wanna know and show everything I can......
জীবনের শুরু অনেক গুলো স্বপ্নকে সামনে রেখে। অনেক স্বপ্ন অংকুরেই
বিনাশ লাভ করেছে। আবার অনেক গুলো স্বপ্ন মাঝখানে থেমে গেছে। চলার
এই পথে নিত্যু নতুন অনেক স্বপ্ন ডানা মেলেছে। জীবনকে উড়িয়ে নেয়ার
শক্তি যুগিয়েছে।
আর মাঝখানে কয়েকটি অর্জন শান্তিতে বিরতি নেয়ার
সুযোগ করে দিয়েছে। জীবনের এই পথ চলায় এই স্বপ্নগুলো পথ দেখিয়েছে
চলার। হয়তো সামনে দেখা মিলবে নতুন অনেক স্বপ্নের। কারন আমার মতে
স্বপ্ন আর জীবন একে অপরের সমার্থক।
আজ আমার খুব ভালো লাগছে এই ভেবে যে, আজকে আমার ক্যারিয়ারে
নতুন একটি সার্টিফিকেট যুক্ত হলো।
নামের আগে যুক্ত হলো কৃষিবিদ।
দীর্ঘ ১৮ বছরের পড়াশুনার জীবনে (৫ম শ্রেনীতে দুই বছর, স্নাতকে ৫
বছর) এই প্রাপ্তি। সামনে কতদূর যেতে পারবো জানিনা। তবে ইচ্ছা
আছে নামের সাথে আরো কয়েকটি পদবী যুক্ত করার। হয়তো পেট
চালানোর জন্য চাকরিতে ঢুকতে হবে।
তাই মাঝখানে থেমে যেতে পারে
পড়াশুনা। তবে এই প্রতিবন্ধকতা দূর করে জীবনের শেষ পর্যায়ে হলেও
কয়েকটি স্বপ্নের ডিগ্রী অর্জন করতে চাই। আশা করি আপনাদের সকলে দোয়া সংগে থাকলে এই স্বপ্ন অর্জন কঠিন কিছু হবে না।
রেজাল্টটা শুনে সত্যি আমার খুব ভালো লেগেছে। ভালো লেগেছে এই কারনে যে আমি আমার মা-বাবাকে হাসাতে পেরেছি, পেরেছি খুশি করতে।
রেজাল্ট প্রকাশ করার সাথে সাথে বাড়িতে ফোন দিয়ে বুঝতএ চেয়েছি মা-বাবার আনন্দ, শুনতে চেয়েছি তাঁদের হৃদস্পন্দন। তারপরে ফোন দিই আমার বাল্যকালের শিক্ষক, যিনি আমাকে এই সুন্দর স্বপ্নটি দেখাতে শিখিয়েছে, যার গাইড আমার সবসময় ভালো লাগতো, যার নির্দেশ পালন করতে আমি কখনো অবাধ্য হতাম না, যার মাঝে ছিলো গাইড করার বিশাল শক্তি, তিনি আমার মামা বিশ্বরূপ চাকমা। তাঁর পরামর্শে ৫ম শ্রেনীতে দুই বছর ছিলাম। কারন বয়স কম ছিলো। এর ফল আমি অল্প কয়েকদিনেই বুঝতে পারি।
স্মরণ করছি আমার প্রিয় স্কুল শিক্ষক আহসান উল্ল্যা স্যারকে। যিনি আমাকে সর্বদা স্বপ্ন দেখাতে শিখিয়েছেন। যিনি শিখিয়েছেন কিভাবে স্বপ্নকে জয় করতে হয়।
স্মরণ করছি বান্ঞিতা ম্যাডামকে, যার ব্যবহার, চলার ধরন, ব্যক্তিত্ব আমাকে সর্বদা অনুপ্রানিত করেছে।
স্মরণ করছি আমার কলেজের প্রাইভেট টিউটর প্রতুল দাদাকে যিনি আমাকে শিখিয়েছেন বইয়ের ভাষা থেকে কিভাবে মূল বিষয়টি অনুধাবন করতে হয়।
স্মরণ করছি আমার সকল সহপাঠীদের যাদের সাথে আমি আরালে নিজেকে যুদ্ধ ঘোষনা করতাম। কেউ আমার চেয়ে ভালো করলে তার সাথে আমি গোপনে যুদ্ধ ঘোষনা করতাম। হয়তো অনেকের সাথে যুদ্ধে পরাজিত হয়েছি, কিন্তু আমাকে এই যুদ্ধ অনেক উপরে ঠেলে দিয়েছে।
স্মরণ করছি আমার সকল শিক্ষকদের যারা আমাকে/আমাদেরকে নিজের সন্তানের মতো করে গ্যান(নলেজ) দিয়ে গেছেন।
তবে এই চলার পথে অনেক বাঁধা ছিলো।
যা সব পাহাড়ি সম্মুখীন হয় বলে আমার ধারনা। আমরা পাহাড়িরা সবসময় মনে করেছি, করছি এই বলে যে আমরা পরাধীন, আমরা দেশের মূল শ্রেনী না। এই ধারনাটা প্রতিটি আদিবাসী প্রতিটি ধাপে ধাপে বুঝতে পারি। আমিও বুঝতে পেরেছি। বিশেষ করে যখন কোন এক সাহেব উপরের চেয়ারে বসে পাহাড়িদের কটাক্ষ করে।
বিভিন্ন বিরূপ মন্তব্য ছুড়ে দেয়। যা পাহাড়িদের মনকে ছোট করে দেয়, বাড়িয়ে দেয় বিদ্রোহী মনোভাব।
তবে এই বন্ধুর পথেও আশার কথা যে শাসক গোষ্ঠীর বেশিরভাগ এখন আমাদেরকে অনুপ্রানিত করছে, দিয়েছে/দিচ্ছে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে। আমাদের খুব কাছে আসার চেষ্ঠা করছে। আমাদের বিপদে আপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে।
আমাদের জীবন প্রণালীকে বুঝার চেষ্ঠা করছে।
আমার এই প্রাপ্তি আমি পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নে কাজে লাগাতে চাই। পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নকে আমি সর্বদা বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশ হিসেবে দেখতে চাই।
মা-বাবা, বিশ্ব মামা ও বাল্যকালের বন্ধুদের উৎসর্গ করছি আমার এই অর্জন।
সামনের পথ চলাতে আপনাদের সকলের দোয়াপ্রার্থী।
সর্বদা ভালো থাকুন সবাই।
"আমাদের ছোটো নদী চলে বাঁকে বাঁকে
বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে।
পার হয়ে যায় গরু, পার হয় গাড়ি,
দুই ধার উঁচু তার, ঢালু তার পাড়ি।
চিক্ চিক্ করে বালি, কোথা নাই কাদা,
একধারে কাশবন ফুলে ফুলে সাদা।
কিচিমিচি করে সেথা শালিকের ঝাঁক,
রাতে ওঠে থেকে থেকে শেয়ালের হাঁক।
"-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।