ছোটখাট পার্টটাইম কাজ করি আমি। তারপরেও কয়েকদিন ধরেই বয়সে ছোট রুমমেটরা বাহানা ধরেছে ঈদের সালামী দিতে হবে, তাও আবার অগ্রীম । কারণ সবাই ছুটিতে বাড়ী চলে যাবে, আমার আগেই। তালবাহানা করে কয়েকদিন কাটিয়ে দিলেও ওদের জ্বালায় আর থাকতে পারলাম না।
গতকাল টেবিলের ওপর রাখা আমার ফুলে ফেপে থাকা মোটাসোটা মানিব্যাগটা দেখেই এক রুমমেট লোভাতুর চোখে সেদিকে তাকিয়ে বলল, “কি ব্যপার বেতন পাইলেন নাকি? কালকে বাড়ী যামু, সালামী তাইলে আজকেই দিয়ে দেন বড় ভাই।
” সরু চোখে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম, “রোষ না বাপু, এত ব্যস্ত কেন?” কিন্তু ও নাছোড়বান্দা সালামী এখনই দিতে হবে। “তোমার কিন্তু লস হবে বইলা দিলাম। ”
“বড় ভাই ভয় পাইয়েন না, বেশি নিমু না। ঐখানে যে নোটই থাক, সবচেয়ে বড় নোটের দুইটা দিলেই হবে। ” আমি হাল ছেড়ে দেবার ভংগি করলাম।
কিন্তু মনে মনে হেসেই কুটিকুটি, ব্যাটাদের শায়েস্তা করা যাবে আজ। আমি উদার ভংগিতে মানিব্যাগ ওর হাতে তুলে দিতে দিতে বললাম, আচ্ছা তোমার কথাই থাকল, তবে সবচেয়ে বড় নোটের দুইটা নোটই নিতে পারবা। ” ও তো খুশিতে বাকবাকুম। মানিব্যাগ খুলেই ওর চক্ষু চড়কগাছ! সারা মানিব্যাগ পাঁচ টাকার নোট দিয়ে ভর্তি! বলাই বাহুল্য ওর সালামী জুটেছিল ১০ টাকা, রাগ করে বেচারা ঐটাও নেয় নাই... (আমি হলেও নিতাম না!)।
এত্তগুলো পাঁচটাকা পেলাম কোথায়? গতকাল চায়ের দোকানে বসা মাত্রই দোকানদার বলল, “মামা ৫০০ টাকার ভাংতি লাগলে কন, তয় নোট গুলা কইলাম ছোট”।
মেঘ না চাইতে বৃষ্টির মত লাগল ব্যাপারটা। বললাম, ‘দেন তাইলে। ” ও মা এই লোক দেখলাম বিশাল এক বান্ডিল বের করল। “৮০ টা পাঁচটাকার নোট আর ৫ টা বিশ টাকার নোট আছে। ” আমার চোখ কপালে তখন।
বললাম, “মামা বাদ দেন এত্ত ছোট নোট... আমি চিন্তা করি নাই। আপনে ১০০ টাকা ভাংগায় দেন তাতেই চলবে। ” টাকা ভাংগানোর পর মাথায় বুদ্ধিটা আসল কেমনে ঐগুলারে শায়েস্তা করা যায় আরকি...
ছোটবেলায় কত্ত আনন্দে সালামী নিয়েছি । কিন্তু এখন যখন সালামী দেবার বয়স আসছে তখন বুঝতে পারছি, “কত গমে কত আটা। ” এ যাত্রায় না হয় বেঁচে গেলাম কিন্তু পরের বার যদি ওরাও আঁটঘাট বেধে নামে, তখন কি হবে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।