এইখানে শায়িত আছেন বাংলা ব্লগ ইতিহাসের কলঙ্ক...
অনেক ঈর্ষা হচ্ছে আজ ওর.......অনেক কষ্ট। কষ্টটাই বেশি, বারবার ছাপিয়ে যাচ্ছে ঈর্ষাটাকে। আজ রাতেই শুভ্র অন্য কারো হবে.......অন্য একটা মেয়ের......
কি যেন নাম মেয়েটার? ও হ্যাঁ! লিজা। ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পড়ে। ক'দিন আগে লিজার বাবা মা আর আত্মীয়-স্বজনরা এসেছিলো শুভ্রদের বাসায়, খাওয়া-দাওয়া করেছিলো।
ও সামনে যায়নি কিন্তু ভেতর থেকে একটু-আধটু ওদের কথা-বার্তা শুনেছে। বিয়েটা ওরা যতো তাড়াতাড়ি পারে সেরে ফেলতে চায়। শুভ্রও যেন বিয়ের জন্য উশখুশ করছে.......
আচ্ছা, শুভ্র কি করে পারলো? কি করে পারলো ওকে ছেড়ে লিজার কাছে যেতে? একবারও কি ওর মনে হয়নি কেউ একজন ওর জন্য অপেক্ষা করছে। যার সাথে জীবনের গত দশটা বর্ষার অনেকগুলো রাত আর অনেকগুলো বিকেল কাটিয়েছে শুভ্র, যার সাথে কেটেছে ক্লান্ত-তপ্ত বৈশাখী রাত, যাকে জড়িয়ে ধরে মনের জমানো কথাগুলো বলেছে শুভ্র, যাকে বুকে জড়িয়ে রেখে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে জীবনের কষ্টময় দিনগুলো অতিক্রম করেছে, আজ জীবনের এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে তার কথা একবারও মনে পড়লো না?
আজ শুভ্রর বিয়ে। লিজাকে আজই ঘরে তোলা হবে।
এখন বাজে রাত ৮টা, বাসায় কেউ নেই। সবাই গিয়েছে কমিনিউটি সেন্টারে, সেখানেই অনুষ্ঠান। ও যায়নি, কেউ জিজ্ঞেসও করেনি ওকে.......শুভ্রর ঘরে একা একা বিছানায় শুয়ে ও চিন্তা করছিলো শুভ্রর সাথে ওর জীবনের সেরা মূহুর্তগুলোর কথা। এমন কোন রাত বোধোহয় ছিলো না যেদিন শুভ্র ওকে আদর দেয়নি, কাছে টেনে নেয়নি। শুভ্রর শরীরের প্রতিটা লোম ওর চেনা।
ও ছিলো শুভ্রর স্বপ্নের নারী, যার মাঝে শুভ্র খুঁজে পেতো নিজের স্বপ্নগুলোকে, হারিয়ে যেতো দু'জনে স্বপ্নের দুনিয়ায়।
কতোক্ষণ এভাবে ছিলো খেয়াল নেই ওর। হঠাৎই ঘুম ভেঙে দেখলো শুভ্র রুমে। পাশে বসে বেনারসী পড়া একটা মেয়ে। "এটাই বোধোহয় লিজা......"
ও যে এই রুমে আছ তা বোধোহয় ওরা খেয়ালও করেনি।
হঠাৎই ওরা একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরলো শুভ্র আর লিজা। ভাবতে কষ্ট লাগছে ওর লিজা আজ সেই স্থানটা নিয়ে নিলো যা একদিন ওর ছিলো।
এখন রাত ২.৩০......অনেক অনেক কষ্ট লাগছে ওর। মুখ ফুটে কিছু কথা বলতে ইচ্ছে করছে। কাঁদতে ইচ্ছে করছে গলা ছেড়ে।
কিন্তু পারছে না, পারবেও না কোনোদিন। কোল-বালিশ হয়ে জন্মানোর কষ্টটা বোধোহয় এখানেই......
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।