...যেন এলিভেটরটা অনন্তকালের জন্যে বন্ধ হয়ে গেছে, আমি দাড়িয়ে আছি নিঃসঙ্গ ছাদের রেলিং ধরে।
০১.
প্রতি রোববারের মতো আরেকটা রোববার এলো। আমি একটু বেলা করে ঘুম থেকে উঠলাম। উঠেই সুমনের 'রোববার' গানটা ছেড়ে দিলাম ল্যাপটপে। এখন কি করব বুঝতে পারছিনা।
নাস্তা করা দরকার। কিন্তু নাস্তা বানাতেও ইচ্ছা করছেনা। খেতে ইচ্ছা করছে পরোটা আর ডিম পোচ।
গতরাত থেকে একটু মেজাজ খারাপ। লন্ডনে আসা এক যাত্রীর কাছে ঢাকা থেকে অনেক কিছু রান্না করে পাঠিয়েছিল আমার মা।
কিন্তু লন্ডনগামী সেই যাত্রী সেগুলোর কিছুই আনতে পারেন নি। সে কথা আর বলা হয়নি। বাসায় বললাম,রান্না দারুন হয়েছে।
অনেক দিন হয়ে গেছে দেশ ছেড়েছি। এভাবেই একসময় বছর পেরোবে।
শুনলাম ঢাকায় নাকি বেশ বৃষ্টি হচ্ছে। ধানমন্ডি সাতাশ নাম্বার দিয়ে ভিজতে থাকা একটা ছেলের কথা মনে পড়ে গেল। ভিজতে থাকা রাপা প্লাজা। সিঁড়িতে বসে থাকা ছেলেটার পলিথিনে মোড়ান সেল ফোনে দমকা বাতাসের মতো এক কল এলো। মুহুর্তে মিথ্যে হয়ে গেল এতো গুলো রাত জাগা, এতো এতো কথা বলা, এতো এতো খুনসুটি।
জানি ঐ ছেলেটা আজো সেই অঝোর বৃষ্টির জন্যে অপেক্ষা করে। সেই বৃষ্টিতে কোন ফোন থাকবেনা, বৃষ্টিতে ভিজে যাবে তার টি-শার্ট, জিনসের প্যান্ট, ভিজে যাবে চোখ।
০২.
আজকেও রোববার। ঠিক আরেকটা রোববারের মতো। বেলা করে ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ করছিলাম।
ভাবছিলাম দাঁত এতোগুলো কি জন্যে? কয়েকটা কম হলে কি খুব বেশি ক্ষতি হতো। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দুটো চোখ, দুটো কান সব অযথা মনে হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, বেঁচে থাকাটায় অর্থহীন।
রোববার সন্ধ্যায় মনে হয় রোববার গুলো খুব দ্রুত শেষ হয়ে যায়। কাল থেকে আবার অফিস।
চোখ মুছতে মুছতে দেরি করে স্কুলে যাওয়া ছেলেটাকে ঘুম থেকে উঠেই ছুটতে হবে অফিসের দিকে। নেভি ব্লু রং এর সোয়েটার পড়ে জাতীয় সংগীত গাইতাম প্রতিদিনের এসেম্বলিতে। আর শেষ পিরিয়ডের ঘন্টাটা বাজলেই ছুটে বেরিয়ে যেতাম ক্লাস থেকে। আজ আর সেই ছুটির অনুভূতিটা নেই। কেন জানি সব কিছু থেকে ছুটি চাচ্ছে মন, এই হিসেবি ভালোবাসা থেকে, এই আলোকময় শহর থেকে...ছুটির ঘন্টা গুলো কি সব চুরি হয়ে গেছে?
*বেশ কয়েক বছর আগের একটা লেখা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।