আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কালু পালোয়ান (রিপোষ্ট)

এডিট করুন

কালু পালোয়ান অতীব বলশালী লোক। তাহার চেহারায় সর্বদা একটা বল বল ভাব লাগিয়াই থাকে। তাহার ভুড়িখান অত্যন্ত সুগোল। তাহাতে নানা দেশের মানচিত্র আকিয়া অর্ধেক পৃথিবীর ভূগোল পড়াইতে পণ্ডিত মশাইয়ের কোনরুপ ক্লেশ বোধ হইবে না বলিয়া অনেকেই বলিয়া থাকে। একদা কালু তাহার পাড়ায় ব্যায়ামাগার খুলিল।

তখন পাড়ায় কালুর দোর্দন্ড প্রতাপ। ব্যায়ামাগারের অধিষ্ঠানে গ্রামের পশ্চিমাংশের মোড়ল পাখী খান চাদা প্রদান করিলেন। এই পাখী খানের অত্যাচারে বহুকাল ব্যাপী গ্রামবাসীরা যাহারা গ্রামের পূর্বাংশে বসবাস করিত তাহারা অত্যন্ত অতিষ্ঠ হইয়া উঠিইয়াছিল। তাহার উপর কালু পালোয়ানের পাখী খানের দলে ভেড়ায় পাখী খান তাহার অত্যাচারের মাত্র বহুগুনে বর্ধিত করিলেন। কিন্তু গ্রামের পূর্বাংশের কিছু লোক যাহাদিগের মধ্যে কিশোর হইতে বৃদ্ধা, কৃষক হইতে পণ্ডিত সকলেই ছিলেন তাহারা বিদ্রোহ করিয়া উঠিলেন।

কালু পালোয়ান তাহার সাঙ্গ পাঙ্গ লইয়া এবং পাখী খানের লেঠেল বাহিনী লইয়া বেশ কিছকাল যাবৎ লম্ফ জম্ফ দিলেন। তাহার ভূড়ি পৃথিবীর বাকি অর্ধেক গ্রহণ করিবার নিমিত্তে সংকল্প লাভ করিল। কিন্তু দিনে দিনে গ্রামের পূর্বাংশের ছেলে ছোকড়াদের অত্যাচারে তাহার, তাহার সাঙ্গ পাঙ্গ, পাখী খান, পাখী খানের লেঠেল বাহিনী সকলেরই উদরাময় নামক অত্যন্ত অস্বস্তিকর রোগ দেখা দিল। পাখী খান তাহার বাহিনী লইয়া কোনমতে তরল পুরীষ সিক্ত পান্তলুনের সহিত গ্রামের পশ্চিমাংশে চলিয়া গেলেন। কিন্তু কালু পালোয়ান তাহার ভূড়ির ওজনের দরুন দৌড়াইতে না পারিয়া পূর্ব গ্রামের ছেলে ছোকড়াদিগের হাতে ধৃত হইলেন।

কিন্তু তাহার নিম্নদেশ হইতে উদ্গত দুর্গন্ধের দরুণ ছেলে ছোকড়ারা তাহাকে ত্যাগ করিয়া গেল। তিনি পথে পড়িয়া রইলেন। তাহার আহার বন্ধ হইল। পরনের বসন শত ছিন্ন হইল। মুখে দীর্ঘ শ্মূশ্র দেখা দিল।

তাহার এই নতুন রুপে তাহার ব্যায়ামাগারের সাঙ্গ পাঙ্গরা আবার তাকে নেতা হিসাবে গ্রহণ করিয়া লইল। তিনি আবার পুর্ব ক্ষমতা ফিরিয়া পাইতে সংকল্পবদ্ধ হইলেন। তিনি এইবার পাখী খানের পুত্র জেনারেল খানের সহিত যোগাযোগ স্থাপন করিলেন। একই সময়ে তিনি সহশক্তি বন্ধু হিসাবে পূর্বের ন্যায় "আল মরু"-কে সাথে পাইলেন। তিনি একটি সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক বাহিনী গড়িয়া তুলিতে লাগিলেন যেইখানে কেবল জেনারেল খানের ধর্মানুসারীরা স্থান পাইবে।

সম্পূর্ন গণতান্ত্রিক উপায়ে অন্যান্য ধর্মালম্বীদের তাহাদের বাহিনীতে স্থান না দেওয়া তাহাদের গণতান্ত্রিক গঠনতন্ত্রের অন্যতম মূলনীতি। ইহা ব্যাতিত তাহারা পূর্বের ন্যায় যাতে উদারময়ের দরূণ পান্তলুন সিক্ত হইয়া দুর্গন্ধ বিস্তৃত না হয় তাহার জন্য কখনো এই বাহিনী, কখনো ঐ বাহিনীর পয়ঃনিষ্কাশন ঘরে যাতায়াত করিতে লাগিলেন। অধুনা তাহাদের বাহিনীর কিছু নবীন সদস্য যাহারা তাহাদের এককালে উদারময়ে সিক্ত নেতার ফকিরী রুপের স্থিরচিত্র দেখিয়া মজিয়াছিল তাহাদিগের গলা গণতন্ত্র গণতন্ত্র বলিয়া বেশ উচ্চস্বরে চিৎকার করিতেছে। যদিও তাহারা গণতন্ত্র কি, ইহা কোন বস্তু নাকী প্রাণী নাকি কোন রুপবতী রমনী সেই ব্যাপারে নিশ্চিত নহে তবুও তাহাদিগের বাহিনীর নতুন প্রকাশিত পুস্তকে এবং অধুনা সমাপ্ত সমাবেশগুলোতে এই ব্যাপারে তারঃস্বরে চিৎকার করিবার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হইয়াছে বলিয়া তাহারা সুবোধ বালদিগের ন্যায় তাহাদের একদা উদারময়ে সিক্ত নেতার নির্দেশ একমনে পালন করিয়া যাইতেছে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।