শিরক হচ্ছে আল্লাহর পবিএতা ও সেফাত বা গুনাবলীর কোনটির সাথে অপর কোন ব্যক্তি বা বস্তূকে অংশীদার সাব্যস্ত করার নামই শি্রক। ইহা প্রকৃত ঈমান লাভের পথে প্রধান বাধা। ইহা ঈমানকে সমুলে ধ্বংস করে দেয়। ইমান ও শিরক সম্পুর্ণ বিপরীতধর্মী। শিরক হলো ২ প্রকার।
বড় ও ছোট। বড় শিরক :আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা বা মৃত অনুপস্হিত ব্যক্তিকে ওসিলা করে দোয়া করে আল্লাহর নৈকট্য কামনা করা বা তাদের দ্বারা আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রাথ´না করা। এরুপ করা বড় ধরণের শিরক। আর এ কারণেই রাসুল(সএর ইনতেকালের পর সাহাবায়ে কেরাম রাসুল(সকে উসিলা করা বাদ দিয়ে ইবনে আব্বাসের (রাসুল(সএর চাচা)নিকট আসেন তাদের জন্য দোয়া করাতে। এবার আসা যাক ছোট শিরক প্রসংগে।
যা আমাদের সবখানে লক্ষ্যনীয়। ছোট ছোট এই শিরক আজ আমাদের পাপসমুদ্র সৃষ্টিতে এমনভাবে সহায়তা করছে যা বিশ্বাস করতেও কষ্ট হয়। যেমন:কবরকে পাকা করা বা উচু করা,কবরের পাশে নামাজ পড়া,বাতি জালানো,সুগন্ধি ছিটানো, কোন নেককার বান্দার নামে শপথ করা এবং এরুপ বলা:আল্লাহ যা চান আর আপনি যা চান তাই হবে অথবা এমন বলা যে,যদি উমুক ব্যক্তি না হত তাহলে আমাদের এরুপ ক্ষতি হতে পারত ইত্যাদি।
উসিলা মানে কি? এর অর্থ হচেছ মাধ্যম। আর এই মাধ্যমটি হতে হবে শরীয়ত মোতাবেক।
নিজের খেয়াল খুশী অনুযায়ী হলে হবে না। উসিলা আল্লাহর নামের উপর করা যায়েজ-এটা আল্লাহই নি´ধারণ করে দিয়েছেন সূক্ষভাবে। তিনি বলেছেন:-মহান আল্লাহর অনেকগুলো সুন্দর নাম রয়েছে তাকে তোমরা সেগুলো দ্বারা ডাকো। বাদ বাকিগুলো রাসুল(সও তার সাহাবীদের জীবনাদর্শ লক্ষ্য করলেই জানা যাবে। মনে রাখবেন,আদম সন্তান মারা গেলে তার সাথে শুধুমাত্র ৩টি আমল ব্যতীত আর সকল আমল বন্ধ হয়ে যায়,সাদকায়ে জারিয়া,এমন ইলম যা দ্বারা কল্যাণ হয়,নেক সন্তান যে তার জন্য দোয়া করে।
সুতরাং মৃত ব্যক্তি অন্যের জন্য সত্যই অসহায় । রাসুল(সও এর ব্যতিক্রম নহেন। তাছাড়া রাসুল(সসর্বদাই যে কোন দোয়াতে আল্লাহর নামগুলো জপেছেন সাবলীলভাবে যা সাহাবীরাও অনুসরণ করেছেন ও সফলতা লাভ করেছেন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে,যা আমাদের জন্য পাথেয়। উসিলা করা যাবে আসমাউল হুসনা বা আল্লাহর ৯৯টি সুন্দর নামের উপর যা যায়েজ । যেমন:রহমত কামনার সময় আররহমানু, মাগফিরাত কামনার সময় আলগাফুরু নাম ধরে তাকে ডাকুন।
হযরত ইউনুস(আমাছের পেটে থেকে আল্লাহর পবিএতার উসিলায় মাফ পেয়েছিলেন। হযরত আইউব(আআল্লহর রহমতের উসিলায় মাফ পেয়েছিলেন । আমাদের কলেমার উপর (ঈমানকে উসিলা করা)উসিলা করা যায়েজ :লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলউল্লাহ (স। হযরত আদম(আকলেমার উসিলায় মাফ পেয়েছিলেন ।
