আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দোকানের নাম ওয়ান টু হান্ড্রেডঃ

সব কিছুর মধ্যেই সুন্দর খুঁজে পেতে চেষ্টা করি............

দোকানের নাম ওয়ান টু হান্ড্রেডঃ গত চার দিন চট্টগ্রামেছিলাম ব্যাবসায়ীক কাজে। প্রতি দিন কাজ শেষে সন্ধার দিকে ঘুড়ে বেড়িয়েছি চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায়। ওখানকার কয়েকজন তরুণ উদ্যোক্তাদের সাথে আলাপ করে তাঁদের কাজ করার মানষিকতা দেখে খুব ভাল লেগেছে। তারই কিছু বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করছিঃ- আগ্রাবাদ এক্সেস রোড, কর্নেল হাট ও ২নং গেট এলাকার নির্ধারিত মূল্যের দোকানগুলোর নাম যথাক্রমে- "ওয়ান টু নাইনটি নাইন", "নাইনটি এইট", "হানড্রেড"-ইত্যাদি। এ ধরনের নামের দোকানগুলোতে ১ টাকা দামের ব্লেড, ২ টাকা দামের লজেন্স থেকে শুরু করে ৬০/৭০/৯৮ টাকা দামের শার্ট, ফতুয়া, পাঞ্জাবি, গেঞ্জি, প্রসাধনি, বেডসিটসহ বিভিন্ন সামগ্রী পাওয়া যায়।

"ওয়ান টু নাইনটি" দোকানে এক টাকা থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত দামের পণ্য কিনতে পাওয়া যায়। এভাবেই এসব দোকানের নামকরণ করা হয়। ব্যাবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানাযায়-ক্রমেই দোকানগুলো গ্রাহকপ্রিয়তা অর্জন করছে। বিপ্লব উদ্যানের কাছাকাছি দূরত্বে রয়েছে "ওয়ান টু নাইনটি নাইন" সপ। উদ্যোক্তাদের একজন জানালেন, চিটাগাং শপিংয়ের দক্ষিণ পাশের এ শপিং পয়েন্ট চট্টগ্রামে নির্ধারিত মূল্যের দোকানগুলোর মধ্যে প্রথম।

বর্তমানে বেড সিট, জুতা, স্যান্ডেল, ক্রোকারিজ, সুগন্ধী, সাবান, বাচ্চাদের পোশাকসহ অনেক ধরনের পণ্যেরই সমাবেশ রয়েছে এখানে। এক জন মহিলা ক্রেতা জানান-নির্ধারিত দামে কেনাকাটা করা যায় বলে তিনি মাঝে মধ্যেই কেনাকাটা করেন এখান থেকে। এখানে ব্যয়টা রাখা যায় সীমার মধ্যে- হেসেই মন্তব্য করেন তিনি। কয়েকজন ক্রেতার সাথে আলাপ করলে তারাও নির্ধারিত দামের ব্যাপারটাকেই আকর্ষণীয় বলে উল্লেখ করেন। তবে এক মহিলা ক্রতো জানান, পঞ্চাশ টাকার উপরে যে সব জিনিসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, সে সব জিনিস অন্যসব দোকানে আরো কম দামে পাওয়া যায়।

আরেক ক্রেতা জানান, নির্ধারিত দামের "আকর্ষণ" ছাড়া কার্যতঃ এসব দোকানের তেমন কোন সুবিধা নেই। নগরে এ ধরনের দোকানের সংখ্যা বাড়ছে। আবাসিক এলাকাকেন্দ্রিক ব্যবসায়ীদের মধ্যেই দেখা গেছে কয়েকটি নির্ধারিত পণ্যের দোকানের উদ্যোগ। হালিশহর, আগ্রাবাদ, এক্সেস রোড, বড় পোল এলাকায় কয়েকজন তরুণ উদ্যোক্তা জানান, বর্তমানে জিনিসপত্রের দাম যথেষ্ট বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় ওয়ান টু হানড্রেড বা নাইনটি ওয়ান নয়, তারা ওয়ান টু ওয়ান ফিফটি ওয়ান, ওয়ান টু ওয়ান সেভেনটি ওয়ান, বা ওয়ান টু টু হানড্রেড ওয়ান এ ধরনের মূল্যের নির্ধারিত দোকানের কথাই ভাবছেন।

এলাকার যুবক ও উঠতি বয়সের তরুণরাই এ ধরনের দোকানের প্রধান উদ্যোক্তা। মুরাদ, মামুন, শওকত, আমান ও সিরাজউদ্দীন নামে ক'জন উদ্যোক্তা জানান, তারা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে কয়েকজন মিলে হালিশহর আবাসিক এলাকায় এ ধরনের একটি উদ্যোগ নিচ্ছেন। বন্ধুরা মিলেই এর তদারক করবেন। পরিচালনা থেকে সব কিছুতেই। শাম্মীনাজ নামে এক মহিলা জানান, তিনিও এ ধরনের উদ্যোগের সাথে জড়িত হচ্ছেন বাকলিয়া এলাকায়।

বর্তমানে এলাকাভিত্তিক পণ্যের প্রয়োজন বাড়ছে। গ্রাহকরা হাতের কাছে প্রত্যাশিত জিনিসপত্র প্রতিযোগিতামূলক দামে পেলে বাইরে যাবেন কেনো ? এমন চিন্তা থেকেই তাদের উদ্যোগ বলে জানান তিনি। এক দোকানী জানালেন-"ওয়ান টু নাইনটি এইট" নাম হলেও পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে বাড়তি দামের মালামালও রাখা হবে পাশাপাশি। বেশ কজন উদ্যোক্তা জানান, সীমার মধ্যেই নির্ধারিত পণ্যের বিক্রি বাড়ানোর ব্যাপারটি ব্যবসা শুরুর পর্যায়ে থাকলেও জিনিসপত্রের বর্তমানে ক্রমবর্ধমান মূল্য তাদের জন্য নানামুখী সমস্যা সৃষ্টি করছে। পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে পারছে না।

আগের নির্ধারিত মূল্য ধরে রাখতে গিয়ে পণ্য বৈচিত্র্য যেমন দ্রুত কমে যাচ্ছে, তেমনি আগের দাম ধরে রাখতে তারা ব্যর্থ হচ্ছেন। এসব কারণেই তারা ব্যবসা সচল রাখতে নতুন আইডিয়া নিয়েই ভাবছেন। সাইফুল আলম টিপু নামে এক ক্রেতা জানান, একশ' টাকার মধ্যে নির্ধারিত দামের দোকানগুলো কার্যত পণ্য বৈচিত্র্য ও মান নিয়ে গ্রাহক আকর্ষণ করতে পারছে না আগের মতো। ব্যবসা বজায় রাখতে, গ্রাহক টানতে তাই পরিবর্তন অনিবার্য হয়ে পড়েছে। আর এ সবেরই প্রতিফলন হবে ওয়ান টু হানড্রেড অংকের বাইরে ওয়ান ফিফটি ওয়ান, সেভেনটি ওয়ান, নাইনটি নাইন ও টু হানড্রেড ওয়ানের মধ্যে।

তরুণদের এই উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.