আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জীবনের প্রতিটি কাজে কর্মেই মানুষের এ প্রশ্নগুলোকে স্মরণ রাখা ও সামনে নিয়ে আসা একান্ত প্রয়োজন। এই পোস্টি পড়ার অনুরোধ রইল একটু চিন্তার সাথে।

সকালের মিষ্টি রোদ পেরিয়ে আমি এখন মধ্যগগনে,

পৃথিবীতে মানুষের জীবন ক্ষণস্থায়ী, তবে সাধারণভাবে মানব জীবন গতিশীল। এ গতিরও একটা সীমানা নির্ধারিত রয়েছে, তা হলো এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড ধ্বংস হবার দিন। তার পূর্বে জীবন আসে, নির্দিষ্ট সময় এখনে যাপন করে, শ্রমে-ঘর্মে পৃথিবীতে তার অংশকে যুক্ত-সিক্ত করে ফিরে চলে যায় আরেক জগতে; এভাবেই প্রতিনিয়ত মানব জাতির আসা যাওয়ায় আবাদ হচ্ছে পৃথিবী। মোটের প্রেক্ষাপটে তাকালে মনে হবে যে, সবকিছুই মানুষের কাজ, মানুষেরই জন্য, মানুষের পৃথিবীর উন্নয়নের জন্য। কিন্তু মানব জাতির একক হিসেবে চিন্তা করলে দেখা যায় তার উল্টোটা।

এখনে ব্যক্তি একা যা কিছুর সম্পাদন করে গেছে, তার কিছু কিছু জীবনকালে ভোগ করে গিয়েছে; বাদ বাকী বিশাল অংশটুকু পড়ে রয়েছে, শুধু সে আর অবশিষ্ট নেই এই পৃথিবীতে। এ দৃষ্টিভঙ্গির ফলাফলে বেশীর ভাগই বেদনা, হাহাকার, দীর্ঘশ্বাস। ব্যক্তির নিঃশ্বাসের প্রবল পরিক্রমা যতক্ষণ ক্রিয়াশীল ততক্ষণ পৃথিবীর সবকিছু তার জন্য হতে পারে, নিঃশ্বাসের নিঃশেষে সবকিছুই তার জন্য থমকে যায় সেখানে, ঠিক সেই মুহূর্তে! মূলতঃ এটিই মানব জীবনে সত্যিকারের বাস্তবতা। কত স্বপ্ন, কত সাধনা, কত কাজ, কত গতিময় জীবন; না, তখন ভুল হয়ে যায় সকল সরল চিন্তা। জগতে কত অসাধ্যই না সাধনের পরিকল্পনা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া হয় শ্রমে-কর্মে।

এই প্রাবল্য সেদিন মিথ্যে মনে হতে থাকে ওপারের যাত্রীর নিকট। কিন্তু এপারে যাদের অবস্থান, তারা কোনভাবেই উপলব্দি করতে পারে না কি ভয়ংকর অবস্থার মুখোমুখি হতে হচ্ছে অনন্তযাত্রীদের। না, সকলেই যে ব্যর্থ কিংবা বিপদগ্রস্ত তা নয়। পৃথিবীর এ স্বল্পসময়কে সাজিয়ে রাঙিয়ে নিতে পেরেছেন যারা সত্যের রঙে, তারা সে যাত্রায় যত খুশী হন পৃথিবীর জীবনকালের আর কোথাও এত খুশী হতে পারেন না। অনন্তখুশীর এ ধারাবাহিকতার কোন শেষ নেই।

এ খুশী লাভের যাবতীয় উপায় উপকরণ আমাদের নাগালের মধ্যেই রয়েছে। প্রয়োজন শুধু গ্রহণের, জ্ঞান লাভের ও শ্রমে-কর্মে জীবনকে সফল হিসেবে গড়ে তোলা এবং প্রিয় আনন্দের মঞ্জিল জান্নাতে পৌঁছে যাওয়ার সাধনা করা। জগৎস্রষ্টা বলেন “অতঃপর আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও। এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ কর। ” [সূরা আল-ফজর: ২৯-৩০] অজানা অথচ সুনির্দিষ্ট সময়ের এই জগতের পথে যে যা কিছুই করি না কেন, যে পথ ও যে আদর্শই ধারণ করি না কেন, ওপার জীবনের প্রথম মঞ্জিল কবরে প্রত্যেক আদম সন্তানকে তিনটি প্রশ্নের সম্মুখীন হতেই হবে।

