আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

***শিরক এবং তার ভয়াবহ পরিণাম***

"সকল বস্তু তার বিপরীত বস্তুর মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে উঠে"

শিরক এবং তার ভয়াবহ পরিণাম: শিরকের সংজ্ঞা : আল্লাহর ইবাদতে অংশীদার স্থাপন করাকে শিরক বলা হয়। ‘ইবাদতের ক্ষেত্রে আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে শরিক করার অর্থ হল: আল্লাহকে ডাকার মত অন্যকে ডাকা, আল্লাহকে ভয় করার মত অন্যকে ভয় করা, তাঁর কাছে কামনা করা হয়, অন্যের কাছে তা কামনা করা। তাঁকে ভালোবাসার মত অন্যকেও ভালোবাসা। “মানুষের মধ্যে এমন একদল লোক আছে যারা আল্লাহ ছাড়া অন্যদেরকে শরীক বানিয়েছে এবং তাদেরকে এমনভাবে ভালবাসে যেমন আল্লাহকে ভালোবাসা উচিত, আর যারা ঈমান এনেছে তারা আল্লাহকেই সর্বাধিক ভালবাসে”। (সূরা আল বাকারা: ১৬৫) আল্লাহর জন্যে সম্পাদনযোগ্য ইবাদতসমূহের যে কোন একটি গাইরুল্লাহর উদ্দেশ্যে সম্পাদন করা।

শিরকের প্রকারভেদ: শিরক দুই প্রকার। শিরকে আকবর বা বড় শিরক। শিরকে আসগর বা ছোট শিরক। শিরকে আকবর: যে সকল ‘ইবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্য করা হয়, সেগুলোর কোন একটি গাইরুল্লাহর উদ্দেশ্যে সম্পাদন করাকে শিরকে আকবর বলে। যেমন, গাইরুল্লাহর নিকট প্রার্থনা করা, তার নামে জবেহ করা, জিন ও শয়তান ইত্যাদির নামে মানত করা।

মৃত ব্যক্তি, জিন, শয়তান ইত্যাদিকে ক্ষতি করার বা সুস্থ অসুস্থ করার মালিক মনে করা। বিভিন্ন মাজারে গমন করা আর তাদের কাছে এমনভাবে প্রার্থনা করা যেন তারাই সবকিছু করতে পারে। আর যে সকল কার্যাদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ সমাধান করতে পারে না তা অন্যের কাছে আশা করা। শিরকে আসগর : যে সব কথা ও কাজের মাধ্যমে মানুষ শিরকের দিকে ধাবিত হয়, সেসব কথা ও কাজই শিরকে আসগর বা ছোট শিরক। এ প্রকারের শিরক মুসলমানকে ঈমান হতে বের করে না বটে; তবে তাওহীদকে দুর্বল করে দেয় এবং শিরকে আকবরের পথকে সুগম করে।

এর উদাহরণ গাইরুল্লাহর নামে কসম করা, রিয়া বা লোক দেখানো কাজ করা যেমন: কেউ নামায পড়ল কিন্তু লোক দেখানো নামায পড়ল ইত্যাদি। শিরকের ভয়াবহ পরিণাম : শিরকের মাধ্যমে সৃষ্টিকে স্রষ্টার আসনে বসানো হয়, যা মহা অপরাধ এবং রীতি মত অবিচার। আল্লাহ বলেন: “নিশ্চয়ই শিরক একটি মস্ত বড় অন্যায়” (সুরা লোকমান: ১৩) আল্লাহ তা’আলা শিরকের গুনাহ তওবা ছাড়া ক্ষমা করবেন না। আল্লাহ বলেন- “নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা তার সাথে শিরক করার অপরাধ ক্ষমা করবেন না। এ ছাড়া অন্য সকল গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দিবেন” (সুরা নিসা: ৪৮) আল্লাহ তা’আলা মুশরিকদের জন্যে জান্নাত হারাম বলে ঘোষণা করেছেন: “নিশ্চয় যে আল্লাহ’র সাথে শিরক করবে আল্লাহ তার উপর জান্নাত হারাম করে দেবেন এবং তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম।

জালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই। ” (সূরা মায়িদাহ: ৭২) শিরক সমস্ত আমলকে বিনষ্ট করে দেয়। আল্লাহ বলেন, “আর যদি তারা শিরক করে তাহলে তাদের সকল আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে। ” (সুরা আনআম: ৮৮) শিরকই হল সবচেয়ে বড় গুনাহ। নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “আমি কি তোমাদেরকে সবচেয়ে বড় গুনাহ সম্পর্কে অবহিত করব না? আর তা হল, আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করা।

” (বুখারি-মুসলিম) সম্মানিত পাঠক! শিরকের ক্ষতি এবং তার ভয়াবহ পরিণাম সম্পর্কে জানার পর শিরক থেকে নিজে বাঁচা এবং অপরকে বাঁচানোর জন্যে সচেষ্ট হওয়া আমাদের সকলের ঈমানী দায়িত্ব। আল্লাহ আমাদের এ দায়িত্ব পালনে তাওফীক দান করুন। আমিন! ***পরবর্তী পোস্টে ইনশাল্লাহ শিরকের বিভিন্ন কর্মকান্ড নিয়ে লিখব, যা আমাদের সমাজে প্রতিনিয়ত হয়ে থাকে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।