আমার লেখা পড়ে.................. আবেদ সাহেব বেরিয়ে গেলেন ঠিক এক ঘন্টা চল্লিশ মিনিট পর । ফর্ম পূরণ করতে তার লেগেছিল একঘন্টার বেশি সময় । ফর্ম পূরন করতে ১০/১৫ মিনিটের বেশি লাগার কথা না । শুধূ মাত্র নার্ভাসনেসের কারণেই তার এত সময় লেগেছিল । তিনি বেরিয়েই দ্রুত বাস স্টপেজের দিকে রওনা দিলেন ।
মূল শহরের বাইরে তাদের লনওয়ালা বাসা । পুরো ইউরোপ, আমেরিকা জুড়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা কাজ করছে । লাখ লাখ লোক বেকার হয়ে পড়ছে । সেদিন পত্রিকায় দেখলেন নিউওর্য়ক শহরে ডুপ্লেক্স বাড়ি নিলামের সর্বচ্চ দাম উঠেছে ১৫ ডলার । রুপকথাকেও হার মানায় ।
তিনি তাদের বাড়ীটা ধরে রেখেছেন দাতে দাত কামড়ে । গাড়ী বিক্রি করে সে ডলার ব্যাংকে রেখে দিয়েছেন । অল্প কয়টা টাকা । তারা এ দেশের নাগরিক বলে সরকারী হাসপাতালে বিনা খরচে চিকিৎসা পান । তা না হলে বিনা চিকিৎসায় মরতেন ।
এখনও যে খুব ভালো চিকিৎসা পান বিষয়টা তা না । তবে পান। ভাগ্যিস তখন কয়েকটা স্কীম, ইনসুরেন্স করে রেখেছিলেন । তা না হলে বাড়ীটা তো বিক্রি করতে হতোই, তারপর সরকার থেকে দরিদ্র ভাতাও নিতে হতো । যে ভাতায় জীভন চালানো অসম্ভব।
বাড়িটা ছাড়া আর তেমন কিছু নাইও তাদের । অর্থনৈতিক মন্দার আগে থেকেই তার অবস্থা খারাপ । শারিরীক অসুস্থতার কারণে তিনি খুব একটা কাজ করতে পারেন না, সালেহা এখনও আদি মানসিকতার বাঙ্গালিই রয়ে গেছে । ত্রিশ বছর আগে যে সালেহা বিমানে করে এখানে এসেছিল, ত্রিশ বছর পর সে তাই রয়ে গেছে । পোশাক পরিচ্ছদে হালকা কিছু পরিবর্তন ছাড়া আর কোন পরিবর্তনই তার হয়নি ।
শীতের কারণেই না চাইলেও জিন্স, ওভার কোট এগুলোতে সালেহার অভ্যস্ত হতে হয়েছে । এছাড়া সালেহা বাঙ্গালী সালেহাই রয়ে গেছে । সে কোন কাজ করেনি । যেটা এসব দেশে অকল্পনীয় ।
এখন হালকা ঠান্ডা ।
শার্টের নিচে টি শার্ট না পরলেও ঠান্ডা চলে । তবুও সোবহান সাহেবের বেশ ঠান্ডা লাগছে । তিনি হাটা আরও দ্রুত করলেন । এতে শরীর যেমন একটু গরম হবে, তেমনি তাড়াতাড়িও যেতে পারবেন । তার বাসায় যাওয়ার সময় কিছু কাপড় চোপড় কিনে নিয়ে যাবেন ।
তারপর সালেহাকে নিয়ে আবার যেতে হবে প্রায় ৭০ কি.মি । তার বোনের ছেলে এখানে একটা সেমিনারে এসেছে । এই ছেলেকে তিনি ১০/১২ বছর বয়সে শেষ দেখেছেন । তিনি ভাগিনার নাম মনে করার চেষ্টা করলেন, পারলেন না বলে এক ধরনের অপরাধবোধে ভুগলেন । এখানে আসার আগেও সালেহা ভাগিনার নাম ধরে কিছু একটা বলেছিল ।
