উপকূলীয় জেলা নোয়াখালীর সমুদ্র তীরবর্তী ৫টি উপজেলার মধ্যে ২৭৫টি সাইক্লোন শেন্টারের অধিকাংশই জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুর্ণবাসন অফিস সুত্রে জানাগেছে, ২৭৫টি সাইক্লোন শেন্টারের মধ্যে ৯৯টি ঝুঁকিপুর্ন, ১৪৫টি কমঝুকিপূর্ণ এবং মাত্র ৩১টি ভাল। যে সব সাইক্লোন শেন্টার গুলো ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে মানুষের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা, উল্টো সেগুলোই এখন মানুষের জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নোয়াখালীতে মোট ৯টি উপজেলার মধ্যে ৫টি উপজেলাই হচ্ছে উপকূলীয় এলাকায়। যার মোট জন সংখ্যা হচ্ছে ১৫ লাখ ৫৬ হাজার ১৬৯ জন।
তাদের জন্য রয়েছে মাত্র ২৭৫টি আশ্রয়কেন্দ্র এবং সেগুলোর ধারণ ক্ষমতা রয়েছে মাত্র একলাখ ৩০ হাজার ১৭০ জনের। এতে বাকী ১৪ লাখ ৩০ হাজার ৯৯৯ জনই থাকে ঝুঁকির মধ্যে।
এদের মধ্যে সদর উপজেলার মোট জনসংখ্যা হচ্ছে ৪ লাখ ৭ হাজার ৪৪৭ জন। এখানে রয়েছে ১১টি সাইক্লোন শেন্টার। যার ধারণ ক্ষমতা রয়েছে মাত্র ৮ হাজার ৫শ মানুষের।
কবিরহাট উপজেলার মোট জনসংখ্যা হচ্ছে একলাখ ৮৫ হাজার ৯৫৮ জন। এখানে রয়েছে ১৩টি সাইক্লোন শেন্টার। যার ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ৮ হাজার ৪শ মানুষের। সূবর্ণচর উপজেলার মোট জনসংখ্যা হচ্ছে একলাখ ৮৮ হাজার ৬৮২ জন। এখানে আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে ৮৭ টি।
যার ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ৪৩ হাজার ৭৭০ জন মানুষের। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মোট জনসংখ্যা ২ লাখ ৭৪ হাজার ৮০ জন । এখানে রয়েছে ৩৮ টি আশ্রয় কেন্দ্র। যার ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ৩০ হাজার ৬ শ মানুষের এবং বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়া উপজেলার মোট জনসংখ্যা ৫ লাখ এবং তার জন্য রয়েছে মাত্র ১২৬টি সাইক্লোন শেন্টার। যার ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ৩৮ হাজার ৯ শ মানুষের।
সেই হিসাবে উপকূলীয় এলাকার মোট জনসংখ্যার বাকী ১৪ লাখ ৩০ হাজার ৯৯৯ জন অসহায় লোক থাকে ঝুঁকির মধ্যে।
নোয়াখালীর সদর থেকে হাতিয়া নিঝুম দ্বীপ পর্যন্ত প্রায় ৭৭ কিলোমিটারের মধ্যে বয়ারচরে মাত্র ২ টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এই পথে উল্লেখযোগ্য আর কোনো উচু কিল্লা বা আশ্রয়কেন্দ্র নেই। এ ছাড়া হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপে প্রায় ২৫ হাজার লোকের বসবাস হলেও সেখানে জাপানের জাইকা ও সৌদি আরবের কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোনো সাইক্লোন শেন্টার এবং কোনো মাটির কিল্লা নেই। এই দিকে নোয়াখালীতে একটি আবহাওয়া অফিস থাকলেও এর কার্যক্রম অত্যন্ত সীমিত।
রোদ-বৃষ্টির তাপমাত্রার রিপোর্ট ঢাকায় পাঠানো ছাড়া আর কোনো কাজ নেই। তাই সব মিলিয়ে নোয়াখালী বাসী প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে আছে।
১৯৬৮ সনে স্থাপিত সূবর্ণচরের উত্তর চরক্লার্ক আশ্রয়কেন্দ্র, ১৯৭০ ইং সনে নির্মিত চরক্লার্ক মোহাম্মদপুর আশ্রয়কেন্দ্র, ১৯৭০ ইং সালে চরবাগ্গা আশ্রয়কেন্দ্র, কালা চাঁদপুর আশ্রয়কেন্দ্র ও চরজুবলী আশ্রয়কেন্দ্র সহ বহু আশ্রয়কেন্দ্রের অবস্থা খুবই নাজুক। ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ৯৯ টি ব্যবহারের অনুপযোগি ঘোষণা দিলেও এগুলো এখনও স্কুল শিক্ষকরা বাস ভবন এবং স্কুল হিসেবে ব্যবহার করছে। ৭০ইং সালে ভয়াবহ সামুদ্রিক জলোচ্ছাস, ৯১ ইং সালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় এবং সম্প্রতি সিডরও আইলার মতো ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় বয়ে গেলেও সরকারই সাইক্লোন সেন্টারগুলোর মেরামত বা নতুন কোনো করে নির্মাণ করার কোনো উদ্যেগ নেয়নি।
বর্তমানে ২৭৫ টি আশ্রয়কেন্দ্র গুলো এলজিইডি, পানি উন্নয়ন বোর্ড, গনপূর্ত বিভাগ, রেডক্রিসেন্ট ও সিডিএসপির মতো এনজিও গুলো দেখা শুনা করলেও তাদের কাজের গুনগত মান ঝাছাই করার মতো কেউ নেই। -সাইফুল্যাহ কামরুল (নোয়াখালী ওয়েব নিউজ), ১১ নভেম্বর ২০০৯। http://www.noakhaliweb.com.bd/index.php?cmd=details_news&newsId=4646
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।