প্রশ্ন তিনটি যথাক্রমে- তোমার রব কে? তোমার দ্বীন কী? তোমার নবী কে? জীবনের প্রতিটি কাজে কর্মেই মানুষের এ প্রশ্নগুলোকে স্মরণ রাখা ও সামনে নিয়ে আসা একান্ত প্রয়োজন। কেননা, এ প্রশ্নগুলো এমন নয় যে, বার বার মুখস্থ করে নিয়ে গেলে কবরে জবাব দেয়া যাবে। আবার এমনও নয় যে, লিখে কিংবা রেকর্ড করে নিয়ে গিয়ে কাজে লাগানো যাবে। না; বরং কেউ সারা জীবন এগুলো মুখস্থ করতে থাকলেও সেদিন কবরে যখন ফিরিশতা প্রশ্ন করবেন, তখন শুধু মুখস্থ করার গুণে জবাব দেয়া সম্ভব হবে না। বরং জবাব দেয়া সম্ভব হবে যদি জীবনকে এ তিনটি প্রশ্নের আলোকে আলোকিত করা সম্ভব হয়।

আর জীবনের তিনটি অবিচ্ছেদ্য অংশ যথাক্রমে চিন্তা, কথা ও কর্ম। ব্যক্তি কি চিন্তাধারা, কি চেতনা, কি আদর্শিক ভাবনা পোষণ করেছে সারাটি জীবন; কি কথা বলেছে জনে জনে জনসভায়, বক্তৃতায়, লেখনিতে, কি কর্ম সাধনে প্রাণান্ত সাধনায়, কোন পাওয়ার জন্য, কোন আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে গেছে আমৃত্যু, এমনকি মৃত্যুর ঠিক পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত, সেসবই হবে কবরে জবাব দিতে পারা না পারার যোগ্যতা ও অযোগ্যতা ভিত্তি। প্রথম প্রশ্নটি জগৎস্রষ্টা আল্লাহর পরিচয় বিষয়ক, যার অধিকাংশই জ্ঞানগত। অন্যদিকে তৃতীয় প্রশ্নটিও প্রিয় রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কিত; যাঁর উপর সুদৃঢ় বিশ্বাসী হতে না পারলে দ্বীন-ধর্মের বাকী যাবতীয় সবকিছুই ভেঙ্গে পড়তে বাধ্য থাকে। এতদ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা অন্যান্য লেখায় হয়েছে এবং আরো হবে ইনশাআল্লাহ্।

এ প্রবন্ধে আমরা আলোকপাত করতে চেষ্টা করবো আমাদের বর্তমান চলমান সময়ে দ্বিতীয় প্রশ্নটি কিভাবে সংশ্লিষ্ট ও কবরে এর সঠিক উত্তর দেয়ার জন্য এখনই পৃথিবীতে সে প্রশ্নের আলোকে আমাদের করণীয় সম্পর্কে। জীবনের নানা কাজে, নানা মৌসুমে; এমনকি প্রতিটি মুহূর্তেই এ প্রশ্নগুলোর আলোকে সাজাতে হবে আমাদের সফল জীবনকে। অন্যথা জীবন জুড়ে ব্যর্থতা নেমে আসতে বাধ্য। স্রষ্টার বেঁধে দেয়া সবটুকু সময়ই সমান গুরুত্ববহ হলেও জগতের নানা উত্থান-পতনে সময়গুলো আমাদের জীবনে নানা মৌসুমের আগমন ঘটায়। বাংলাদেশের অধিবাসী হিসেবে আমাদের জাতীয় জীবনেও একটা পরিবর্তনের হাওয়া বইছে এখন।

। পৃথিবীর এ স্বল্পকালীন জীবন শেষে কবরে আমাদেরকে যে তিনটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে বিশ্বাস-কথা-কর্মের ভিত্তিতে, (চলবে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.