নিজের তওবাকে উসিলা করে বান্দা আল্লাহর নৈকট্য কামনা করবে।
যেমন বান্দা বলবে:হে আল্লাহ!আমি আপনার নিকট তওবা করছি,অতএব আমাকে মাফ করুন। আপনার নেক আমলকে উসিলাও করতে পারেন। যেমন:নামাজ,রোজা,কুরআন তেলওয়াত ইত্যাদি। এর প্রমাণ হল গুহায় প্রবেশকারী ৩ ব্যক্তির ঘটনা । তারা গুহায় প্রবেশের পর একটি পাথর গুহা হতে নির্ঘমনের পথ বন্দ্ব করে দেয়।
তখন তারা এ বিপদ মুক্তির জন্য তাদের সর্বশেষ্ট নেক আমলকে উসিলা করে আল্লাহর নিকট দোয়া করে এবং আল্লাহ তা কবুল করে তাদের বিপদ মুক্ত করেন। । এ হাদীস বুখারী ও মুসলিম শরীফে বিদ্যমান রয়েছে। মনে রাখবেন, মহান আল্লাহ শুধুমাএ সে দোয়াই কবুল করেন,যে দোয়া তার শরীয়ত সম্মত। উদাহরণস্বরুপ এই প্রসংগে একটা ঘটনার বর্ণনা করা যেতে পারে।
হযরত হাসান বাছরী(রহএকদা রাতে নিজ গৃহে নির্জনে বসেছিলেন এমন সময় পাশের বাড়ী থেকে এক মহিলার কন্ঠ কর্ণগোচর হলো। মহিলা তার স্বামীকে বলছেন:জীবনে তোমার বহু অত্যাচার এমনকি বেদম প্রহরাও মুখ বুজে সহ্য করেছি ও ভবিষ্যতেও সহ্য করতে রাজী আছি কিন্ত তুমি আর একটি বিয়ে করবে-আমাকে সতীনের কবলে ফেলবে,ইহা আমি বরদাশত করবো না। হযরত হাসান বাছরী(রহবিষয়টি অনুধাবন করে এর সমাধান খুজতে কোরআনের স্মরণাপন্ন হলেন এবং এক সময় তিনি দেখতে পেলেন একটি আয়াত যার অর্থ-আল্লহ ইচছা করলে সব অপরাধ মাফ করবেন কিন্ত শির্ক করা হলে তিনি নিশ্চয়ই ক্ষমা করবেন না। তিনি অবাক হয়ে ভাবতে লাগলেন -একজন মহিলাই যখন স্বামীর ভালোবাসায় অপরের অংশীদার সহ্য করতে পারে না,সেখানে সারা জাহানের মালিক কিরুপে তানার সাথে শরীক করাকে পছন্দ করবেন?
-------------------------------------------------------------------------
রেফারেন্সের জন্য দেখুন:বাদশাহ ফাহাদ কর্তৃক বিনামূল্যে বিতরণের জন্য অনুদিত পবিত্র কুরআনুল কারীমের বাংলা অনুবাদ ও তফসির এর সুরা আল মায়েদাহ এর ৩২ থেকে ৩৬ আয়াতের ব্যখ্যা ও তফসির। পৃষ্টা নং ৩২৭ ।
সম্প্রতি ইসলামী গবেষণা সংস্হায় সৌদি থেকে প্রকাশিত শিরকের বাহন নামক বইতে এই তথ্য মিলেছে। হাজী সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করে ঐ বইটি পড়ার অনুরোধ রইল। বাংলায় প্রকাশিত ইসলামী বই ১০০% বিনামূল্যে আপনার বাড়ির ঠিকানায় পেতে এই ইমেইল এড্রেসটি ঝটপট কপি করে আজই ইমেল করুন.
চোখে পড়ল আরও একটি নতুন ফোরম। সময় পেলে ঘুরে আসুন:
http://www.esogori.forum5.com/
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।