পথের সন্ধানে পথে নেমেছি.........
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবার এর সদস্যগণের নিরাপত্তা আইন-২০০৯ গতকাল মঙ্গলবার সংসদে পাস হয়েছে। আইন অনুসারে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা ও তাঁদের সন্তানেরা বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর (এসএসএফ) নিরাপত্তা পাবেন। এরকম একটি অগনতান্ত্রিক, অসংবিধানিক ও বৈষম্যমুলক একটি আইন পাশ হতে দেখে ছোট বেলার একটি গল্পের কথা মনে পড়ে গেল। ছোটবেলা পাঠ্য বইয়ের অর্ন্তভুক্ত পন্ডিতমশাই নামক একটি গল্প পড়েছিলাম। পন্ডিতমশাই সারা মাস স্কুলে পড়িয়ে মাস শেষে বেতন হিসাবে পেতেন ৩ টাকা আর এসডিও সাহেবের তিন পা বিশিষ্ট কুকুরের পিছনে মাসে ব্যয় হত ১৫ টাকা।
এরকম একটি বৈষম্য মুলক আচরনে মর্মাহত হয়ে ঐকিক নিয়মে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন কিভাবে নিজের জীবনের মুল্য এসডিও সাহেবের কুকুরের একটি পায়ের সমান হয়। এরকম বৈষম্য মুলক আচরনে পন্ডিতমশাই এর কি পরিমান রক্তক্ষরন হয়েছিল তখন তা বুঝিনি বা বুঝার চেষ্টাও করিনি। সমগ্র জাতির নিরাপত্তাকে তুচ্ছ করে একটি বিশেষ পরিবার এর সদস্যগণের নিরাপত্তা আইন পাশ হতে দেখে নিজের ভিতরে যে রক্তক্ষরন হচ্ছিল সেই অনুধাবন থেকেই এই গল্পটি বলা।
সমগ্র জাতিকে নিরাপত্তাহীন রেখে শুধুমাত্র একটি বিশেষ পরিবারকে সুরক্ষিত করা, পৃথিবীর যে কোন জায়গায় পরিবারের সকল সদস্যের নিরাপত্তা বিধান করাই হবে এখন থেকে হবে রাষ্ট্রের দায়িত্ব ও কর্তব্য। এরকম একটি অগনতান্ত্রিক, অসংবিধানিক ও বৈষম্যমুলক আইন কোন দায়বোধ থেকে আমাদের ভোটেই নির্বাচিত সাংসদরা পাশ করে দিলেন তা আমার কাছে কোন ভাবেই গ্রহনযোগ্য ও বোধগম্য হচ্ছে না।
এরকম একটা অগনতান্ত্রিক দাযবোধ কি শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা যুদ্বে বিশেষ অবদানের জন্য? এই দেশ স্বাধীন করার পিছনে আর কি কারোর কোন অবদান নেই? ত্রিশ লক্ষ শহীদ এর রক্তের কি কোন মুল্য নেই? আমাদের বীর মুক্তিযোদ্বারা তাদের স্ত্রী, পুত্র কন্যাদের অরক্ষিত রেখে নিজের জীবন বাজি রেখে যে যুদ্ব করেছিলেন তার কি কোন মুল্য নেই? যে সব নারীরা যুদ্বের সময় তাদের সম্ভ্রম হারিয়েছিলেন তার কি কোন মুল্য নেই? এত সব প্রশ্ন এখন শুধু মাত্র নিজের বিবেকের কাছেই।
হে মহান মুক্তিযোদ্বারা, হে সুর্যসন্তানেরা আপনারা এসে দেখুন আপনাদেরই রক্তের বিনিময়ে সমগ্র জাতিকে নিরাপত্তাহীন রেখে জাতির জনকের (?) পরিবার (?) কেমন সুরক্ষিত, যে স্বাধীন রাষ্ট্র আপনারা গড়েছিলেন সেই রাষ্ট্রের টাকায় পৃথিবীর যে জায়গায়তেই যে থাকুক না কেন তাদেরকে সুরক্ষা করা এখন রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য।
এরকম একটা অগনতান্ত্রিক আইন করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের জন্য। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর পবিরবার বলতে কি শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, জয় পুতুলদের পরিবারকে বুঝায়? তাহলে অভিধানেও সংসোধনী আনা উচিত নয় কি? বাংলাদেশী পরিবারে মেয়ের বিয়ের পর কভাবে সেই মেয়ে আর নিজের পরিবারের অর্ন্তভুক্ত থাকে? এ সব প্রশ্ন এখন শুধু মাত্র নিজের বিবেকের কাছেই।
স্বাধীনতার এই ৩৮ বছর পর কথা বলার সুযোগ বা স্বাধীনতা সাধারন জনগন হিসাবে আমরা কতটুকই ভোগ করতে পারছি? তা না হলে এরকম একটি অগনতান্ত্রিক, অসংবিধানিক ও বৈষম্যমুলক আইনকে যারা বিনা বাক্য ব্যয়ে পাশ করে দিলেন? কোন দায়বোধ থেকে তাদের কন্ঠ গুলো রহিত হয়ে গেল? এ সব প্রশ্ন এখন শুধু মাত্র নিজের বিবেকের কাছেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।