৃত্যু বার্ষিকী পালন উপলে গতকাল (শুক্রবার) বাদ জুম্মা শ্রীমঙ্গল থানা জামে মসজিদের এক মিলাদ ও দোয়া অুনুষ্টিত হয়। আজ ২১ নভেম্বর মৌলভীবাজার, শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলা আ‘লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের প থেকে মরহুমের মাজার জিয়ারত, মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।