তিনি আবার চেষ্টা করলেন নাম মনে করার, পারলেন না । বয়সের দোষ মনে হয় । তিনি বাংলাদেশে জান না প্রায় দু যুগেরও বেশী হয়ে গেছে । বাবা মা সেই কবেই মারা গেছেন । তারও সময় হয়ে এলো ।
তার এখন ৬৫ চলছে । এখনকার স্থানীয় বাসিন্দারা এ বয়সেও বিয়ে করে, মাস্তি করে । সেই তুলনায় তিনি এখন পর্যন্ত বাঙ্গালীই রয়ে গেছেন । সালেহার কারনে হয়ত আদি গন্ধটা একটু বেশী রয়ে গেছে ।
ভাই বোনদের সাথেও খুব একটা যোগাযোগ নেই ।
ছ’মাসে, ন’মাসেও মেইল বা ফোন টোন হয় না । আসলে তার জেনারেশন ও আগের জেনারেশনের সবাই বৃদ্ধ । অনেকে মারাও গেছে । কি ভাবে কি ভাবে তার বয়স ৬৫ হয়ে গেছে, তিনি টেরও পাননি । সালেহার বয়স মনে করার চেষ্টা করলেন ।
সালেহা তার চেয়ে চার বছরের ছোট । সালেহার ৬১, অনেক মোটা হওয়ার কারণে তার রোগ শোক লেগেই আছে । হাপানী, ডায়বেটিস কি নেই ? তিনি সালেহার প্রতি প্রগাড় এক মমতা অনুভব করেন এখনও । এক ফোটাও হের ফের নেই । সালেহাকে তিনি বিয়ে করেছেন সম্বদ্ধ করেই ।
তখন দেশে একটা কেরানী টাইপ চাকরি করতেন । তিনি বিয়ের আগেও কখনও অন্য কোন মেয়ের সাথে শারিরীক সম্পর্কে যাননি । বিয়ের পরতো প্রশ্নই আসে না । কখনও অন্য কোন মেয়ের কথা ভেবে আফসোসও করেননি । তার যে ইচ্ছা করেনি বিষয়টা তাও না ।
বিয়ের আগে তিনি সাহসের অভাবে ভালো লোক ছিলেন । সালেহা এ কথা বলে এখনও তাকে খোচানোর চেষ্টা করে । তিনি হা হা করে হাসেন । এ অলস, কিছুটা অশিক্ষিত মেয়েটা ছাড়া পৃথিবীর সব নারীই তার জন্য সব দিক দিয়ে নিষিদ্ধ । তিনি মনে প্রাণে এ কথা বিশ্বাস করেন ।
সালেহা এখন তার অবস্থা খুব ভালো করেই জানে । তাকে সান্তনা দেওয়ারও চেষ্টা করে । বাড়ীর পিছেই কিছু শাক সজ্বীর গাছ লাগিয়েছে, এ থেকে কিছু তরকারী পাওয়া যায় মাসে মাসে। সংসারে সাহায্য হয় ।
তার ভাগিনা এসেছে আরও চার দিন আগে, কালই আবার দেশে চলে যাবে ।
তাদের বাড়ীতে আসার জন্য সালেহা ভাগিনাকে ফোন করেছে বেশ কবার । ছেলেটার আসারও কথা ছিল । সোবহান সাহেব তখন রিতীমত অসহায় বোধ করছিলেন । তিনিও ভাগিনাকে দেখতে চান । সে খুব ব্যাস্ত বলে তার হোটেলে সোবহান সাহেবরা দেখা করেতে যাননি ।
কিন্তু বাড়ীতে এলে বাড়তি একটা খরচ, তিনি তা পাবেন কই । এত বছর আত্নীয় স্বজন ছেড়ে বিদেশ থেকেও যে তিনি তেমন কিছু করতে পারেননি এ অবস্থা ছেলেটা দেখুক তিনি চাননি । হঠাৎ আরেকটা জরুরী কাজ পড়ে যাওয়াতে ছেলেটা এখানে আসতে পারবে না । খুব বিনীত গলায় বলেছে, মামা-মামী যদি কষ্ট করে তার হোটেলে যায়…. । তিনি খুশি হয়ে রাজী হয়েছেন ।
