আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সৌন্দর্য প্রিয়তা নাকি মানসিক বৈকল্যতা

জটিলতা পছন্দ করিনা।

সৌন্দর্য প্রিয়তা নাকি মানসিক বৈকল্যতা আমরা প্রকৃতিগত ভাবে প্রথমে এ্যানিম্যাল এবং পরে মানুষ। একটা এ্যানিম্যালের প্রথম বৈশিষ্ট্যই হলো তার অধিকার সম্পর্কে সদা সজাগ দৃষ্টি প্রখরতা। তার যখন ক্ষুধা লাগে সে তখন কোনো দিকে না তাকিয়েই ক্ষুধা নিবারণের চেষ্টা করে। এর অনথ্যা কখনোই হয়না।

কিন্তু মানুষের বেলায় ভিন্ন কথা, কারণ তার এই মানুষ হওয়ার সাথে মনুষত্ব্য ও মানবতারও সম্পর্ক থেকে যায়। সোজা কথায় বলতে গেলে বলতে হয় যার মাঝে মনুষত্ব্য ও মানবতা বিরাজ করে সেই মানুষ হিসেবে আত্নপ্রকাশ করতে পারে। এই তো গেল মানুষ আর না মানুষের কথা। এই মানুষ আর না মানুষের কিন্তু একটা জায়গায় ভীষন মিল। আর তা হলো তাদের সৌন্দর্য প্রিয়তা।

এ্যানিম্যাল তার বৈশিষ্ট্যের মধ্য দিয়ে সৌন্দর্য খোজে। কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে এই ঘটনাটি ঘটে সম্পূর্ণ ভিন্ন স্থান থেকে। মানুষ তার সৌন্দর্যতার দৃষ্টিকোন মাপে তার স্থানিক সত্ত্বা থেকে। শুধু বললে তো আর হবে না, এর জন্য চাই বিশ্লেষন। সারাবিশ্বকে যদি দুভাগে ভাগ করা যায়, এক ভাগ পড়ে শোষকের দলে আর এক ভাগ পড়ে শোষিতের দলে।

আমরা যারা তৃতীয় বিশ্বের জনগণ তারা স্বভাবতই শোষিতের দলে। কারণ হলো বিশাল একটা সময় আমরা ব্রিটিশ উপনিবেশিকতার মধ্য দিয়ে পাড় করেছি। এই উপনিবেশিকতার মধ্যে থাকার কারণে আস্তে আস্তে আমাদের অনেক গুলো মৌলিক বিষয় পরিবর্তন হয়ে গেছে। এর মধ্যে প্রধানই হলো সৌন্দর্যতা। যেমন ধরা যাক আফ্রিকার কোন এক দেশের একটা ছেলে লন্ডন শহরে আসলো পড়ার জন্য।

পড়তে আসার পর দিন থেকেই সে একটি মেয়ের সাথে সম্পর্ক স্থাপনে বেশ উৎসাহী হয়ে উঠলো। কোনক্রমে সে একদিন সেই মেয়েটির সাথে সম্পর্ক স্থাপনেও সমর্থ হলো। এরকিছু দিন পর একদিন তারা শারিরীক সম্পর্কের দিকে গেল। সেই শারিরীক সম্পর্কের সময় ছেলেটি যখন মেয়েটির স্তন দুটি তার হাতের মুঠোয় নিল তখন সেই ছেলেটির যে মানসিকতা কাজ করে তা রীতিমত ভয়ংকর। সে একইধারে চিন্তা করে যে, সে সাদা চামড়ার গোষ্ঠীর মধ্যে প্রবেশ করলো এবং একই সঙ্গে সে আরো চিন্তা করে যে সে তার জাতি সত্ত্বা দ্বারা আরেকটি জাতিসত্ত্বাকে পদানত করলো।

এরকমই হয়। একই বলে মানসিক বৈকল্যতা। কিন্তু এই বৈকল্যতার কারণ কি? যখন এই উপমহাদেশে ইংরেজরা শাসন করছিল তখনকার কথা বলছি। একদিন ফিটন গাড়িতে চড়ে কোন এক বিলেতি মেম রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে। পাশে এক বাঙালী ছেলে দাড়িয়ে আছে।

তার চোখে জ্বলছে প্রতিশোধের আগুন। সে প্রতিনিয়তই ভাবছে এই ইংরেজরা আমাদের শোষন করছে, হয় এদের মারতে হবে। কিন্তু বাস্তব সত্য হলো মানুষ মারাটা অনেক বেশি সাহস ও কষ্টের কাজ। সে যখন এই কাজটি করতে পারলো না তখন সে চিন্তা করলো এদের সমকক্ষ হতে হবে। এই যে সমকক্ষ হবার বাসনা, এই বাসনা থেকেই মূলত জন্ম নিয়েছিল সেদিনকার কেরাণী শ্রেণী।

এই কেরানী শ্রেণী দিনে দিনে ভারি হতে শুরু করলো। যেহেতু তারা সমকক্ষ হতে গিয়ে কিছু পড়া লেখা শিখেছিল তাই তারা আস্তে আস্তে রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে পড়লো। এবং যার কারণে ঐ দাস মনোবৃত্তি সমগ্র জাতির উপরই আস্তে আস্তে প্রভাব ফেলতে শুরু করলো। আমি যে বিবর্তনের কথা বললাম তা কিন্তু হুটহাট করে হয়নি। কালের ধুলো জমতে জমতেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

আর তাই আজ আমরা দেখতে পাই, যে কোন ছেলে অথবা মেয়ে বিয়ে করতে গেলে বা প্রেম করতে গেলে সুন্দর ছেলে বা সুন্দর মেয়ে খোজে। আমার এই কথা শুনে হয়তোবা অনেকেই বলতে পারেন, না আমি এরকম নয়। সেক্ষেত্রে আমি বলবো ব্যাতিক্রম কখোনেই উদাহরণ হতে পারেনা। ব্যাতিক্রমীরা বাধ ভাঙ্গার সূচনা করতে পারে কিন্তু বাধ ভাঙতে পারে না। আর শত বছরের এই মানসিক উপনিবেশিকতা রোধে চাই নব্য জাতীয়তাবাদের উত্থান।

সহজ মানুষ

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।