কিন্তু আরেকটা খরচ বাচেনি । সোবহান সাহেব আত্নীয় স্বজনদের জন্য কিছু উপহার পাঠাতে চান । বিশেষ করে বড় দু-বোনের জন্য । তাদের সাথে এ জীবেনে আর কখনও দেখা হবে না, তিনি জানেন । হয়ত মৃত্যু সংবাদও পাবেন না তিনি ।
শেষবারের মত বোনদের জন্য কিছু পাঠানো । শুধূ বোনদের জন্য পাঠালেতো হবে না । বোন জামাই, ছেলে বৌ টৌয়ের জন্যও পাঠাতে হবে । কিন্তু টাকা? তিনি পথ পেয়েছিলেন দ্রুত । এখানে আসার সময় পুরোটা পথ তিনি কেদেছেন ।
কিন্তু তার কিছুই করার নাই । এ স্টুডিও বিভিন্ন পর্ণ ফিল্ম বানায় । এইজেড গ্রুপে তিনি এখানে পর্ণ ফিল্মে অভিনয় করে ১১৭ ডলার নিয়ে তিনি বাড়ী যাচ্ছেন। আসার সময় তার বারবার মনে হচ্ছিল তিনি আত্নহত্যা করবেন । সালেহা ছাড়া অন্য মেয়েকে স্পর্শ?!!!!!! তিনি শেষ পর্যন্ত এখানে এসেছেন চৌদ্দ বছরের এক মেয়েরে বিপরীতে পর্ণ ফিল্মে অভিনয় করেছেন ।
কে জানে হয়তো ফিল্মটার নাম হবে “টিন গার্ল উইথ গ্রান্ডপা”। প্রায় আট দশ বছর পর তিনি নারী সঙ্গম করেছেন । সালেহার সাথে শেষ বার শারিরীক সম্পর্কে গিয়েছিলন আট দশ বছর আগে । সালেহার কষ্ট হয় বলে তিনি ক্ষ্যান্ত দিয়েছেন যদিও কয়েকবার সালেহা তাকে ডেকেছে তার কথা ভেবেই । তিনি সাড়া দেননি সালেহার কথা ভেবে ।
সোবহান সাহেব জানেন তার যৌন আকাংখা এখনও পুরো পুরি যায়নি । কিন্তু সালেহার পরিবর্তে অন্য কোন মেয়ের সাথে… অকল্পনীয় । তিনি সালেহাকে ভালোবাসেন । জীবনের অনেক কষ্ট ,যন্ত্রনাই তিনি জয় করে করেছেন । আর যৌন আকাংখা সে আর তেমন কি ।
তিনি খেয়াল করলেন তার চোখ দিয়ে এখনও পানি পড়ছে । এ রাস্তা লোক চলাচল কম, তাই বাচোয়া । সালেহা, সালেহা । তিনি চোখ মূখে আজকের কিশোরীটির কথা মনে করার চেষ্টা করলেন, চেহারা মনে করার চেষ্টা করলেন, পারলেন না । তবে তিনি তখন পুরো ব্যাপারটাই উপভোগ করেছেন, খুবই উপভোগ করেছেন ।
যদিও রুমের বাইরে বেশ কয়েকজন লোক ছিল । ভিতরে ছিল তিন চারটা ক্যামেরা, লাইট । তার জড়তা ভয় সব কেটে গিয়েছিল যখন মেয়েটা শুধূ অর্ন্তবাস পরা অবস্থায় তাকে জড়িয়ে ধরেছিল । সুগঠিত কিশোরী শরীর। পরিচালক তাকে আরও ১ ঘন্টা সময় দিতে বলেছিল ।
তাহলে আরও একটা ফিল্ম বানাবে । কিন্তু তার এখন সময় স্বল্পতা । চলে আসার সময় ডিরেক্টর বলেছে সে যেন নিয়মিত এখানে এসে অভিনয় করে । পেমেন্টও বাড়িয়ে দিবে । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।